আকিদা বলতে কি বুঝায় - ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য জানুন

প্রিয় পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হচ্ছে আকিদা কি, আকিদা বলতে কি বুঝায় এবং ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য নিয়ে। তাই আপনি যদি আকিদা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আমাদের আজকের সম্পূর্ণ পোস্টটি ধৈর্য্য সহকারে পড়ুন।

ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য

কেননা আজকের পোস্টে আমরা আকিদা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। পরিভাষায় আকিদা হচ্ছে, এমন সব দ্বিনি বিষয়াদির সমষ্টি, যার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য। এমন সুদৃঢ় বিশ্বাস, যাতে সন্দেহের অন্ত নেই। বিশুদ্ধ আকিদা ঈমানের অপরিহার্য বিষয়। প্রিয় পাঠক চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা আমাদের মূল আলোচনায় চলে যায়। 

পোস্ট সূচিপত্র

আকিদাহ এর পরিচিতি

কিদা ( আরবি: العقيدة–আল্-আকিদাহ ; বহুবচন: العقائد–আল-আকা'ইদ ), যা ইসলামি ধর্মতত্ত্ব নামেও পরিচিত।আকিদা হল এমন একটি ইসলামি পরিভাষা, যার অর্থ 'কিছু মূল ভিত্তির উপর বিশ্বাস স্থাপন'। বিশ্বাস বা ধর্মবিশ্বাস বুঝাতে মুসলিম সমাজে সাধারণত দুইটি শব্দ ব্যবহৃত হয়: ঈমান ও আকিদা। তবে কুরআন ও সহীহ হাদীসে সর্বদা 'ঈমান' শব্দটিই ব্যবহার করা হয়েছে। "আকিদা" ব্যবহৃত হয়নি। হিজরি দ্বিতীয় শতক থেকে তাবেয়ীগণ (সাহাবীদের ছাত্র) ও পরবর্তী যুগের ঈমামগণ (ধর্মীয় বিশ্লেষক ) ধর্মবিশ্বাসের খুঁটিনাটি বিষয় আলোচনার জন্যে "ঈমান" ছাড়াও আরো কিছু পরিভাষা ব্যবহার শুরু করেন। এসকল পরিভাষার মধ্যে রয়েছে 'আল-ফিকহুল আকবার', 'ইলমুত তাওহীদ', 'আস–সুন্নাহ', 'আশ-শরীয়াহ', 'উসূলুদ্দীন', 'আল-আক্বীদাহ' ইত্যাদি। এসবের মধ্যে 'আকিদাহ' শব্দটিই অধিক প্রচলিত।

ইসলামের সকল বিধিনিষেধ মেনে চলা এবং মনে প্রানে বিশ্বাস করা, বিনা বাক্যে মেনে নেওয়া, এই ক্ষেত্রে মনে কোনো ধরনের মোনাফেকির স্থান না দেওয়াই হচ্ছে আকিদা। মানুষ যে কথাটি মুখে বলে এবং তা যদি সে মনে প্রানে বিশ্বাস করে তাহলে সেটিই হচ্ছে তার আকিদা।

আকিদার মৌলিক বিষয় গুলো ও কি কি

আকিদার মৌলিক বিষয়গুলো বলতে বলা হয়েছে ঈমান নিয়ে। ঈমানের ছয়টি দিক দেখা দেয়। যেমন—আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, রাসুল (সা.)-এর প্রতি বিশ্বাস , আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস , কিতাবের প্রতি বিশ্বাস ,ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস এবং তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস । এছাড়াও আরো রয়েছে অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস , আল্লাহর একত্ববাদ, মহত্ত্ব এবং তার গুণাবলী ও ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস, তার নির্দেশিত পথে নবী রাসূলগনের জীবনের মত পরিচালনা করা, কুফরি বাতিল বা অসত্য হওয়ার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন, ইসলামে অবিশ্বাসী ও আল্লাহর সাথে অপরকে শরীককারী সকলের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন, আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হওয়া, তাঁকে দেখা ও হাশরের মাঠে তাঁর পুরস্কার ও পরিণতির প্রতি বিশ্বাস রাখাও আকিদার অন্তর্ভুক্ত।এগুলোতে যদি কেউ অবিশ্বাস করে, তাহলে সে ব্যক্তি কাফের। 

ইসলামে আকিদার গুরুত্ব

পরিভাষায় আকিদা হচ্ছে, এমন সব দ্বিনি বিষয়াদির সমষ্টি, যার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য। এমন সুদৃঢ় বিশ্বাস, যাতে সন্দেহের অন্ত নেই। বিশুদ্ধ আকিদা ঈমানের অপরিহার্য বিষয়। যার দ্বারা মানুষের ঈমানকে পরিপূর্ণ করা হয়। ইসলামের এই সুবিশাল অট্টালিকার মত আকিদা নামক সুদৃঢ় স্তম্ভের ওপর স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।সঠিক ইসলামী আকীদা দিয়েই আল্লাহ তা‘আলা রসূলগণকে পাঠিয়েছেন, কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন এবং সমস্ত জিন-ইনসানের উপর এটি কবুল করে নেয়াকে আবশ্যক করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

‎﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ مَا أُرِيدُ مِنْهُمْ مِنْ رِزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَنْ يُطْعِمُونِ (৫৭) إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ﴾

‘‘আমি জিন এবং মানুষকে একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে কোন রিযিক চাই না কিংবা তারা আমাকে খাওয়াবে তাও চাই না। আল্লাহ নিজেই রিযিকদাতা এবং প্রবল শক্তিধর ও পরাক্রমশালী’’। (সূরা আয যারিয়াত: ৫৬-৫৮)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,﴿وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا﴾

‘‘তোমার রব এ ফায়ছালা দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া তোমরা অন্য কারো ইবাদত করো না। আর মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করো’’। (সূরা বানী ইসরাঈল: ২৩)

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

‎﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾

‘‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রসূল পাঠিয়েছি। তার মাধ্যমে এ নির্দেশ দিয়েছি যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো আর তাগুতকে বর্জন করো’’। (সূরা আন-নাহাল: ৩৬)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

‎﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾

‘‘যে ব্যক্তি ‘তাগুতকে’[1] অস্বীকার করে এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, সে ধারণ করে নেয় সুদৃঢ় হাতল, যা বিচ্ছিন্ন হবার নয়। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’’। (সূরা আল বাকারা: ২৫৬)

সূরা হাজ্জের ৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

‎﴿ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِ الْبَاطِلُ﴾

 ‘‘আল্লাহই সত্য; আর তার পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা বাতিল’’।

সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত লোকের পরিণাম জাহান্নামের দিকেই হবে। তা কতই না নিকৃষ্ট বাসস্থান।

[1]. মোটকথা তাগুতকে অস্বীকার না করা পর্যন্ত কারো ইসলাম পরিশুদ্ধ হবে না। কালেমায়ে তায়্যেবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর মর্মার্থ এটিই। সুতরাং لاإله এই কথার মাধ্যমে প্রত্যেক ঐ তাগুতকে অস্বীকার করা হয়েছে, আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদত করা হয়। আর إلا الله কালেমার এ অংশের মাধ্যমে কেবল আল্লাহর একত্ব সাব্যস্ত করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

‎﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾

  ‘‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি। তার মাধ্যমে এ নির্দেশ দিয়েছি যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, আর তাগুতকে বর্জন করো’’ (সূরা আন নাহাল: ৩৬) ।

আল্লাহ তা‘আলা মূসা আলাইহিস সালামকে লক্ষ্য করে বলেছেন,

‎﴾ اذْهَبْ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى ﴿

‘‘এখন তুমি যাও ফেরাউনের কাছে। কেননা সে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে’’। (সূরা ত্বহা: ২৪) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

‎﴿إِنَّا لَمَّا طَغَى الْمَاءُ حَمَلْنَاكُمْ فِي الْجَارِيَةِ﴾

‘‘যে সময় পানির তুফান সীমাঅতিক্রম করলো তখন আমি তোমাদেরকে জাহাজে আরোহন করিয়েছিলাম’’। (সূরা আল হাক্কাহ: ১১) অর্থাৎ পানি যখন অত্যন্ত বেড়ে গেল। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

‎﴾  فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا بِالطَّاغِيَةِ ﴿

‘‘তাই সামূদ জাতিকে একটি সীমাহীন বিপদ দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে’’। (সূরা আলহাক্কাহ: ৫)

সমস্ত রসূলই এ সহীহ আকীদার দাওয়াত নিয়ে এসেছেন। সমস্ত আসমানী কিতাবই এ সহীহ আকীদার বিশদ বিবরণ দেয়ার জন্য নাযিল হয়েছে এবং এটাকে ভঙ্গকারী অথবা এটাকে ত্রুটিযুক্তকারী বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্যই অবতীর্ণ হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক মানুষকেই তা গ্রহণ করার আদেশ করা হয়েছে।সুতরাং আকীদার বিষয়টি যেহেতু এত মর্যাদাবান ও গুরুত্বপূর্ণ, তাই সর্বপ্রথম এর প্রতি গুরুত্ব দেয়া, এ নিয়ে গবেষণা করা এবং এর জ্ঞান অর্জন করা জরুরী। কেননা এ পরিশুদ্ধ আকীদার উপরই মানুষের ইহ-পরকালীন সৌভাগ্য নির্ভর করে। 

অর্থাৎ যে ব্যক্তি এ সঠিক আকীদা থেকে হাত গুটিয়ে নিবে, সে এ বিষয়ে নিজস্ব খেয়াল-খুশী ও বাতিল ধারণার দিকে ধাবিত হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে সে তার সামনে বাতিল ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাবে না। সুতরাং আল্লাহর ইবাদতকে একটি বিষয় হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তাগুতের ইবাদতকে অন্য একটি বিষয় হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং একজন মানুষ কেবল তখনই মুসলিম বলে গণ্য হবে, যখন সে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং একই সাথে তাগুত থেকে দূরে থাকবে।

পরিশেষে বলা যায় ইসলামের আকিদা একজন মুমিনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যার দ্বারা আমরা আমাদের ঈমান কে মজবুত ও আরো শক্তিশালী করে তুলতে পারব।

ইসলামি আকিদার মূলনীতি

পৃথিবীতে অনেক গুলো ধর্ম রয়েছে, তার মধ্যে একটি অন্যতম ধর্ম হল ইসলাম। প্রতিটি ধর্মের আলাদা আলাদা মূলনীতি রয়েছে তেমনি আমাদের  ইসলাম ধর্মেও কতোগুলো মূলনীতি রয়েছে। আমরা যারা ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস করি তাদের সকলের এই মূলনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখা আবশ্যক। ইসলামী আকিদার মূলনীতি মোট ছয়টি যেগুলোকে আমরা ঈমানের অংশ হিসাবে চিনি সেগুলো হল:-

1. আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস। ( আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয় )

2. ফেরেশতাগণের ওপর বিশ্বাস। ( অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস )

3. আসমানী কিতাব সমূহের ওপর বিশ্বাস। ( নবী ও রাসূলগনের ওপর প্রেরণ করা হয়েছিল সেগুলোর ওপর বিশ্বাস)

4. নবী রাসূলগণের ওপর বিশ্বাস। ( মানুষের হেদায়েতের জন্য প্রেরিত )

5. আখেরাতের ওপর বিশ্বাস। ( মৃত্যুর পরবর্তী জীবন যার কোনো শেষ নাই )

6. তাকদীরের ভালো ও মন্দের ওপর বিশ্বাস। ( নিজের ভাগ্যের উপর বিশ্বাস )

ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য

ঈমান

ইমান অর্থ বিশ্বাস করা, আস্থা স্থাপন, স্বীকৃতি দেয়া, নির্ভর করা, মেনে নেয়া। তবে শুধু বিশ্বাসই ইমান নয়; বরং বিশ্বাসের সাথে মুখে স্বীকার করা এবং কাজে পরিণত করার সমন্বিত নাম হলো ইমান ৷ ইমানের দিক ৩টি- ১. অন্তরে বিশ্বাস, ২. মুখে স্বীকার, ৩. কাজে পরিণত। এ তিনটি দিককে দুইভাগে ভাগ করা যায়-

ইমানের দাবী হলো দুটি। অর্থাৎ যিনি ইমান রাখেন তাকে মুমিন বলা হয়। নিজেকে মুমিন বলে পরিচয় দিতে হলে নিম্নোক্ত দুটি দাবী পূরণ করা জরুরী।

১. আকাঈদ : এটি হলো বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত বিষয়াদি । তথা আল্লাহ, নবী-রাসূল, তাকদীর, জান্নাত-জাহান্নাম ইত্যাদির উপর বিশ্বাস। এ বিষয়গুলো কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ।

২. ইবাদাত : ইমানের বাস্তবায়ন হলো ইবাদাত। এগুলো হলো নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি ।

ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং তদনুযায়ী আমল করাকে ইমান বলে ।

ইমানের মৌলিক বিষয় ৭টি- আল্লাহ, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, নবী-রাসূল, পরকাল, ভাগ্য, পুনরুত্থান। ইমানের ৭টি বিষয়ে অন্তরে বিশ্বাস ও মুখে স্বীকারের পাশাপাশি কাজে পরিণত করতে হবে। যেমন- নামায না পড়লে জাহান্নামে যাবো সবাই জানি কিন্তু মুমিন দাবী করেও আমরাও নামায পড়ি না তথা কাজে পরিণত করি না। ফলে ইমানে পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয় না; বরং খণ্ডিত বাস্তবায়ন হয় 


আকাঈদ

উপরে ইমানের সংজ্ঞায় আমরা জেনেছি, ইমানের তিনিটি দিক। তন্মধ্যে প্রথম দিক হলো অন্তরে বিশ্বাস। এ বিশ্বাসের পারিভাষিক নামই হলো আকাঈদ ।

আকাঈদ শব্দটি আকীদা শব্দের বহুবচন। আকীদা অর্থ- বিশ্বাস। আকাঈদ অর্থ-বিশ্বাসমালা। ব্যাপকার্থে আকিদা হলো- সম্পর্ক স্থাপন করা বা শক্তভাবে আঁকড়ে ধরা, কোন কিছুকে সাব্যস্ত করা বা শক্তিশালী হওয়া।

ধর্ম হলো বিশ্বাসের (ইমানের) সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়, এ বিশ্বাসের বাস্তব রূপায়নই হলো ইবাদাত । তাই কি কি বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী তথা মুসলিম বলা হবে তাই হলো আকীদা ।

এক কথায় ইসলামের সকল মৌলিক বিষয়াদির উপর বিশ্বাস স্থাপন করাই হলো আকাঈদ ।

এজন্যই বলা হয় আকীদা ঠিক না থাকলে মুসলিম হওয়া যায় না। তবে সামান্য বিষয় নিয়ে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতেই কারো আকীদা খারাপ তথা অমুসলিম বলা যাবে না। ইসলামে কাউকে অমুসলিম/বেঈমান ইত্যাদিতে ডাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, যতক্ষণ না সে প্রকাশ্যে ইসলাম ত্যাগ না করে।

ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য

ইমান আরবি শব্দ। আরবি ‘আমনুন’ শব্দ থেকে এর উৎপত্তি। শব্দটির মূল অর্থ বিশ্বাস করা, স্বীকৃতি দেওয়া এবং বিশ্বস্ততা বা হৃদয়ের স্থিতি। এ ছাড়া আনুগত্য করা, শান্তি, নিরাপত্তা, অবনত হওয়া এবং আস্থা অর্থেও ইমান শব্দটি ব্যবহৃত হয়। (মুয়জামুল মাকায়িসিল লুগাহ, ১/১৩৩) আকিদা( আরবি: العقيدة–আল্-আকিদাহ ; বহুবচন: العقائد–আল-আকা'ইদ ), যা ইসলামি ধর্মতত্ত্ব নামেও পরিচিত।আকিদা হল এমন একটি ইসলামি পরিভাষা, যার অর্থ 'কিছু মূল ভিত্তির উপর বিশ্বাস স্থাপন'।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইমান সম্পর্কে বলেন, ‘আর কেউ ইমান প্রত্যাখ্যান করলে তার কর্ম বিনষ্ট বা নিষ্ফল হবে এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৫)।

আরও এরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের মধ্যে রয়েছে কতক কাফির এবং কতক মুমিন। (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ২)। আবার আকিদা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন ‘আল্লাহই সত্য; আর তার পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা বাতিল’।সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত লোকের পরিণাম জাহান্নামের দিকেই হবে। তা কতই না নিকৃষ্ট বাসস্থান।আমাদের জীবন পরিচালনার জন্য ইমান এবং আকিদা এই দুটি বিষয়ের উপর পরিপূর্ণভাবে আমল করা দরকার।তাহলে আমরা প্রকৃত ইমানদার ব্যাক্তি হতে পারব।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা আকিদা বলতে কি বুঝায় এবং ঈমান ও আকিদার মধ্যে পার্থক্য নিয়ে বিস্তারিত জিনিয়েছি আপনাদের। আজকের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন এবং আপনার মন্তব্যটি আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আর, হ্যাঁ এই রকম আরও গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইট। ধন্যবাদ সবাইকে 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url