অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮টি সেরা উপায়

আপনি কি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা আমরা আজকের আর্টিকেলের মধ্যে অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮টি জনপ্রিয় উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়

আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আমি আপনাকে গেরান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। কারণ আজকের আর্টিকেল এর মধ্যে আমরা এমন কিছু সাইট ও কাজ নিয়ে আলোচনা করেছি যা আপনি একবার পড়েই সহজেই বুঝতে পারবেন। 

কনটেন্ট সূচিপত্র ঃ অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮টি সেরা উপায়

ভূমিকা

বর্তমানে বাংলাদেশের লোক সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১৭ কোটি। যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ১৩ কোটি। আমরা সবাই জানি বর্তমানে এই ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে টাকা উপার্জন করা যায়। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। 

এই প্রযুক্তি নির্ভর যুগে মানুষ প্রতিনিয়ত অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে উপার্জন করেছ অর্থ। আর এই অর্থ উপার্জনের জন্য বিশেষ কোনো ডিগ্রি বা দক্ষতা না থাকলেও চলবে থাকতে হবে শুধুমাত্র প্রযুক্তি সম্পর্কিত কিছু জ্ঞান। বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে, যেগুলোক কাজে লাগিয়ে অনলাইনে আয় করা যায়। 

অনলাইনে আয় করতে চাইলে আপনার কাছে একটি কম্পিউটার বা একটি ল্যাপটপ থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনি চাইলে আপনার হাতের কাছে থাকা এই স্মার্টফোনটি দিয়েও আয় করতে পারবেন। কিভাবে পারবেন এইটা যদি জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করবেন

আপনি যদি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জানাব কিভাবে সহজেই অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায়। 

অনলাইন থেকে ইনকাম এই বিষয়টি অনেকের কাছে নতুন হলেও সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে এটি নতুন কোনো কিছু নয়। অনলাইন ইনকাম হচ্ছে একটি স্বাধীন পেশা। আপনি ছেলে কিংবা মেয়ে, ছাত্র কিংবা ছাত্রী বা চাকরিজীবী যাই হোন না কেন আপনার যদি অনলাইন সম্পর্কে একটু মোটামুটি ধারণা থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

প্রথম প্রথম আপনার একটু সমস্যা হতে পারে ,তাই বলে হাল ছেড়ে দিবেন না। আপনি যদি নিয়মিত কাজ করেন তাহলে আপনি একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারবেন। অনেকেই প্রতিনিয়ত ফেইসবুকে, ইউটিউবে, ইন্সটাগ্রামে, টিকটকে ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ভিডিও, রিলস ইত্যাদি দেখে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করে। কিন্তু আপনি চাইলে এই সময়কে কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে একটা ভালো এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন। 

এতে যেমন আপনি নিজে সাবলম্বী হবেন তেমনি পরিবারের পাশেও দাঁড়াতে পারবেন। বর্তমানে পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ আছে যারা ঘরে বসে অনলাইন থেকে নিজেরাই ইনকাম করছে না বরং তারা অন্যকেও সুযোগ করে দিচ্ছে ইনকাম করার। আপনি যখন নিজের খরচ নিজে জোগাড় করবেন। তখনি দেখবেন আপনার ভিতর একটা অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করছে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার।

অনলাইন থেকে আয়ের সেরা ১৮টি উপায়

আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করি সবাই চাই অনলাইন থেকে কিছু না কিছু ইনকাম করতে। কিন্তু কিভাবে করব তা আর জানতে চায় না বা তেমন একটা খোঁজ নিয়ে দেখি না। অনলাইন থেকে আয় করার জন্য অনেক গুলো মাধ্যম রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আপনি হয়তো জানেন না। এইজন্য আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮ টি জনপ্রিয় উপায় সম্পর্কে।

আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি একবার মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে আপনার মোটামুটি একটা ধারণা হবে। তাহলে, চলুন আর দেরি না করে আমরা একে একে জেনে নেই অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮টি জনপ্রিয় উপায় সম্পর্কে।

নিচে অনলাইন থেকে ইনকাম করার ১৮টি সেরা উপায় তুলে ধরা হয়েছে।

ধাপ ১: ফেইসবুক থেকে আয়: বর্তমানে পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ ফেইসবুক ব্যবহার করেন। কিন্তু আপনি জানেন কি এই ফেসবুক হতে পারে আপনার অনলাইন ইনকামের সঙ্গী? অনেকেই আছে যারা এখনও পর্যন্ত জানে না যে কিভাবে ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে হয় সেই বিষয়ে। 

তাই আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাকে জানাব কিভাবে ফেইসবুক থেকে ইনকাম করবেন। আপনার হাতে যদি একটা স্মার্টফোন থাকে এবং এই ফোন এ যদি আপনার একটা নিজের ফেইসবুক একাউন্ট থাকে তাহলে আপনি আমার মত ফেইসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আপনার ফেইসবুক একাউন্টটি প্রফেশনাল মুড়ে নিয়ে যেতে হবে। 

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে প্রফেশনাল মুডে যাবেন? সমস্যা নাই আমারা তো আছি আপনার সাথে । প্রথমে আপনাকে আপনার প্রোফাইলে যেতে হবে। এবং তারপর প্রোফাইলের একটু নিচে একটা থ্রি ডট চিহ্ন আছে। আপনাকে এইটাতে ক্লিক করতে হবে এবং এইখানে গিয়ে প্রফেশনাল মুড় চালু করতে হবে। এবং তারপর আপনাকে আপনার ফেইসবুক একাউন্টে কমপক্ষে ৫ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে এবং আপনার একাউন্টে কমপক্ষে ৬০হাজার মিনিট ভিউ টাইম হতে হবে । 

এখন আপনি বলতে পারেন আপনি এই ফলোয়ার এবং ভিউ টাইম কই পাবেন? এর জন্য সহজ মাধ্যম হচ্ছে আপনি আপনার ফেইসবুক একাউন্টে নিয়মিত ছবি, কয়েক সেকেন্ডের নতুন নতুন ভিডিও দিতে পারেন তাতেই আপনার জন্য ভালো। এবং আরেকটা কথা নূন্যতম ৩ মিনিটের ভিডিও দিবেন। এর ফলে আপনার প্রতিদিন যেমন প্রতিনিয়ত ফলোয়ার বাড়বে তেমনি আপনার ভিউ টাইম ও বাড়বে। এইভাবে যদি আপনি টানা কাজ করতে থাকেন তাহলে আপনি অতি তাড়াতাড়ি ফেইসবুক থেকে একটা ভালো এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন।

ধাপ ২: ইউটিউব থেকে আয়: পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও অনেক বড় বড় ইউটিউবার আছে। যারা কিনা প্রতি মাসে ৫০০-১০০০$ ইনকাম করছে শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে। তবে আপনি যাই করেন সফলতা পেতে হলে একটু কষ্ট ও সময় অবশ্যই ব্যায় করতে হবে। 

আজকের যারা বড় বড় ইউটিউবার তারাও একদিন আমার - আপনার মতই ছিল। কিন্তু কিভাবে হয়েছে, আপনার কি জানতে মন চাই? আপনিও কি ওদের মত একজন হয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলের এই অংশটি মন দিয়ে পড়ুন

আপনি যদি ওদের মত ইউটিউবার হতে চান তাহলে শুরুতে আপনার একটা ভালো ক্যামেরা লাগবে তা কিন্তু নয়। যারা আজকে বড় বড় ইউটিউবার হয়েছে তারাও তাদের ইউটিউব জার্নি শুরুর সময় তাদের মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে শুরু করেছিল। আপনিও যদি তাদের মতো একজন ভালো কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হতে চান তাহলে আপনি আপনার ইউটিউব জার্নি শুরু করতে পারেন।

আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইলটি দিয়ে বিভিন্ন ব্লগ ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। তবে একথাও মাথায় রাখতে হবে যে শুরুতে হয়তো আপনার ভিডিওতে ভিউ নাও আসতে পারে এবং আপনার সাবস্ক্রাইবও না থাকতে পারে। এটা দেখে কিন্তু পিছিয়ে আসা যাবে না। আপনাকে আপনার কাজ প্রতি নিয়ত করে যেতে হবে। প্রতি সপ্তাহে কম পক্ষে ৩ থেকে ৪ টা ভিডিও আপলোড করতে হবে সাথে অনপেইজ এসইও করতে হবে।

এই ভাবে আপনি প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড করার পর আপনার চ্যানালে যখন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচটাইম পূরণ হবে তখনি আপনি গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং আপনি একবার যদি গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যান তাহলে প্রতি মাসে একটা হেন্ডসাম এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে।

ধাপ ৩: আর্টিকেল লিখে আয়: আর্টিকেল মানেই হল লেখালেখি করা। বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটা সেক্টর হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং। আপনি যদি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন তাহলে এই সেক্টরটি আপনার জন্য। কেননা আপনি শুধুমাত্র লেখালেখি করে এই সেক্টর থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সাথে আপনার স্কিল টাও ভালো থাকতে হবে। তাহলে আপনি সহজেই এই সেক্টরে হিরো হয়ে উঠতে পারবেন।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আপনি এই লেখালেখিটা করবেন কোথায়? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে আপনি চাইলেই গুগলের নিজস্ব ব্লগার সাইটে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করতে পারেন কিংবা আপনি চাইলে ওয়ার্ড প্রেস ওয়েব সাইটও ব্যাবহার করতে পারেন। তবে একটা কথা না বললেই নয়, আপনি ওয়ার্ড প্রেস কিংবা গুগল যেখানেই ব্লগিং করেন না কেন আপনার কিন্তু একটা ডোমেইন ও হোস্টিং অবশ্যই লাগবে।

তবে গুগলের নিজস্ব ব্লগ সাইটে একটা ব্লগস্পট ডোমেইন ও ১৫ জিবি হোস্টিং ফ্রী দেওয়া থাকে। আপনি চাইলে সেগুলো ব্যবহার করেও করতে পারেন কিংবা আপনার পছন্দের কাস্টম ডোমেইন কিনেও সেটআপ করতে পারেন। এখন কথা হচ্ছে আপনি যে ব্লগিং করবেন তা কোন নিশ নিয়ে লেখালেখি করবেন কিছু ভেবেছেন কি? ভাবেন নি তাই না! সমস্যা নাই আমরা আছি তো চিন্তা কিসের।

আপনি চাইলে বিভিন্ন নিশ নিয়ে লেখালেখি করতে পারেন যেমন: লাইফ স্টাইল, সাহিত্য-সংস্কৃতি, চিকিৎসা সেবা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা, ধর্মীয় তথ্য ইত্যাদি আরও অনেক নিশ নিয়ে কাজ করতে পারেন। তবে কোনটা নিয়ে কাজ করবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভরশীল। আপনি চাইলে সবগুলো নিশ নিয়েও কাজ করতে পারেন আবার চাইলে একটা নিশ নিয়েও কাজ করতে পারেন।

এখন কথা হচ্ছে আপনার লেখা ব্লগ একজন ভিজিটর কিভাবে পাবে? এই প্রশ্নটিই আপনার মনে এতোক্ষণ ঘুরপাক খাচ্ছিল তাই না! আপনার ব্লগ গুগলে এক নাম্বার পজিশনে নিয়ে আসতে আপনাকে অন পেইজ এসইও ও অফ পেইজ এসইও সম্পর্কে জানতে হবে সাথে আপনার লেখা ব্লগ বা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ ইউনিক অর্থাৎ নতুন হতে হবে। কারও কাছ থেকে কপি করে লেখা যাবে না। 

আপনার এই লেখাটা যদি একটু সুন্দর বা ইউনিকভাবে লিখতে পারেন তাহলে এটি সবার উপরে থাকবে। ওই বিষয় সম্পর্কে যদি মানুষ জানতে চায় তাহলে  সবার আগে আপনার লিখাটা আসবে। এবং ভিজিটর সেই লেখাটির উপর চাপ দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে এবং ব্লগটি পরবে উদাহরণ স্বরূপ: যেমন আপনি গুগলে সার্চ করে আমাদের ওয়েব সাইটের বিভিন্ন পোস্ট পড়ছেন ঠিক সেই রকম।

এই ভাবে আপনি যদি প্রতিনিয়ত কাজ করে আপনার বিভিন্ন ব্লগ ওয়েব সাইটে রেঙ্খ করাতে পারেন তাহলে আপনি এই সাইট থেকে মাসে একটা ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

ধাপ ৪: ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম: আপনি হয়ত ইতোমধ্যে জেনেছেন যে অনলাইন থেকে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়েব সাইট বানিয়ে ইনকাম। শুধুমাত্র ওয়েবসাইট বানিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়। এই ওয়েবসাইট বানানোটা একদম ফেইসবুক একাউন্ট খোলার মত সহজ। যে কেউ চাইলে ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম করতে পারবেন । এখন আপনি বলতে পারেন কিভাবে এই ওয়েব সাইট বানাবেন? 

এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে আপনি ইউটিউব থেকে ওয়েব সাইট তৈরি করার ছোট্ট একটি টিউটোরিয়াল দেখে নিবেন। টিউটোরিয়াল দেখার পরও যদি আপনার বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আপনি ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর একটি কোর্স করে নিবেন। এবার আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি কোন নিশ নিয়ে ওয়েব সাইট বানাতে চাচ্ছেন ? 

বিভিন্ন জনপ্রিয় নিশ রয়েছে যেমন: স্বাস্থ্য, হেলথ এন্ড ফিটনেস, ইউগা, লাইফ স্টাইল, প্রোডাক্ট রিভিউ, ই- কমার্স ইত্যাদি। আপনি এই সকল নিশ নিয়ে ওয়েব সাইট বানিয়ে বিক্রি করে মাসে একটা হেন্ডসাম এমাউন্ট ইনকাম করতে পারবেন। তবে ওয়েব সাইট বানানের ক্ষেত্রে ডিজাইনের দিকে বেশি মনোযোগ দিবেন কারণ অধিকাংশ ক্লাইন্ট ডিজাইন দেখে ওয়েব সাইট ক্রয় করে থাকেন।

ধাপ ৫: ফ্রিল্যান্সিং করে আয়: আপনি কি জানেন? ফ্রিল্যান্সিং এর মানে কি? আর কিভাবেই বা ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা যায়? এই সব প্রশ্নের উত্তর আপনি আজকের পোস্টে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং মানে হচ্ছে মুক্ত পেশা। এর মানে হচ্ছে আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী আপনি কাজ করতে পারবেন।  

বর্তমানে আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সারগণ বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি মাসে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স তারা এনে দিচ্ছে বাংলাদেশে। তাই এই ফ্রিলান্সিং এ যোগদান করে আপনি টাকা আয় করার পাশাপাশি এই গৌরবেরও অংশীদার হতে পারবেন। এখন আসি কিভাবে শুরু করবেন এই কাজ। ফ্রিলান্সিং বলতে মুলত একটি মুক্ত পেশাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আপনি আপনার সময় অনুযায়ী অন্যের একটি কাজ করে দিবেন এবং তার বিনিময়ে আপনি একটা নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক পাবেন।

এখানে কাজ করার জন্য আপনার কোথাও যেতে হবে না আপনি ঘরে বসেই যে কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তির হয়ে কাজ সম্পাদন করতে পারবেন এবং আপনার ক্লায়েন্ট হবে বিভিন্ন দেশের। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হতে থাকবে।

যাই হোক, সবার প্রথমে এখানে আপনার দরকার একটি নির্দিষ্ট বিষয় দক্ষতা অর্জন করা। এটা হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং (Graphics Design), হতে পারে ফটো এডিটিং (Photo Editing), হতে পারে ওয়েব ডিজাইনিং (Web Design), ওয়েব সাইট মেকিং (Website Making), কপি রাইটিং (Copywriting), কন্টেন্ট রাইটিং (Content Writing), লোগো ডিজাইন (Logo Design), ইত্যাদি।

এসবের যেকোনো একটি কাজে আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রবেশ করতে পারবেন। আপনি যদি একাধিক কাজ পারেন সেক্ষেত্রে আপনার টাকা ইনকামের সুযোগও বেশি হয়ে যাবে। তবে যে কাজটি আপনি শিখেন না কেন সেই কাজে আপনাকে অনেক দক্ষ হতে হবে। সাথে ২--৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে।

কাজ শেখার পর আপনাকে বিভিন্ন ফ্রিলান্সিং সাইটে যেমন- Freelancer, Upwork, Fiver, ইত্যাদি মার্কেটে প্লেসে আপনার বিভিন্ন তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এর পরে আপনি কোন কোন কাজে পারদর্শী সেগুলো ওই সাইটে মেনশন করে দিতে হবে।তবে একটা বিষয় আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। বর্তমান সময়ে অনলাইন ইনকাম সাইট অনেক আছে। কিন্তু সঠিক ও ভালো মানের সাইট খুব একটা নেই।

তাই যেকোনো ওয়েবসাইটে কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই ভালো ভাবে সাইটটি দেখে নিবেন। যদি সব কিছু দেখে আপনার কাছে ভালো বলে মনে হয় কেবলমাত্র তখনই আপনি সেই সাইটে কাজ করা শুরু করবেন। তারপর, আপনি যে কাজ পারেন তা প্রমান করার জন্য আপনার পূর্বেই সম্পাদিত কোনো কাজ থাকলে সেটা পোর্টফোলিও আকারে ওই ওয়েবসাইটে সাজিয়ে রাখতে হবে। এতে করে আপনার ক্লায়েন্ট এসে আপনার পোর্টফলিও দেখে পছন্দ করলে আপনাকে তাঁর কাজে নিয়োজিত করবে।

এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে অবশ্যই ভালো একটা পোর্টফলিও তৈরি করার জন্য। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন হিসাবে ওই পোর্টফোলিও গুলোই আপনাকে কাজ পেতে বেশি সহায়তা করবে। হয়তো এমনও হতে পারে আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও আপনার কাজ পেতে একটি অসুবিধা হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার পরিচিত কেও যদি ফ্রিলান্সার থেকে থাকে তার থেকে কিছুটা পরামর্শ নিতে পারেন।

বা আপনি তার রেফারেন্স এর মাধ্যমে দুই-একটা কাজ করতে পারেন। আপনার কাজ দেখে ক্লায়েন্ট যখন আপনাকে ভালো একটা রিভিউ দিবে, তখন দেখবেন কাজ আসতেই থাকবে।এছাড়াও আপনি বিভিন্ন গ্রুপে গিয়ে আপনার সার্ভিস সম্পর্কে জানাতে পারেন । ওখান থেকেও ক্লায়েন্ট পেতে পারেন। আমাদের মতে ফ্রিলান্সিং এর ক্ষেত্রে প্রথম কাজটা পাওয়াই একটু কঠিন। এই ভাবে আপনি যদি ভালো ভাবে সার্ভিস দিয়ে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনি একটা মার্কেট প্লেসে কাজ করেই মাসে ৫০০$ ইনকাম করতে পারবেন ‌। 

ধাপ ৬: ভিডিও দেখে আয়: ভিডিও দেখে অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়টি হয়ত অনেকেই জানেন না। সত্যি কথা বলতে অনলাইন থেকে ভিডিও দেখে ইনকাম করার বিষয়টি অনেকের কাছে অবাক লাগলেও বিষয়টি কিন্তু সত্য। বর্তমানে এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনাকে প্রতিদিন ভিডিও দেখার জন্য পেমেন্ট করা হবে। তবে মনে রাখবেন, অনলাইনে ভিডিও দেখে ইনকাম করার মতো স্ক্যাম বা ভূয়া সাইটও রয়েছে। 

যারা আপনাকে দিয়ে ভিডিও দেখিয়ে পরবর্তীতে কোনো পেমেন্ট করবে না। এ ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাচঁতে অবশ্যই আপনাকে অনলাইন জগতে সব সময় সর্তক থাকতে হবে। একটা বিষয় সব সময়ই মনে রাখবেন। অনলাইনে কখনই কোনো ওয়েবসাইট আপনাকে ভিডিও দেখে খুব বেশি পেমেন্ট করবে না।যখনই দেখবেন কোনো ওয়েবসাইট মাত্রাতিরিক্ত পেমেন্ট করার কথা বলছে তখনই ওয়েবসাইটটিকে খুব ভালো ভাবে দেখে শুনে যদি সত্যিকার অর্থেই আসল বলে মনে হয় তখন কাজ করা শুরু করবেন; অন্যথায় নয়।

ধাপ ৭: ছবি বিক্রি করে আয়: আমাদের বর্তমান জেনারেশনে স্মার্টফোন নেই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। অনেকের কাছে আবার বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরাও বিদ্যমান। আপনি চাইলে আপনার এই মোবাইলের মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে শুধু বিভিন্ন আকর্ষণীয় জিনিসের ছবি তুলতে হবে। সেটা আপনি আপনা মোবাইল ফোন দিয়েও তুলতে পারেন আবার ক্যামেরা দিয়েও তুলতে পারেন।

তারপর আপনি চাইলে সেই ছবিগুলো একটু এডিট করে অথবা “র” (Raw) ফাইলটি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপলোড করে সেখান থেকে এক একটি ছবির জন্য ৫০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।

আপনি যদি অল্প সল্প ফটো এডিটিং জানেন, তাহলে এক্ষেত্রে অনেক সুবিধা লাভ করতে পারবেন। Photoshop, Illustrator ইত্যাদির মাধ্যমে ছবির আকর্ষণীয়তা অনেক ক্ষেত্রেই জানা বাড়ানো যায়।

অনলাইনে ছবি বিক্রির জন্য অনেক ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন আপনি। তার মধ্যে, Shutterstock, 500px, Envato ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয় এবং সব থেকে বেশি পে করে থাকে ফটোগ্রাফারদেরকে।

ইন্ডিয়ার সন্দিপ মহেশ্বরীর কথা অনেকেই শুনে থাকবেন। এখন প্রত্যেকটা টেকনোলজি বিষয়ক সেমিনার বা স্টেজ সো-তে তিনিই প্রধান অতিথি থাকেন। তিনিই অন্যতম উদাহরণ যে ফটোগ্রাফিকে নিজের পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন । এই সেক্টরে তিনি সফল একজন মানুষ। তার নিজেরও ছবি বিক্রির একটি ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে দেশ বিদেশের ১০০০ এরও বেশি ফটোগ্রাফার কাজ করে থাকেন।

আপনি এইসব ওয়েবসাইট গুলো তে যে ছবি গুলো বিক্রি করবেন সেগুলো আবার ওই ওয়েবসাইট থেকেই বিভিন্ন মানুষ ক্রয় করে নিবে। এইসব ছবি গ্রাফিক ডিজাইনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। বিভিন্ন বইয়ের কাভারে, ব্যানারে, ফেস্টুনে এইসব ছবি বিক্রি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ধাপ ৮: অনলাইন সার্ভে করে আয়: বাংলাদেশে অনেক কোম্পানি আছে যারা গ্রাহকের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সার্ভে করে থাকে। অনেক দেশে তো সরকারীভাবেই বিভিন্ন সার্ভে হয়ে থাকে। দেশের সার্বিক অবস্থায় দেশের জনগন কতটা সন্তুষ্ট এটা জানার জন্য সরকার এই সার্ভে গুলো করে থাকে। তবে বড় বড় কোম্পানিগুলোই বেশির ভাগ অনলাইন সার্ভের ব্যবস্থা করে থাকে।

এইসব সার্ভে সাধারনত পেইড হয়ে থাকে। আপনি চাইলেই এসব সার্ভে করে প্রতি মাসে ভালো অঙ্কের একটি ইনকাম করে ফেলতে পারেন।  বড় বড় কোম্পানিগুলো তো একটি সার্ভের জন্য ১০ -- ৫০$ ডলার পর্যন্ত খরচ করে থাকে। এইসব সার্ভে গুলো নির্দিষ্ট একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর জন্য আপনাকে প্রথমে ওই নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলতে হবে।

তারপর আপনার সব ইনফর্মেশন দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেট করে নিলেই আপনি কাজটি শুরু করার জন্য প্রস্তুত। তবে প্রতিটি সার্ভেতেই আপনি কুয়ালিফাই হতে পারবেন না। শুধু মাত্র যে সার্ভে গুলো আপনার অ্যাকাউন্ট-এ দেওয়া তথ্যের সাথে মিলবে সেগুলোই আপনি করতে পারবেন।

ধাপ ৯: অনলাইন রিসেলিং করে আয়: অনলাইনে পন্য বিক্রি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে বেশ বড় বড় কয়েকটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাবসা করে থাকেন। আপনিও চাইলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে বড় পর্যায়ে শুরু করতে হবে। আর এতে আপনার পুরো সময়টাই ব্যয় করতে হবে এবং সাথে সাথে আরও অনেক দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেটা ছাত্রজীবনে করা একটি কষ্টকর হয়ে যায়।

এক্ষেত্রে আপনি চাইলে অনলাইন রিসেলিং (Online Reselling) করে বেশ ভালো ইনকাম করতে পারেন। অনলাইন রিসেলিং মুলত অনলাইনে পন্য বিক্রির কাজ কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে বেশি কিছু করা লাগবেনা। আপনি শুধু একটি রিসেলিং কোম্পানি (Reselling Company) তে আপনার একাউন্ট খুলবেন এবং এখান থেকে পন্যের ছবি এবং বিবরন নিয়ে আপনি নিজে একটা পেজ খুলে বিক্রি করবেন।

রিসেলিং কোম্পানির কাছে অনেক কম দামে পন্য পাবেন আর ওইগুলা তার থেকে সামান্য বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করে আপনি নিজের লাভ বের করবেন। বেশ কিছু রিসেলিং কোম্পানি (Reselling Company) বাংলাদেশে রয়েছে। এর মধ্যে শপআপ (ShopUp) অন্যতম। এখানে আপনাকে পন্য বিক্রয় করার জন্য নিজের কোনো পন্য লাগবে না। পন্য যোগাড় থেকে শুরু করে বাকি সব কাজই ওই রিসেলার কোম্পানি করে দিবে।

ধাপ ১০: ড্রপশিফিং এর মাধ্যমে আয়: ড্রপশিপিং (Dropshipping) অনলাইন ব্যবসার অন্তর্গত একটি কাজ যার মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব। চলুন প্রথমেই জেনে নেই ড্রপশিপিং (Dropshipping) আসলে কি? একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝালে হয়তো আপনি খুব সহজেই বুঝে যাবেন।

মনে করেন, আপনার এলাকায় পরিচিত একজন কোনো একটা পন্য তৈরি করে সেটা বাজারে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখলেন যে এই পন্যটিই শহরে বড় বড় মার্কেটে অথবা কোনো ই-কমার্স সাইটে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরকম কিন্তু সচরাচর আমাদের দেশে সবসময় হয়েই থাকে। কোনো একটা সবজি কৃষকদের থেকে ৫ টাকা কেজি মূলে কিনে বড় বড় বাজারে ওইগুলো ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে।

এক্ষেত্রে আপনি নিজেই বড় একটি ই-কমার্স (E-Commerce) সাইটে প্রোফাইল খুলে ওই পন্যটি বিক্রি করতে পারেন। আপনি আপনার এলাকার যে উৎপাদনকারী আছে তার কাছে থেকে পন্যটি ৫০০ টাকায় কিনে সেটি আপনি আপনার ই কমার্স সাইটে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

এতে একটি পন্যেই ৯০০ টাকা লাভ করতে পারবেন।  অথবা আপনি যদি ১২০০ টাকায় বিক্রি করেন তাতেও আপনার ৭০০ টাকা লাভ থেকেই যাচ্ছে। এটিই মুলত ড্রপশিপিং (Dropshipping)। আপনার এলাকায় যদি এরকম কোনো সুযোগ থেকে থাকে তাহলে আপনার অবশ্যই উচিৎ সুযোগটি কাজে লাগানো।

ধাপ ১১: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) বর্তমানে সারা বিশ্বেই অনেক জনপ্রিয় একটি অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও আস্তে আস্তে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর সংখ্যা বাড়ছে।

এটি অনেক সহজ একটি মাধ্যম। কিন্তু সাধারন মানুষের অনেকেরই এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা না থাকার কারনে এই কাজে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করছে না তাঁরা। আসুন বিষয়টা একটু সহজ করে বুঝে নেই। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট রয়েছে। এদের ভেতরে অনেকগুলো আবার সারা বিশ্বেই পন্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এইসব ই-কমার্স (E-Commerce) সাইটে প্রত্যেকটাতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) নামে একটি সেকশন রয়েছে। 

আপনি সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে খুব সহজেই তাদের মেম্বার হয়ে যেতে পারেন। তারপর আপনার একটা গ্রুপ তৈরি করতে হবে বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে। এরকম গ্রুপ আমাদের প্রতিটি মানুষেরই আছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে। এখন ওই নির্দিষ্ট ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট থেকে আপনি বিভিন্ন পন্যের বিবরন সহ ওই লিঙ্ক কপি করে বিভিন্ন গ্রুপে দিতে পারেন। 

এখন কেউ যদি আপনার দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে পন্যটি কিনে তাহলে আপনি সেটার থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের একটি কমিশন পাবেন। এক্ষেত্রে আপনার কমিশনের জন্য কিন্তু পন্যটির দাম বাড়বে না। পন্যটির আসল দাম যা সেটি দিয়ে মানুষ কিনতে পারবে আপনার পাঠানো লিঙ্ক থেকে। তবে এ ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং সর্ম্পকেও পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট ধারনা থাকা চাই।

এভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব হয় যদি আপনি ভালো একটি কমিউনিটি তৈরি করে ফেলতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে এখান থেকে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমেও ইনকাম করতে পারেন। এর জন্য আপনার দরকার অনেক গুলো একটিভ ইমেইল। আপনি যদি ১--২ হাজার একটিভ ইমেইল ম্যানেজ করে  ফেলতে পারেন, তাহলেই খুব সহজে এখানে থেকে ভালো অঙ্কের একটি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে বর্তমান সময়ে অ্যামাজন এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ধাপ ১২: অনলাইনে পড়িয়ে আয়: আমাদের আসে পাশে অনেক মানুষই দেখতে পাবেন যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা কোনো কোচিং সেন্টার খুলে সেখানে পড়াচ্ছেন। এভাবে পড়িয়ে মাসে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন তাঁরা। কিন্তু এভাবে বাসায় গিয়ে গিয়ে পড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় এবং অর্থ যাতায়াতেই খরচ হয়ে যায়। অন্যদিকে কোচিং সেন্টারের জায়গা জোগাড় করাও একটি কষ্টসাধ্য বিষয়।

এক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশে যে বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সেটি হলো অনলাইন টিচার (Online Teacher) কনসেপ্ট। আপনি চাইলেই ঘরে বসেই অনলাইনে ছাত্রদের পড়িয়ে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আপনি জেনে অবাক হবেন যে বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশ শিক্ষক অনলাইনে শিক্ষা দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক বেশি। 

বর্তমানে আমাদের দেশেও এরকম বেশ কয়েকটি প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে অনলাইনে পড়ানো হয়। এর মধ্যে টেন মিনিট স্কুল অন্যতম। এক্ষেত্রে নতুন অবস্থায় আপনি তাদের থেকেও অনেকটা ধারনা নিতে পারেন। প্রথম প্রথম হয়তো বিভিন্ন বাধা বিপত্তি আসবে, ছাত্র খুজতে বেগ পেতে হবে, কিন্তু পরবর্তীতে অনেক সুবিধা পেতে পারেন এখানে থেকে।

১৩।পিটিসি থেকে আয়ঃ

অনেক ওয়েবসাইট আছে, যাতে রাখা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনাকে অর্থ দেওয়া হবে। এ ধরনের সাইটকে পিটিসি সাইট বলে। প্রকল্প শুরুর আগে নিবন্ধন করতে হয়। তবে মনে রাখতে হবে পিটিসি সাইটগুলো বেশির ভাগ ভুয়া হয়। তাই কাজের আগে নিশ্চিত হতে হবে সেটি প্রকৃত সাইট কি না। অনেক সময় বন্ধুতে রেফারেন্স দিয়ে আয় করতে পারেন।

ধাপ ১৪: গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয়: অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিকস ডিজাইন ভালো উপায়। যাঁরা এই কাজে দক্ষ, তাঁরা বিভিন্ন ডিজাইন অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে সেল করে সেখান থেকে ভালো মানের একটা ইনকাম করতে পারবেন। মূলত আপনি আপনার ক্রিয়েটিভিটিকে কাজে লাগিয়ে যে নকশা তৈরি করবেন সেই নকশাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আজীবন ইনকাম করতে পারবেন।

ভালো মানের একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের তৈরি একটি নকশা অনেকবার বিক্রি হয়, অর্থাৎ একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে থাকে। অনলাইনে এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে গ্রাফিক্সের কাজ বিক্রি করা যায়। এ ছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতেও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা রয়েছে।

ধাপ ১৫: ভার্চ্যুয়াল সহকারী: এখন ভার্চ্যুয়াল সহকারীদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। ঘণ্টাপ্রতি আয়ও বেশি। বাড়ি থেকে করপোরেট অফিসের নানা কাজ অনলাইনে করে দেওয়ার সুবিধা আছে এখন। ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মী বা নিজের ব্যবসা নিজেই চালানো যায়। বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান। 

এর মধ্যে ফোন কল, ই-মেইল যোগাযোগ, ইন্টারনাল রিসার্চ, ডেটা এন্ট্রি, এডিটিং, রাইটিং, ব্লগ, গ্রাফিকস, টেক সাপোর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনার মতো কাজ থাকে। ২৪ / ৭ ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যাচ, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, পিপল পার আওয়ার, আপওয়ার্কের মতো সাইটগুলোতে এই ধরনের কাজ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।

ধাপ ১৬: অনুবাদ করে আয়: যাদের বাংলা, ইংরেজি এই দুইটি ভাষার পাশাপাশি অন্যান্য ভাষায়ও দক্ষতা আছে তাঁরা এই সেক্টরে কাজ করার জন্য একদম পারফেক্ট। এই সেক্টরে কাজ করে ইনকাম করতে হলে আগে আপনাকে বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। না হলে এই সেক্টরে আপনি একটি কাজও পাবেন বলে আশা করা যায় না। 

আপনার যদি ইংরেজির পাশাপাশি অন্য কোনো ভাষা ভালোভাবে জানা থাকে তাহলে সেই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আপনি আয় করতে পারবেন। বেশ কিছু ওয়েবসাইট ও মার্কেট প্লেস আছে যেখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডকুমেন্ট অনুবাদ করার কাজ দেওয়া হয়।

যাঁদের স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি, কোরিয়ান, চাইনিজ ও জার্মানসহ অন্যান্য ভাষা জানা আছে এবং এগুলো থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ বা ইংরেজি থেকে এসব ভাষায় অনুবাদ করতে পারেন তাঁরা এই সেক্টরে ভালো আয় করতে পারবেন। কাজদাতারা নিজে সময়ের অভাবে অনুবাদের কাজ ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নেন। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এ ধরনের কাজ পাবেন।

ধাপ ১৭: কনটেন্ট রাইটিং করে আয়: যারা লেখালেখি করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এই সাইটে প্রচুর কাজ রয়েছে। তবে শুধু লিখতে জানলেই হবে না লেখার মানও যতেষ্ট ভালো হতে হবে। বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে এই ধরনের অনেক কাজ পাওয়া যায়। যাঁরা লেখালেখিতে ভালো এবং একাধিক ভাষায় সাবলীল, তাঁদের কাজের জন্য বসে থাকতে হয় না।

শুরুতে আপনার যদি তেমন একটা দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে কাজ করে বা লিখে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। আর্টিকেল লেখার মানের ওপর ভিত্তি করে আয় আসে। কাজদাতা নির্দিষ্ট নীতি মেনে লেখার জন্য বলতে পারেন। নির্দিষ্ট বিষয় বা নিশকে টার্গেট করে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারলে আয়ের ধারাও বেড়ে দিগুন হয়ে যায়।

ধাপ ১৮: ডাটা এন্ট্রি করে আয়: অনলাইনে সহজ কাজগুলোর একটি হচ্ছে ডেটা এন্ট্রি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আয় খুব কম। তবে এ ধরনের কাজ অটোমেশনের কারণে এখন খুব কম পাওয়া যায়। যাঁদের কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও দ্রুতগতির টাইপিং দক্ষতা আছে, তাঁরা এ ধরনের কাজ করতে পারবেন। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে এ ধরনের কাজ পাওয়া যায়। তবে যাঁদের এই কাজে দক্ষতা আছে, তাঁরা সহজে কাজ পাবেন এবং দ্রুত আয় বাড়াতে পারবেন। 

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক পাঠিকা গণ, আমাদের আজকের পোস্টটি পড়ে আপনার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন কেননা আপনার একটি মন্তব্য আমাদের পোস্ট লিখতে এবং বিভিন্ন বিষয়ে জানাতে আরো বেশি আগ্রহী করে তোলে। আর হ্যাঁ, আজকের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি, আবার দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে । আল্লাহ হাফেজ সবাইকে 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url