মা বাবার প্রতি কর্তব্য রচনা | বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা
মা-বাবার প্রতি কর্তব্যবা মাতা-পিতার প্রতি কর্তব্য
সূচনা ঃ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আমাদের সবচেয়ে আপনজন আমাদের বাবা-মা। বাবা-মায়ের সঙ্গেই আমাদের রক্তের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তারাই আমাদের সবচেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়। নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে তাঁরা আমাদের লালন-পালন করেন। সুখে-দুঃখে তাঁদের কাছেই আমাদের পরম নির্ভরতা। তাই আমরা তাঁদের ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি। তাঁদের কাছে আমাদের ঋণ অপরিশোধ্য।
জীবনে মা-বাবার স্থান ঃ আমাদের জীবনে মা-বাবার স্থান সবার ওপরে। মা-সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন। মায়ের রক্ত-মাংসের উপাদানে গড়ে ওঠে সন্তানের দেহ। জন্মের পর সন্তান থাকে একান্ত অসহায়। তখন মায়ের কোমল বুকই সন্তানের পরম আশ্রয় । জন্মের পর মাতৃদুগ্ধ পান করেই সন্তান বাঁচে। মা পরম আদরে সন্তানকে লালন করেন। মা নিজে না খেয়ে তাকে খাওয়ান। সন্তানের জীবনে বাবার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ । বাবা সন্তানের আহারসামগ্রী ও দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জিনিসপত্র যোগান, কখনো কখনো বাবা-মা দুজনই এসব যোগান।
আরো পড়ুন ঃ শিষ্টাচার রচনা
সন্তান চোখের আড়ালে গেলে তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ে। সন্তানের নিরাপত্তা রক্ষায় তাঁরা থাকেন সদা সচেষ্ট। সন্তানকে মানুষ করার জন্য মা-বাবার চেষ্টা ও ত্যাগের সীমা থাকে না। অসুখে-বিসুখে রুগ্ন সন্তানের নিরলস সেবা করেন তারা। তাই আমাদের জীবনে পিতামাতার আসন অনেক মর্যাদার, অপরিসীম শ্রদ্ধার । সন্তানের সুখই মা-বাবার সুখ, সন্তানের দুঃখই মা-বাবার দুঃখ। সন্তানের গৌরবে মা-বাবা হন সবচেয়ে সুখী, সবচেয়ে আনন্দিত। অন্যদিকে, সন্তানের দুষ্কর্মে ও অপযশে সবচেয়ে মর্মাহত হন মা-বাবাই। তাই সন্তানের জীবনে মা-বাবার মতো সুহৃদ ও হিতৈষী আর নেই ৷
মা-বাবার প্রতি কর্তব্য ঃ মা-বাবার প্রতি আমাদের কর্তব্য অনেক। মা-বাবার চেয়ে শুভাকাঙ্ক্ষী এ জগতে আর কে আছে? তাই আমাদের প্রথম কর্তব্য মা-বাবার অনুগত হওয়া। তাঁদের আদেশ-উপদেশ মেনে চলা। মা-বাবা অনেক সময় আমাদের শাসন করেন। সেটা করেন আমাদের কল্যাণের কথা ভেবে। তাই মা-বাবার শাসনে ক্ষুব্ধ হওয়া উচিত নয়। মা-বাবার প্রতি আমাদের আচরণ হবে মধুর। তাঁরা দুঃখ বা কষ্ট পান এমন কোনো কাজ করা, এমন কোনো কথা বলা উচিত নয়। মা-বাবার সেবা করাও আমাদের অন্যতম কর্তব্য। তাঁরা অসুস্থ হলে তাঁদের সেবাযত্ন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বার্ধক্যে তারা যখন দুর্বল ও হীনশক্তি হয়ে পড়েন তখন হাসিমুখে তাদের সব দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেওয়া উচিত। অনেকে বলেন, পিতা-মাতার পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশ্ত ।
সন্তান যদি সুশিক্ষিত হয়, যদি সমাজে খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা অর্জন করে তবে বাবা-মার বুক আনন্দে ভরে ওঠে, গর্বে ফুলে ওঠে। সন্তান চরিত্রবান ও জ্ঞানীগুণী হলে বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল হয়। তাঁরা সুখী হন। সেজন্য সবার উচিত শিক্ষায়, কর্মে ও আচরণে সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠা। যেসব কাজ করলে বাবা-মা দুঃখ পান সেগুলো সযত্নে পরিহার করা সন্তানের কর্তব্য।
আরো পড়ুন ঃ
উপসংহার ঃ প্রত্যেক মা-বাবা সন্তানের কল্যাণ চান, মঙ্গল চান। এই সত্যটি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না। সংসারে এমন অনেকে আছে যাদের মা-বাবা নেই, তারা মা-বাবার স্নেহ-সাহচর্য থেকে বঞ্চিত হয়, কষ্ট পায়। আমরা তাদের চেয়ে অনেক সুখী। মা- বাবার সন্তুষ্টি বিধান করার ওপরই আমাদের কল্যাণ নির্ভর করে। মা-বাবাকে কোনোভাবেই দুঃখ দেওয়া উচিত নয়। তাঁদের উপযুক্ত সম্মান দেখাতে হবে। তাঁদের সুখী করতে পারলে আমরাও সুখী হব।
সবগুলো রচনা একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url