ভাবসম্প্রসারণ: তরুলতা সহজেই তরুলতা, পশুপাখি সহজেই পশুপাখি, কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় তবে মানুষ
তরুলতা সহজেই তরুলতা,পশুপাখি সহজেই পশুপাখি, কিন্তু মানুষ প্রাণপণ চেষ্টায় তবে মানুষ
মূলভাব ঃ পৃথিবীর সমস্ত জীবজগৎই প্রকৃতিগতভাবে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যা তাদের স্বাতন্ত্র্য দান করেছে। কিন্তু অন্যান্য জীবের সাথে মানুষের পার্থক্য হলো মানুষকে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হয় সাধনার দ্বারা। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানুষ নিজেকে গড়ে তোলে
সম্প্রসারিত ভাব ঃ তরুলতা, পশুপাখি প্রকৃতির সন্তান । প্রকৃতিগতভাবেই তারা জন্মায় এবং বেড়ে ওঠে। তরুলতাকে তরুলতা হয়ে ওঠার জন্য কোনোরকম চেষ্টা করতে হয় না। প্রকৃতির নিয়মেই সে চারাগাছ থেকে ধীরে ধীরে মহীরুহ কিংবা বৃহৎ লতায় পরিণত হয়। পশুপাখিও তেমনই স্বভাবগতভাবেই পশুপাখি। শাবক থেকে পূর্ণবয়স্ক পশু কিংবা পাখিতে পরিণত হতে তার কোনো সাধনা কিংবা শিক্ষার প্রয়োজন নেই । পক্ষান্তরে, প্রাণী হয়েও মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে স্বতন্ত্র তার মনুষ্যত্বের গুণে। প্রাণীর বৈশিষ্ট্যগুলো মানুষ প্রকৃতিগতভাবে লাভ করলেও, মনুষ্যত্ব নামক বৈশিষ্ট্যটি তাকে অর্জন করে নিতে হয়।
মনুষ্যত্ব মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের বড় পরিচয় আর তা অর্জন করার জন্য দরকার শিক্ষা এবং সাধনার। মনুষ্যত্ব নামক বৈশিষ্ট্যটির অভাবেই অনেক মানুষ পশুই রয়ে যায়, মানুষ হয়ে উঠতে পারে না। বলা হয়, 'প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয় কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না।' আর এ মনকে সুন্দর ও মানবিক করে তুলতে হয় প্রশিক্ষণ, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় দ্বারা, প্রকৃতিগতভাবে তা পাওয়া যায় না। মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য দরকার সাধনা, সৎ মানুষের সংস্পর্শ এবং নিজেকে ভালো মানুষরূপে গড়ে তোলার অদম্য ইচ্ছাশক্তি । তবেই মানুষ তরুলতা, পশুপাখি থেকে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব আলাদা করতে সক্ষম হবে।
মন্তব্য ঃ মানুষের পরিচয় তার মনুষ্যত্বে। তার মানবিক গুণাবলির গুণেই সে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে গর্ব করতে পারে। নতুবা পশু আর মানুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। তাই মনুষ্যত্ব অর্জনের সাধনায় সকলের ব্রত হওয়া উচিত।
সবগুলো ভাবসম্প্রসারণ একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন
সবগুলো রচনা একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url