১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কবিতা ও বক্তব্য
প্রিয় পাঠক আপনি কি ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কবিতা খুঁজতে এসেছেন? তাহলে, আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন। কেননা আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ১৭ই মার্চ উপলক্ষে কবিতা, ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস অনুচ্ছেদ
শিশু দিবস কেন পালন করা হয়, জাতীয় শিশু দিবস রচনা এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেছি। বাংলাদেশ প্রতি বছর মার্চ মাসের ১৭ তারিখ পালিত হয় বিশ্ব শিশু দিবস। এছাড়াও ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালিত হয়। তাহলে, চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা জেনে নেই ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কবিতা ও বক্তব্য।
পেজ সূচিপত্র: ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস - ১৭ই মার্চ উপলক্ষে কবিতা ও বক্তব্য
১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস
প্রতি বছর মার্চ মাসের ১৭ তারিখ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। একই সাথে পালন করা হয় জাতীয় শিশু দিবসও । এই বছরো সারাদেশে পালিত হবে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বলা হয় শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাই শিশুদের সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং তাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রতি বছর পালিত হয় বিশ্ব শিশু দিবস।
১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন পালন করা হয়
১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন পালন করা হয় তা অনেকেই জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলর এই অংশটি। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বা বিশ্ব শিশু দিবস পালন হলেও জাতীয় শিশু দিবস ছিল না। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রীয় ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করে ওই সময়য়ের মন্ত্রিসভা।
▶▶ আরও পড়ুন: সরকারি ভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখুন দৈনিক ৫০০ টাকা ভাতা সহকারে
১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালন শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে এ দিনটিকে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়। অবশ্য ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হারানোর পর তৎকালীন বিএনপি সরকার শিশু দিবস পালন এবং সরকারি ছুটি বাতিল করে। ফলে ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দিবসটি পালিত হয়নি। এসময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন ১৯ জানুয়ারিকে বিএনপি সরকার শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন শুরু করে।
পরবর্তী সময়ে নবম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে আবারও প্রতিবছর জাতীয় পর্যায় বড় আয়োজনের মাধ্যমেই এ দিবসকে পালন করে আসছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৭ মার্চ পালিত হয় ‘জাতীয় শিশু দিবস’। ১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দরদ ছিল অপরিসীম। শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন তিনি। তার জন্মদিনে তিনি শিশুদের সঙ্গে কাটাতে পছন্দ করতেন।
ওইদিন শিশুরা দল বেঁধে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে যেতো। এসব সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে তার জন্মদিনটাতে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রিয় বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাংলাদেশে পালিত হয় জাতীয় শিশু দিবস।
প্রিয় পাঠক, আশাকরি আপনি আর্টিকেলের এই অংশটি পড়ে জানতে পেরেছেন যে ১৭ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন পালন করা হয় সেই বিষয়ে।
[তথ্য সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন]
১৭ই মার্চ উপলক্ষে কবিতা
প্রিয় পাঠক, আজকের পোস্টের এই অংশে আমরা ১৭ মার্চ উপলক্ষে ১০ টি কবিতা শেয়ার করেছি। আপনার ছোট্ট মনি যদি ১৭ মার্চ কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে তাহলে আপনার ছোট্ট মনির জন্য এখান থেকে যে কোনো একটি কবিতা বেঁচে নিতে পারেন। আমরা এই অংশে ১০ টি জনপ্রিয় কবিতা আপনাদের জন্য তুলে ধরেছি।
০১: শিশু দিবস___ সেখ আব্দুল মান্নান
শিশু মানে মনে পড়ে
নানা কিসিম ফুল
শিশু মানেই অজান্তেতে
করে নানা ভুল।
শিশুর নামেই হচ্ছে পালন
মধুর মহান দিন
সব শিশুদের বাজছে মনে
মন মাতানো বীণ।
নানা রকম পোশাক পরে
যাবে তারা স্কুলে
শিক্ষা গুরুকে করবে বরণ
রং বেরঙের ফুলে।
শিশু দিবস মানে চাচা নেহরু
সব শিশুদের প্রিয়
নানা খুশির মাঝে সে
আজ হবে বরণীয়।
০২: বাবা__ শেখ রেহানা
জন্মদিনে প্রতিবার একটি ফুল দিয়ে
শুভেচ্ছা জানানো ছিল
আমার সবচেয়ে আনন্দ।
আর কখনো পাবো না এই সুখ
আর কখনো বলতে পারবো না
শুভ জন্মদিন।
কেন এমন হলো?
কে দেবে আমার প্রশ্নের উত্তর
কোথায় পাবো তোমায়…
যদি সন্ধ্যাতারাদের মাঝে থাকো
আকাশের দিকে তাকিয়ে বলবো
শুভ জন্মদিন।
তুমি কি মিটি মিটি জ্বলবে?
যদি বিশাল সমুদ্রের সামনে
ঢেউদের খেলার মাঝে থাকো বলবো
শুভ জন্মদিন।
সমুদ্রের গর্জনে শুনবো কি
তোমার বজ্রকণ্ঠ?
পাহাড়ের চূড়ায় যেখানে মেঘ
নীল আকাশে লুকোচুরি খেলে
তুমি কি ওখানে?
তাকিয়ে বলবো
শুভ জন্মদিন।
এক টুকরো সাদা মেঘ ভেসে যাবে
ওখানে কি তুমি?
আকাশে বাতাসে পাহাড়ে উপত্যকায়
তোমাকে খুঁজবো, ডাকবো
যে প্রতিধ্বনি হবে
ওখানে কি তুমি?
শুভ জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন।
০৩: ধন্য সেই পুরুষ__ শামসুর রাহমান
ধন্য সেই পুরুষ নদীর সাঁতার পানি থেকে যে উঠে আসে
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে;
ধন্য সেই পুরুষ, নীল পাহাড়ের চূড়া থেকে যে নেমে আসে
প্রজাপতিময় সবুজ গালিচার মত উপত্যকায়;
ধন্য সেই পুরুষ হৈমন্তিক বিল থেকে যে উঠে আসে
রঙ বেরঙের পাখি ওড়াতে ওড়াতে।
ধন্য সেই পুরুষ কাহাতের পর মই-দেয়া ক্ষেত থেকে যে ছুটে আসে
ফসলের স্বপ্ন দেখতে দেখতে।
ধন্য আমরা, দেখতে পাই দূরদিগন্ত থেকে এখনো তুমি আসো,
আর তোমারই প্রতীক্ষায়
ব্যাকুল আমাদের প্রাণ, যেন গ্রীষ্মকাতর হরিণ
জলধারার জন্যে। তোমার বুক ফুঁড়ে অহংকারের মতো
ফুটে আছে রক্তজবা, আর
আমরা সেই পুষ্পের দিকে চেয়ে থাকি, আমাদের
চোখের পলক পড়তে চায় না,
অপরাধে নত হয়ে আসে আমাদের দুঃস্বপ্নময় মাথা।
দেখ, একে একে সকলেই যাচ্ছে বিপথে অধঃপাত
মোহিনী নর্তকীর মতো
জুড়ে দিয়েছে বিবেক-ভোলানো নাচ মনীষার মিনারে,
বিশ্বস্ততা চোরা গর্ত খুঁড়ছে সুহৃদের জন্যে
সত্য খান খান হয়ে যাচ্ছে যখন তখন
কুমোরের ভাঙ্গা পাত্রের মতো,
চাটুকারদের ঠোঁটে অষ্টপ্রহর ছোটে কথার তুবড়ি,
দেখ, যে কোন ফসলের গাছ
সময়ে-অসময়ে ভরে উঠেছে শুধু মাকাল ফলে।
ঝলসে-যাওয়া ঘাসের মত শুকিয়ে যাচ্ছে মমতা
দেখ, এখানে আজ
কাক আর কোকিলের মধ্যে কোনো ভেদ নেই।
নানা ছলছুতোয়
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে চিরকাল,
গান হয়ে
নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা, যাঁর নামের ওপর
কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া,
ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পাখা মেলে দেয় জ্যোৎস্নার সারস,
ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের উপর পতাকার মতো
দুলতে থাকে স্বাধীনতা,
ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের ওপর ঝরে
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।
স্বৈরাচারের মাথায় মুকুট পরাচ্ছে ফেরেব্বাজের দল।
দেখ, প্রত্যেকটি মানুষের মাথা
তোমার হাঁটুর চেয়ে এক তিল উঁচুতে উঠতে পারছে না কিছুতেই।
তোমাকে হারিয়ে
আমরা সন্ধ্যায়, হারিয়ে যাওয়া ছায়ারই মতো হয়ে যাচ্ছিলাম,
আমাদের দিনগুলি ঢেকে যাচ্ছিল শোকের পোশাকে,
তোমার বিচ্ছেদের সংকটের দিনে
আমরা নিজেদের ধ্বংসস্তূপে বসে বিলাপে ক্রন্দনে
আকাশকে ব্যথিত করে তুললাম ক্রমাগত; তুমি সেই বিলাপকে
রূপান্তরিত করেছো জীবনের স্তুতিগানে, কেননা জেনেছি –
জীবিতের চেয়েও অধিক জীবিত তুমি।
০৪: সতেরো মার্চ__ কবি ওয়াসিফ এ খোদা
ভোরের পাখি বলল এসে
আজ একটা দিন রঙ্গিন
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন
ফুলের বাগান বলল হেসে
বন্ধুকে আজ পুষ্প দিন
টকটকে লাল গোলাপ নিন
বঙ্গসাগর হাজার নদী
শাপলা ফোটা ঝিল অবধি
জাগল সাড়া ভালোবেসে
ছড়িয়ে গেল বাংলাদেশে
হাসি খুশি এ মিলনমেলা
রোদ বৃষ্টি সারাবেলা
কি আনন্দ নৃত্যকৃত
হোক প্রতিক্ষণ আলোকিত”
০৫: তোমার জন্মে ধন্য মাতৃভূমি__ সুমন বনিক
তোমার ডাকে অস্ত্র হাতে করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধ
স্বাধীনতার পরশ পেয়ে তাই হলাম পরিশুদ্ধ।
পরাধীনতার শিকল ভেঙে উন্নীত করি বিজয়ের শির
সারাবিশ্ব বিস্ময়ের চোখে দেখে এ জাতি বীর।
তুমি বাঙালির ইতিহাসের পাতায় সেই অমর মহাকাব্য
তুমি নাই তাই আজি মধুমতি হারায় নাব্য।
বীর বাঙালির হৃদয় তুমি রাজনীতির মহাকবি
পতাকার অই লাল সূর্যটায় তুমি আছো উজ্জ্বল ছবি।
মুক্ত আকাশ সূর্যের মতো দীপ্তি ছড়াও সেই তুমি
তোমার জন্মে ধন্য আমরা ধন্য এই মাতৃভুমি।
০৬: মুজিব নামে__ কবির কাঞ্চন
জিব নামেই হৃদয় মাঝে ভেসে আসে সুর
সকল দেশের সেরা বলে লাগে সুমধুর।
অত্যাচারী হানাদারের করতে পরাজয়
মুজিব নামেই বুকের ভেতর রক্তধারা বয়।
মুজিব নামেই বিশ্ব মাঝে বীরের পরিচয়
রক্ত দিয়ে আদায় করে বাংলাদেশের জয়।
শোধ হবে না কোনোদিনও তাঁর ত্যাগেরই দাম
মুজিব নামেই মিশে আছে বাংলাদেশের নাম।
মুজিব নামেই দেশের মানুষ যোদ্ধা হয়ে যায়
স্বাধীন দেশে ঘুরেফিরে স্বস্তি ফিরে পায়।
সোনার বাংলা গড়তে হলে করতে হবে কাজ
মুজিব নামেই জাগতে হবে ভেঙে সকল লাজ।
০৭; ছোট্ট জীবন (শিশু দিবস উপলক্ষে)__ অমৃতা দে (গুপ্ত)
ছোট্টমোদের মাথা বটে,
মগজ মোটেও ছোট্ট নয়
চক্ষু দুটি ছোট্ট হলেও,
দৃষ্টি কিন্তু সুদূরে ধায়
বিশ্বকোষের জ্ঞানভাণ্ডার,
বয়ে চলি ছোট্ট পিঠে
বড়দেরও হারাতে পারি,
যদি ছোট্ট মুখে বুলি ফোটে
রামধনু রঙে আকাশ গড়ি,
স্বপ্ন মেঘের তুলি দিয়ে
অজানারে জানতে চেয়ে,
ছুটছে এ মন টগবগিয়ে
বিশ্বকে মোরা ধরতে পারি,
ছোট্ট হাতের ছোট্ট মুঠোয়
মানবজাতিকে বাঁধতে পারি,
ভালোবাসার সূক্ষ্ম সুতোয়
ভবিষ্যতের গর্ব মোরা,
অবহেলার যোগ্য নয়
ছোট্ট দু’পায়েই ইচ্ছে হলে,
করতে পারি বিশ্বজয়
০৮: মুজিব___ মজনু মিয়া
তুমি ছিলে তুমি রবে
শেখ মুজিবুর রহমান,
তোমার কৃতি তোমার স্মৃতি
চিরদিনি বহমান।
আগস্ট এলে শোকের দু’চোখ
ব্যথার জলে যায় ভরে,
তোমার গড়া বাংলাদেশে
শোক পতাকায় জল ধরে।
অমর অবিস্মরণীয়
জাতীয় নেতা তুমি,
বিশ্ব মাঝে উজ্জ্বল তুমি
উজ্জ্বল এই জন্মভূমি।
০৯: শিশু দিবস___ সেখ আব্দুল মান্নান
শিশু মানে মনে পড়ে
নানা কিসিম ফুল
শিশু মানেই অজান্তেতে
করে নানা ভুল।
শিশুর নামেই হচ্ছে পালন
মধুর মহান দিন
সব শিশুদের বাজছে মনে
মন মাতানো বীণ।
নানা রকম পোশাক পরে
যাবে তারা স্কুলে
শিক্ষা গুরুকে করবে বরণ
রং বেরঙের ফুলে।
শিশু দিবস মানে চাচা নেহরু
সব শিশুদের প্রিয়
নানা খুশির মাঝে সে
আজ হবে বরণীয়।
১০: শিশু দিবস কবি___ সামিয়া আক্তার
সতেরো মার্চ শিশু দিবস
যত্নে তাদের রাখি—
আদম হাওয়ার ধরায় তারা
কিচিরমিচির —পাখি।
ফুল বাগানে ফুল যে ছাড়া
দেখায় যেমন শূন্য—-
শিশুবিহীন ঘরটা তাই তো
হয় না পরিপূর্ণ।
শিশু দিবস হোক না পালন
শৈশব রঙিন করে—
পথশিশু শব্দটি মুছে
থাকুক আপন—ঘরে।
সুন্দর সমাজ গড়তে হলে
দিতে হবে শিক্ষা—
আজকের শিশু আগামীতে
দেশকে দিবে—দীক্ষা।
শিক্ষার আলোয় প্রতিটি শিশু
হবে জাতির দিশা—
তাঁদের ছোঁয়ায় কাটবে সকল
কালো অমানিশা।।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বক্তব্য
প্রিয় পাঠক, নিচে আমরা ১৭ মার্চের জন্য দুটি বক্তব্য উপস্থাপন করছে। এই দুইটি বক্তব্য থেকে আপনি যে কোনো একটি বেঁচে নিতে পারেন কিংবা আপনি স্কিপ্ট গুলো পড়ে নিজের মত করে গুছিয়ে নিতে পারবেন।
বক্তব্য ১:
আমি আমার বক্তব্যের শুরুতেই আজকের অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি এবং মঞ্চের সম্মুখে উপবিষ্ট সম্মানিত সুধীজন সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা........
সেদিন ছিল মঙ্গলবার। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। রাত ৮ টার দিকে মা সায়েরা খাতুনের কোল আলোকিত করে আসেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে ডুবে থাকা বাঙালি জাতির মুক্তির দূত হয়ে পৃথিবীতে আসেন একটি শিশু।
সেদিনের সেই শিশুই আজ অবিসংবাদিত নেতা বাঙালি ও বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ সেই মহানায়কের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। শুভ জন্মদিন জাতির পিতা। আজ বাঙালি জাতির আনন্দে পুলকিত হওয়ার দিন।
মুক্তিযুদ্ধের এই মহা নায়ক ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকালে খোকা নামে পরিচিত সেই শিশুটি পরবর্তী সময়ে হয়ে উঠেন নির্যাতিত - নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিশোর বয়সেই সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবার কারাবরণ করেন।
৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৮ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তাঁর কর্ম ও আদর্শ চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। বঙ্গবন্ধু কেবল বাঙালি জাতির নন, তিনি বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক ও মুক্তির দূত।
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোরদের অসম্ভব ভালোবাসতেন। সংগ্রামী এই নেতা ছিলেন শিশুর মতো কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তাঁর বুক ভরা ছিলো সমুদ্র সমান ভালোবাসা।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি তাই একদিকে যেমন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বৃহত্তম দিন, তেমনি অন্যদিকে শিশু কিশোরদের আনন্দের দিন।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশুরাই। আসুন, দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব শিশুদের কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করি। সবাই মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী - সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি। আজকের দিনে এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।
প্রিয় সুধী, আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি বিখ্যাত কবি সৈয়দ শামসুল হকের আমার পরিচয় কবিতার কিছু অংশ পাঠ করে। পরিচয়ে আমি বাঙালি, আমার আছে ইতিহাস গর্বের - কখনোই ভয় করিনাকো আমি উদ্যত কোনো খড়গের। শত্রুর সাথে লড়াই করেছি, স্বপ্নের সাথে বাস; অস্ত্রেও শান দিয়েছি যেমন শস্য করেছি চাষ; একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পরেছি ফাঁস;
আপোষ করিনি কখনোই আমি এই হলো ইতিহাস। এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান? যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান; তারই ইতিহাস প্রেরণায় আমি বাংলায় পথ চলি; চোখে নীলাকাশ, বুকে বিশ্বাস পায়ে উর্বর পলি। [তথ্য সূত্রঃ আনিসুল ইসলাম ইউটিউব চ্যানেল]
বক্তব্য ২:
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, শিক্ষক - শিক্ষিকা, ছাত্র -ছাত্রী ও উপস্থিত সম্মানিত সুধী, আসসালামু-য়ালাইকুম...........
আজকের এই দিনে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি অত্যন্ত মানবদরদী ও অধিকার আদায়ে আপোসহীন ছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী পরিলক্ষিত হয়।
ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রতিবাদী। অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করতেন না। তার প্রমাণ পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমানের কথা থেকেই। দেশের ক্রান্তিলগ্নে বঙ্গবন্ধু যখন লড়ে যাচ্ছিলেন তখন এক সাক্ষাৎকারে শেখ লুৎফর রহমান বলেছিলেন, সে তো ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী, অন্যায় সহ্য করতো না। কোথাও তা দেখলে প্রতিবাদ করত।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, গরিব - দুঃখী মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের দুঃখ দূর করার প্রতিজ্ঞা পরবর্তীতে তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন সহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধীকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি।
এ জন্য থাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তবু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপোস করেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। ঐতিহাসিক ভাষণটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ৭ মার্চের সেই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
২৬ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন - সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ৩ রা নভেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামানসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে
তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। তবে এখন আনন্দের বিষয় হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও নিরলস পরিশ্রমের কারনে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করেছে। আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি
প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন, তাতে আগামী ২০৪১ সাল নয়, তার আগেই উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাস্তবায়নে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা সম্পর্কে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আমি সকলকে কাঙ্খিত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা ১৭ মার্চ উপলক্ষে কবিতা ও বক্তব্য তুলে ধরেছি। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন এবং আপনার মন্তব্যটি আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আর হ্যাঁ এই রকম আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইটে ধন্যবাদ সবাইকে।
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url