আমার প্রিয় মানুষ আমার মা রচনা | বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা

আমার প্রিয় মানুষ আমার মা রচনা

আমার প্রিয় মানুষ : আমার মা

সূচনা ঃ 'মা' শব্দটি শোনার সাথে সাথে পরম শান্তিতে মন ভরে যায়। জগতে মায়ের চেয়ে আপন আর কেউ নেই। মায়ের স্নেহের পরশে মুহূর্তে দূর হয়ে যায় সকল দুঃখ-বেদনা। দুঃখ-তাপে, আনন্দ-বেদনায় যাঁকে সবার আগে কাছে পাওয়া যায়, তিনি মা। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে সকলের মধ্যে আমার মা-ই হচ্ছেন সবচেয়ে প্রিয়। আমার মা'কে আমি জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি।

শৈশব স্মৃতি ঃ যতদূর মনে পড়ে আমার শৈশব অবস্থায় মা আমাকে মুখে মুখে ছড়া শেখাতেন। তারপর শুরু হয় আমার লেখাপড়ার কাজ । কাগজ-পেন্সিল দিয়ে আমাকে মা লেখায় উৎসাহ দিতেন। আমি মনের খুশিতে নানারকম দাগ কেটে কেটে লেখার অভ্যাস করতাম। এমনিভাবে আমার মা-ই আমাকে লেখাপড়ার পথে অগ্রসর করিয়েছেন। স্কুলে যাতায়াতের ব্যাপারে মা ছিলেন আমার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সাথী। আজও যথারীতি পড়াশোনার ব্যাপারে সহযোগিতা ও তদারকি মায়ের নিকট হতেই পেয়ে চলেছি। তাই সহজ করে বলতে আমার মা-ই আমার সত্যিকারের শিক্ষিকা।

আরো পড়ুন ঃ আমার প্রিয় শিক্ষক রচনা

গৃহিণী রূপে ঃ আমার মা কোনো চাকরি করেন না। পরিবারের সীমিত আয়ের গণ্ডির মাঝেই তাঁর বিচরণ। সংসারকে সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সুদক্ষা গৃহিণীর প্রয়োজন অনেকখানি। এ ব্যাপারে আমার মা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। ছোট কয়েকজন কাজের মেয়ের সহায়তায় ভোরবেলার নাস্তা, টিফিন, রাতের আহার সবই মা তৈরি করে থাকেন। অতিথি আপ্যায়নে এবং ছোটখাটো উৎসবের দিনে মা বিশেষ যত্ন নিয়ে খাবার প্রস্তুত করেন। এছাড়া বাবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংরক্ষণ এবং সরবরাহ এ সবই আমার মা-ই করে থাকেন। আমার দাদা-দাদিও মাঝে মাঝে আমাদের সাথে থাকেন। তখন তাঁদের সেবা-যত্ন করা, কোনো শখের জিনিস কেনা, কোনো দর্শনীয় স্থানে বেড়ানো, কোনো আত্মীয়ের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা, এসব কাজের প্রায় সবটাই আমার মা'কেই করতে হয়।

দুঃখের সময়ে ঃ আনন্দের দিনে মা'কে যেভাবে দেখি, দুঃখের দিনে তাঁকে দেখি ভিন্ন মূর্তিতে। আমাদের অসুখ-বিসুখে মা-ই যেন বেশি দুঃখ ভোগ করেন। আহার-নিদ্রা ত্যাগ করে সারাক্ষণ আমাদের শুশ্রূষায় ব্যস্ত থাকেন তিনি। ডাক্তার ডাকা, ওষুধ আনা, পথ্য দেওয়া, সবকাজ তিনি সতর্ক দৃষ্টিতে করানোর ব্যবস্থা করেন। এমনকি সুস্থ অবস্থায়ও সময়মতো বাসায় না ফিরলে আমার মায়ের উৎকণ্ঠার অন্ত থাকে না ।

আনন্দের দিনে ঃ দুই ভাইয়ের মধ্যে আমি ছোট। আমাদের কোনো সাফল্যের সংবাদ জানতে পারলে আমার মা খুবই খুশি হন। আমার বড় ভাই যখন স্টারমার্ক পেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন, তখন আমার মা-ই বোধ করি পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন। আরেকদিনের ঘটনা, আমি যেদিন স্কুলে কবিতা আবৃত্তির প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেলাম সেদিন মায়ের আনন্দ আর ধরে না । এ ছাড়া আমার বৃত্তি লাভের সংবাদে মা তো খুশিতে মিষ্টি বিতরণের উৎসব করে ফেললেন ।

লেখাপড়ায় মায়ের সহযোগিতা ঃ আমার মা সারাদিন সাংসারিক কাজের ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও আমার লেখাপড়ার প্রতি বিশেষ যত্ন নেন। অবসর পেলেই তিনি আমার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের নোট তৈরি করে দেন। পরীক্ষায় আমি যেন ভালো ফলাফল করি, মা সবসময় সেই চেষ্টা করেন। বইপত্র গুছিয়ে রাখতে মা আমাকে সর্বদা সহযোগিতা করেন। নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়ার ব্যাপারে মা অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।

আরো পড়ুন ঃ আমার প্রিয় শখ বাগান করা রচনা

অবসর যাপন ঃ সংসারের কাজে সারাদিনই আমার মা'কে ব্যস্ত থাকতে হয়। তবে দুপুরের খাবারের পর একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে বসে বসে দৈনিক পত্রিকা পড়া তাঁর একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া গল্পের বই পড়া এবং টেলিভিশনে নাটক দেখার ব্যাপারে আমার মায়ের আগ্রহ রয়েছে প্রচুর । তিনি দু-একবছর পর পর অজানা ঐতিহাসিক স্থান পরিভ্রমণ করেন। এ সূত্রে আমিও বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে পারি।

উপসংহার ঃ বিজ্ঞজনেরা বলেন, মাতা ও মাতৃভূমি স্বর্গের চেয়েও গরিয়সী। স্বর্গ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে আমার মা যে আমার সকল সুদিনের-দুর্দিনের সাথী, উন্নতির পথে আলোকবর্তিকা তা খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারি।

সবগুলো রচনা একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
4 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Anonymous
    Anonymous May 12, 2024 at 9:45 PM

    Good

    • Anonymous
      Anonymous June 5, 2024 at 10:30 AM

      Very good paragraph

    • Anonymous
      Anonymous August 11, 2024 at 9:27 AM

      এটা ভাল

    • Anonymous
      Anonymous November 20, 2024 at 10:48 AM

      আমার অনেক ভালো গেছে কারণ আমি রচনা লিখতে পেরেছি।☺️

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url