ছোটদের জন্য একুশের কবিতা - ২১ শে ফেব্রুয়ারি কবিতা PDF

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি ছোটদের জন্য একুশের কবিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা ছোটদের জন্য ২০টি বাছাইকৃত সেরা কবিতা ও ছড়া আমাদের পোস্টে তুলে ধরেছি। আপনি যদি আপনার ছোট্ট মনির জন্য কবিতা ও ছড়া খুঁজে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের পোস্টটি ভিজিট করুন।

২১ শে ফেব্রুয়ারি

আমরা সকলেই জানি, ২১ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস। এই দিনটি বাঙালির জীবনে একটি স্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করতে রাজপথে নেমে প্রাণ দিয়েছেন রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত ও নাম না জানা আরো অনেকেই। তাঁদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ আমাদের সেই মাতৃভাষা বাংলাকে ফিরে পেয়েছি।

তাই, ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে সকল স্থানের শহীদ মিনার গুলোতে ফুল দেওয়া হয়। সেই সাথে আয়োজন করা হয়, গান, কবিতা আবৃত্তি ও ছড়া প্রতিযোগিতার । তাই, আপনি যদি আপনার ছোট্ট মনির জন্য ছড়া বা কবিতা খুঁজে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের পোস্টটি ভিজিট করুন।

পেজ সূচিপত্র: ছোটদের জন্য একুশের কবিতা - ২১ শে ফেব্রুয়ারি কবিতা PDF

“একুশ আমার” লিখেছেন- আসাদ বিন হাফিজ

একুশ আমার পলাশ শিমুল

কৃষ্ণচূড়ার ফুল

একুশ আমার শহীদ ভাইয়ের

রক্ত নদীর কূল।


একুশ আমার প্রতিবাদের

বজ্রকঠিন ভাষা

একুশ আমার বেঁচে থাকার

পল্লবিত আশা।


একুশ হলো দুঃশাসনকে

রুখে দেয়ার দিন

একুশ হলো রক্তমাখা স্মৃতি অমলিন।

“একুশের কবিতা” লিখেছেন- আল মাহমুদ

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

দুপুর বেলার অক্ত

বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায় ?

বরকতের রক্ত।


হাজার যুগের সূর্যতাপে

জ্বলবে এমন লাল যে,

সেই লোহিতেই লাল হয়েছে

কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে!


প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে

ছড়াও ফুলের বন্যা 

বিষাদগীতি গাইছে পথে

তিতুমীরের কন্যা।


চিনতে না কি সোনার ছেলে

ক্ষুদিরামকে চিনতে?

রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে

মুক্ত বাতাস কিনতে?

“মাতৃভাষা দিবস” -লোকমান আহমদ হাকীম

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

মাতৃভাষা দিবস,

বাংলা পেয়েছে ধরিত্রী মান

নয় তো কভু অলস।


মহাসাগর মহা নদী 

দিয়েছে ভাষা পাড়ি!

মায়ের ভাষা পৌঁছে গেছে

কতনা ঘর বাড়ি!


ভাষার তরে জীবন দেয়া

এ বাঙালির নজীর,

যুগ-যুগে সালাম, রফিক

প্রেরণা এই জাতির।


বাংলা আমার শিকড় জুড়ে

সব সংস্কৃতির মুড়ে,

ভয় দেখিয়ে জুলুম করে

পারবে না নিতে কেড়ে।


শিশুর মুখে যখন শুনি

মাতৃভাষার বুলি,

মুচকি হেসে শুনতে থাকি

সকল কিছু ভুলি।


মায়ের মুখে যখন শুনি

মাতৃভাষা বারবার!

যেন তখন মুক্তা ঝরে!

মনে তুলে ঝংকার!

“ফেব্রুয়ারির একুশ”- শচীন্দ্র নাথ গাইন

নামে লোকের ঢল

মিছিল নিয়ে এগিয়ে তারা

দেখায় সাহস-বল।


স্লোগানমুখর সেদিন ঢাকা

সামনে চলার ঝোঁক

গুলির আদেশ দিয়ে রাঙায়

শাসক খুনি চোখ।


বাংলা আমার প্রিয় ভাষা

মায়ের হাসি মুখ

রাখতে গিয়ে তাকে ভাইয়ের

ঝাঁঝরা হলো বুক।


স্রোতের ধারায় রক্ত গড়ায়

পিচঢালা পথ লাল

বায়ান্ন তাই সর্বনাশা

দুঃখ-ব্যথার সাল।


অত্যাচারীর দুঃশাসনের

কাঁপলো শেষে ভিত

মেনে নিলো ভাষার দাবি

হয় বাঙালির জিত।

“একুশের সুখ” -নূরে আজম খান

একুশ তুমি কি হাসবে

নাকি কাঁদবে এদিনে?

সারা বাংলার প্রতিটি মানুষ

শ্রদ্ধায় নত তোমাদের ঋণে।


দেখে যাও হে সালাম, জব্বার

জাগ্রত আবার শহদ মিনার,

সেদিন তোমাদের রক্তিম চিৎকার

আজ আমাদের গর্ব, অহংকার।


যখনই আমরা কথা বলি

মায়ের শেখানো স্বপ্ন বুলি,

সেই ভাষার মত কথাকলি

কানে ফুটে যায় নিরিবিলি।


সে ভাষার আছে ইতিহাস

আছে মৃত তরুণের দীর্ঘশ্বাস,

যে ভাষা আঁকড়ে বসবাস

সে ভাষায় গভীর গাঢ় বিশ্বাস।

“কেন আসিয়াছ” -শারমিন আকতার রিনু

ওহে ফাল্গুন কেন আসিয়াছ তুমি?

লাল টগবগে সব ফুল নিয়ে।

ওহে ফাল্গুন কেন আসিয়াছ তুমি?

এত আনন্দ উত্তেজনা নিয়ে।

ওহে ফাল্গুন কেন আসিয়াছ তুমি?

শহীদের মায়ের বুকে আঘাত দিতে

উত্তর দাও! আমায় উত্তর দাও!

উওরে ফাল্গুন বলে উঠে

ওহে শহীদের মাতা

আমি আসিয়াছি কেন জানো?

তোমার বুকে ১৯৫২ এর আঘাত নিয়ে নই


আমি আসিয়াছি।

২১ শে ফেব্রুয়ারী আর লাল ফুল নিয়ে

ভাষার সে শহীদদের বরণ করিতে।

“ভালোবাসার বাংলা ভাষা” - মুহাম্মাদ কিবরিয়া বাদল

মাতৃভাষা মায়ের ভাষা- 

মাতৃ মুখের বোল,

মায়ের হাসি ভালোবাসি-

দুই গালে দুই টোল।


আল্লাহর দান বাংলা ভাষা-

মিষ্টি মধুর, বড়ো খাসা,

হৃদমাঝারে ঢেউ খেলে যায়-

গভীর ভালোবাসা।


আল্লাহর দান বাংলা ভাষা-

ভাব প্রকাশে পুরে আশা,

গুঞ্জরণে, আনমনে যার-

ভালোবাসায় ঠাসা।


ভালোবাসার বাংলা ভাষা-

মিটায় মনের ভাবের তৃষা,,

প্রাণচঞ্চল খোশমেজাজে-

হাওয়ায় ওড়া বোল-ভাসা!


মন জুড়ানো মিষ্টি মধুর-

ভরা পেটে তুলে ঢেকুর,

তৃপ্তি নিয়ে উদ্দামতায়-

হাওয়ায় বাজে নুপুর!


আল্লাহ্'র দান এই নিয়ামাহ-

সযতনে লালন করি,

বিকৃতি নয় প্রমিত ধারায়-

এসো,শুদ্ধে চর্চা গড়ি।


ও আমার বাংলা ভাষা-

আল্লাহর দান এই নিয়ামাহ,

কৃতজ্ঞতায় আয়রে বলি-

বলি ওরে, সুবহানাল্লাহ্।

“২১ শে” -মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

(মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)

২১শে মানেই অঙ্গীকার

২১শে মানেই ভাষা,

২১শে মানেই পথ চলা

নব প্রজন্মের দিশা।


২১শে মানেই মাটির আশীর্বাদ

আজানে প্রাণের সুর,

২১শে মানেই গণতন্ত্র

অধিকার সুমধুর।


২১শে মানেই ভালোবাসা

বেঁচে থাকা ভরসা,

২১শে মানেই সংগ্রামী জীবন

আগামীর নব আশা।


২১শে মানেই তোমার আমার

বেঁচে থাকার অধিকার,

২১শে মানেই নূতন উদয়

এগিয়ে বাংলা সবার।


২১শে মানেই যুগে যুগে

ফিরে ফিরে দেখা,

২১শে মানেই শ্রাবণ বর্ষা

হৃদয়ে রক্ত লেখা।

“মাতৃ ভাষা” - গৌরাঙ্গ দেব সরদার

আমার ভাষা আলোর মতো

হৃদয় উপছে পড়ে........


সকল আবেগ সকল ব্যথা

সকল খুশির রঙিন ছটা

কোন ভাষাতে ফুটবে এমন

মিষ্টি মধুর সুরে...


চোখ খুলতেই প্রথম যেদিন

মা আমাকে থামায়

কান্না থেকে, আদর করে

সোনা আমার, মানিক ওরে

কোন ভাষাতে,..,ডেকেছিল

জুড়িয়ে গেলো হৃদয় !


সে তো আমার মায়ের ভাষা

বুকের দুধের সমান,,,,,,

কেউ কি তারে কাড়তে পারে

চোখ রাঙিয়ে জুলুম করে

অমর একুশ দেখিয়ে দিলো।

বিশ্বকে তার প্রমাণ...


কতো শহীদ রক্ত দিলো

কতো শহীদ প্রাণ,,,,,,,

অমর তাঁদের আত্মত্যাগে

বাংলা ভাষা সবার আগে

সব জাতিকে বুঝিয়ে দিলো

মাতৃভাষার মান।

“একুশ আমার” -শান্তি পদ মাহান্তী

একুশ আমার স্মৃতি ব্যথার

মায়ের চোখের জল,

একুশ আমার সব অহংকার

আমার বুকের বল ।


ভোলা শক্ত ভাইয়ের রক্ত

সে কি ভোলা যায় !

আজও শোকে মায়ের চোখে

বান ডাকেরে হায় ।


রফিক জব্বার বাংলা ভাষার

অমর শহীদ বীর,

বরকত সালাম জানাই সেলাম

শ্রদ্ধানত শির।


এপাড়া নয় ওপাড়া নয়

বুকের মাঝে ঘর,

নাইরে বেড়া আপন তোরা

আবেগ ভরা ঝড়।


জানে বিশ্ব নয়রে নিঃস্ব

বাংলার আছে মান,

আজ একুশে সারা বিশ্বে

বাংলারই জয়গান।

“বাংলা ভাষা” - অতুলপ্রসাদ সেন

মোদের গরব, মোদের আশা,

আ-মরি বাংলা ভাষা!

তোমার কোলে,

তোমার বোলে,

কতই শান্তি ভালোবাসা!

কি যাদু বাংলা গানে!

গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,

গেয়ে গান নাচে বাউল,

গান গেয়ে ধান কাটে চাষা!

বিদ্যাপতি, চণ্ডী, গোবিন্,

হেম, মধু, বঙ্কিম, নবীন-

ঐ ফুলেরই মধুর রসে,

বাঁধলো সুখে মধুর বাসা!

বাজিয়ে রবি তোমার বীণে,

আনলো মালা জগৎ জিনে!

তোমার চরণ-তীর্থে আজি,

জগৎ করে যাওয়া-আসা!

ঐ ভাষাতেই নিতাই গোরা,

আনল দেশে ভক্তি-ধারা,

আছে কৈ এমন ভাষা,

এমন দুঃখ-শ্রান্তি-নাশা?

ঐ ভাষাতেই প্রথম বোলে,

ডাকনু মায়ে ‘মা, মা’ বলে;

ঐ ভাষাতেই বলবো হরি,

সাঙ্গ হলে কাঁদা হাসা!

মোদের গরব, মোদের আশা,

আ-মরি বাংলা ভাষা!

“বঙ্গভূমি ও বঙ্গভাষা” - কায়কোবাদ

‘বাংলা আমার মাতৃভাষা

বাংলা আমার জন্মভূমি।

গঙ্গা পদ্মা যাচ্ছে ব’য়ে,

যাহার চরণ চুমি।

ব্রহ্মপুত্র গেয়ে বেড়ায়,

যাহার পূণ্য-গাথা!

সেই-সে আমার জন্মভূমি,

সেই-সে আমার মাতা!

আমার মায়ের সবুজ আঁচল

মাঠে খেলায় দুল!

আমার মায়ের ফুল-বাগানে,

ফুটছে কতই ফুল!

শত শত কবি যাহার

গেয়ে গেছে গাথা!

সেই-সে আমার জন্মভূমি,

সেই-সে আমার মাতা!

আমার মায়ের গোলা ছিল,

ধন ধান্যে ভরা!

ছিল না তার অভাব কিছু,

সুখে ছিলাম মোরা!

বাংলা মায়ের স্নিগ্ধ কোলে,

ঘুমিয়ে রব আমি!

বাংলা আমার মাতৃভাষা

বাংলা জন্মভূমি!’

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো” - আবদুল গাফফার চৌধুরী

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি

আমি কি ভুলিতে পারি

ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু ঝরা এ ফেব্রুয়ারি

আমি কি ভুলিতে পারি

আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি

আমি কি ভুলিতে পারি।।

জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখীরা

শিশু হত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,

দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী

দিন বদলের ক্রান্তিলগ্নে তবু তোরা পার পাবি?

না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই

একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।

সেদিনও এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে

রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিল হেসে;

পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকনন্দা যেন,

এমন সময় ঝড় এলো এক ঝড় এলো খ্যাপা বুনো।।

সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা,

তাহাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা

ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে

ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই সারা বাংলার বুকে

ওরা এদেশের নয়,

দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়

ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি

একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।।

তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি

আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী

আমার শহীদ ভায়ের আত্মা ডাকে

জাগো মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাটে

দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালবো ফেব্রুয়ারি

একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।

“একুশে ফেব্রুয়ারি” লিখেছেন- ভবানীপ্রসাদ মজুমদার

‘একুশ’ মানেই উৎসব নয়,

রথ-দোল বা চড়কের

‘একুশ’ মানেই একটা ছবি

রক্তে-ভেজা সড়কের


‘একুশ’ মানেই প্রতিষেধক

বাংলা - ভাষার মড়কের

‘একুশ’ মানেই মরণ - অস্ত্র

পিশাচ-সহ নরকের


‘একুশ’ মানেই

মিটিং মিছিল, বক্তৃতা

আর গল্প না

‘একুশ’ কথার ফুলঝুড়ি

নয়, কিংবা রঙিন কল্পনা


‘একুশ’ মানেই হৈ-হুল্লোড়,

হাসি-খুসির মন্ত্র না

‘একুশ’ মানেই ভাই হারাদের

বুকের অসীম যন্ত্রণা


‘একুশ’ আমার একুশ

তোমার সব সময়ে, সব্বাইয়ের

‘একুশ’ মানেই রফিক-সালাম

বরকত আর জব্বারের


‘একুশ’ মোদের মুখের ভাষা

হীরা-মানিক-মরকতের

‘একুশ’ মানেই বুকের আশা

রফিক-সালাম-বরকতের


‘একুশ’ এলেই বুক ফুলিয়ে

চলছে মিছিল আজ পথে

‘একুশ’ মানেই রক্ত-জোয়ার

বইলো ঢাকার রাজপথে


‘একুশ’ মানেই বাংলা ভাষা,

এই একুশের দর কতো

‘একুশ’ মানেই রফিক

সালাম-জব্বার আর বরকতও


‘একুশ’ মানেই ভাষা দিবস

‘একুশ’ কে তাই বন্দি রে

‘একুশ’ মানেই দুঃখ - সুখের

বন্যা মনের মন্দিরে।

“একুশের আলপনা” লিখেছেন- নির্মলেন্দু গুণ

আহা কতদিন পর আমরা

আবার রাজপথে নামলাম,

কতদিন পর আজ একটি

সম্পূর্ণ রাত আমাদের হলো,


কেবল তোমার নামে,

একুশে ফেব্রুয়ারি

আমরা নেমেছি পথে,


তোমার অগ্নির ভাষা মুখে

আমরা নেমেছি পথে।

আহা কতদিন পর আমাদের

মৌনসুপ্ত প্রানের ভিতর

থেকে ঝলকে বেরিয়ে এলো

এই প্রসারিত শহীদ শব্দটি


এই নাগরিক গুহাবাসী

মানুষেরা আজ কতদিন

পর আবার মুখর হলো

নিহত প্রাণের জয়গানে

কতদিন পর আহা!


আলোর অমৃত হাতে নিয়ে

ঐ সত্যোর প্রত্যাশী মানুষেরা 

আসে, অন্ধকারে।

ফুলের প্রতীক হাতে নিয়ে

ঐত্যো শিল্পের প্রত্যাশী

মানুষেরা আসে, স্বপ্নে।


সুন্দরের স্বপ্ন বুকে নিয়ে

ঐতো প্রগতী প্রত্যাশী

মানুষেরা আসে, বসন্তে।


ঐতো কোমল কঠোর

নগ্ন পদচিহ্নগুলো,

পাশাপাশি ঐতো সেই

লালসালু আর কালো

ব্যাজের মিছিল,


ঐতো সে আমার

ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

গানের মেয়েরা বাতাসে

বক্ষ্মিম গ্রীবা দোলাতে

দোলাতে পৌঁছে যাচ্ছে

শহীদ স্বপ্নের কাছাকাছি।


ঐতো ভোরের সূর্য,

ঐতো শিশির মাখা লাল

ফুলগুলি।

ঐখানে ঐ আমি আছি,

ঐখানে ঐ আমি আছি।


আহা কতদিন পর,

আহা কতদিন পর এ

শহর হয়েছে আমার।

একুশে ফেব্রুয়ারিতে ছোটদের আবৃত্তি করার ৫টি ছড়া

প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা ছোট্ট মনিদের আবৃত্তি করার জন্য ৫টি সুন্দর ছড়া শেয়ার করেছি। আপনি চাইলে এই ৫টি ছড়া থেকে যে কোনো একটি আপনার ছোট্ট মনির জন্য বেঁচে নিতে পারেন। এছাড়াও যদি আপনার পছন্দের কোনো ছড়া বা কবিতা থেকে থাকে তাহলে সেটি আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা সেটি এখানে সংগ্রহ করে দেওয়ার চেষ্টা করব।

১.“ফেব্রুয়ারির গান” লিখেছেন- লুৎফর রহমান রিটন:

দোয়েল কোয়েল ময়না

কোকিল

সবার আছে গান

পাখির গানে পাখির সুরে

মুগ্ধ সবার প্রাণ।


সাগর নদীর উর্মিমালার

মন ভোলানো সুর

নদী হচ্ছে স্রোতস্বিনী

সাগর সমুদ্দুর।


ছড়ায় পাহাড় সুরের বাহার

ঝরণা-প্রকৃতিতে

বাতাস আর প্রতিধ্বনি

গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে।


গাছের গানে মুগ্ধ পাতা

মুগ্ধ স্বর্ণলতা

ছন্দ-সুরে ফুলের সাথে

প্রজাপতির কথা


ফুল পাখি নই, নইকো পাহাড়

ঝরনা সাগর নই

মায়ের মুখের মধুর ভাষায়

মনের কথা কই।


বাংলা আমার মায়ের ভাষা

শহিদ ছেলের দান

আমার ভাইয়ের রক্তে লেখা

ফেব্রুয়ারির গান।


২. “একুশ” লিখেছেন- জসীম মেহবুব:

ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি

ভালোবাসার সুর,

একুশ আমার সবুজ ভিটে

আলোর সমুদ্দুর।


রূপ কাহিনী শোলকগাথা

কুমড়োলতার ঝাড়,

একুশ আমার বুবুর গাঁথা

বেলি ফুলের হার।

আশার সূর্য একুশ আমার

বিশাল উঁচু বুক,

বাবার স্নেহ মার মমতায়

হাসি - খুশি মুখ।


মিষ্টি হাসি একুশ আমার

ধান - কাউনের মাঠ,

পল্লীকবির নকশিকাঁথা

সোজনবেদের ঘাট।

একুশ ভোরের শিশিরকণা

শালি ধানের শীষ,

জোনাকপোকার মিটিমিটি

আলো অহর্নিশ।


একুশ আমার শক্ত খুঁটি

চমকে দেওয়া ভোর,

একাত্তরে রক্তে কেনা

স্বাধীনতার দোর।


৩. “ভাষার জন্য” এই ছড়াটি লিখেছেন- কেশব জিপসী:

মাতৃভাষায় বলবে কথা

সবার অধিকার

এ দাবিটা করতে আদায়

প্রাণ দিল জব্বার।


সকল কথা যে ভাষাতে যে

ভাষাতে গান,

সে ভাষাটার জন্য শহিদ

শফিক রহমান।


ভাষার দাবি মানতে হবে এ

ছাড়া নেই পথ,

রক্ত দিয়ে তা বোঝালে

ভাই প্রিয় বরকত।


জাতি যখন অন্ধকারে পায়

না খুঁজে দিক,

দেশ জাগালো শহিদ হয়ে

প্রাণপ্রিয় রফিক।


ভাষার জন্য জীবন দিলে

তাই অধিকার পেলাম,

তোমার জন্য গর্বিত দেশ

প্রিয় আবদুস সালাম।


আরো যারা নাম না জানা

শহিদ হলে ভাই,

সবার স্মৃতিচারণ করে

শক্তি ফিরে পাই।


একুশ এখন বিশ্ববাসীর

নিজ ভাষাকে চিনার,

স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আজ

দৃপ্ত শহিদ মিনার।


৪. “ভাষার ছড়া” এটি লিখেছেন- দীপংকর চক্রবর্তী:

দুপুর সেদিন উপুর হয়ে

নীল আকাশের নিচে

কেঁদে কেঁদে উজাড় হলো

রক্তমাখা পীচে।


পথের মানুষ থমকে দাঁড়ায়

বাতাস বারুদ মাখা,

বিষণ্ণ বট, কৃষ্ণচূড়া,

কষ্টে নাড়ায় শাখা।


তপ্ত ফাগুন জ্বালায় আগুন

মিছিল চতুর্দিকে

প্রতিবাদের শ্লোগানগুলি

আকাশে দেয় লিখে।


ভাষার নামে শপথ নিলাম

কন্ঠে নিলাম গান

বাঁচাতে এই বাংলা ভাষা

যায় যদি যাক প্রাণ।


৫. “ফেব্রুয়ারির ছড়া” এটি লিখেছেন- দীপংকর চক্রবর্তী:

ফেব্রুয়ারির সকাল বেলা

একুশ তারিখ ভোরে

হাজার মানুষ ডাক দিয়ে যায়

সব মানুষের দোরে।


ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

রক্ত দিল যারা

সব মানুষের স্মৃতির পাতায়

রইবে জেগে তারা।


তারাই ছিল মিছিল জুড়ে

সামনে পিছে সবখানে

ছড়িয়ে দিলো বাংলাভাষা

সব সুরে আর সব গানে।


আজকে তারা দূরের তারা

আকাশের রয় চেয়ে

পৌঁছে যাব তোমার কাছে

প্রাণের খেয়া বেয়ে।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আর হ্যাঁ এই আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। এই রকম আরও আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট। ধন্যবাদ সবাইকে

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url