বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১৫ রচনা | বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা
বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১৫
ভূমিকা ঃ আজ থেকে বছর ২০ আগে অর্থাৎ ১৯৯৫ সালে যদি কোনো সাধারণ বাংলাদেশির কাছে প্রশ্ন করা হতো, বলুন তো বাংলাদেশের প্রিয় খেলা কোনটি? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ঐ ব্যক্তির মাথায় হয়তো ফুটবল কিংবা হা-ডু-ডু ঘুরপাক খেত। কিন্তু আজকের দিনে অর্থাৎ ২০১৫ সালে যদি কোনো বাংলাদেশিকে ঐ একই প্রশ্ন করা হয় তবে অনেকেই বলবেন ক্রিকেট। আবার কেউ কেউ বলবেন এ প্রশ্নের দরকারই বা কী? জনপ্রিয়তায় ক্রিকেটের পাশে কোনো খেলা আছে না কি?
বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা কোন মাত্রায়। যদিও ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোর ক্ষেত্রেও ঐ একই সত্য প্রযোজ্য। আর তাই ২০১৫ সালের 'ক্রিকেটের বিশ্বকাপ' বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কেননা এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সহযোগী আয়োজক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে । বাংলাদেশ তাই অপেক্ষা করছে ২০১৫ (১৪ ফেব্রুয়ারি - ২৯শে মার্চ) বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য "
▶▶ আরো পড়ুন ঃ শিক্ষকের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাস ঃ একদিনের ক্রিকেটের সবচেয়ে আভিজাত্যপূর্ণ প্রতিযোগিতা হচ্ছে 'বিশ্বকাপ ক্রিকেট'। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আসিসি) আইসিসি। প্রতি চার বছর পরপর ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাস আলোচনা শুরু করা যায় ১৯৭৫ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের মাধ্যমে। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপের দশম আসর। প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ডে। প্রথম বিশ্বকাপে অসামান্য ক্রিকেট প্রতিভার অধিকারী ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ ঘরে তোলে। এ পর্যন্ত দশটি বিশ্বকাপে বিজয়ী দলগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো -
১৯৭৫ - ওয়েস্ট ইন্ডিস, ১৯৭৯ – ওয়েস্টইন্ডিস, ১৯৮৩ – ভারত, ১৯৮৭ – অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯২ – পাকিস্তান, ১৯৯৬ - শ্রীলঙ্কা, ১৯৯৯ অস্ট্রেলিয়া, ২০০৩ - অস্ট্রেলিয়া, ২০০৭ - অস্ট্রেলিয়া, ২০১১ ভারত, ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া ।
এ পর্যন্ত ৫টি দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বিজয় লাভ করেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ বার বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৫-এর কয়েকটি দিক
- পরিচালকঃ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আসিসি) ।
- যে ধরনের ক্রিকেটঃ একদিনের আন্তর্জাতিক খেলা ।
- টুর্নামেন্ট পদ্ধতিঃ রাউন্ড রবিন ও নকআউট পদ্ধতি ।
- অংশগ্রহণকারী দেশঃ ১৪টি।
- ম্যাচ সংখ্যা ৪৯টি।
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ ICC world cup cricket
(http://icc-cricket.yahoo.net/event-and-awards/ewe/index.php)
এ ছাড়া আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে যেগুলোর বিশদ আলোচনার প্রয়োজন আছে ।
আয়োজক ঃ ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজক হিসেবে মনোনিত হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভেন্যু ছিল মেলবোর্ন (অস্ট্রেলিয়া) ও ক্রাইস্টচার্চ (নিউজিল্যান্ড)। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ও ভাল পার্কে উদ্বোধনীর মাধ্যমে এ বিশ্বকাপের শুরু হয়। গ্রুপ বিন্যাস : ১০৪টি দেশের মধ্যে স্থায়ী ক্রিকেট সদস্য দেশসহ মোট ১৪টি দল অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিটি গ্রুপে ৭টি দল রেখে অংশগ্রহণকারী দলগুলো ‘পুল-এ’ ও ‘পুল-বি' নামক দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে । গ্রুপ দুটি নিম্নরূপ –
- পুল-এঃ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড।
- পুল-বিঃ দ.আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্টইন্ডিস, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
▶▶ আরো পড়ুন ঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা | বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা
প্রতিযোগিতার ধরন ঃ ২০১৫ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ধরনও ২০১১ সালের ন্যায়। দু গ্রুপে ভাগ হয়ে যাওয়ায় প্রত্যেক গ্রুপে ৭টি করে দল ছিল। এরা প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকেই একটি করে ম্যাচ খেলে। গ্রুপ পর্বে একটি দল মোট ৬টি পরে ম্যাচ খেলতে পারে। এভাবে প্রতিটি গ্রুপ থেকে ৪টি দল বাছাই করা হয়। দু গ্রুপের ৪টি + ৪টি = ৮টি দল দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে। তখন থেকে নক আউট (পরাজিত হলে বিদায়) পদ্ধতিতে দুই সেমিফাইনালিস্ট ও অবশেষে চ্যাম্পিয়ন দল নির্ধারণ করা হয় ।
বাছাই পর্ব ঃ নিয়মানুযায়ী ICC-র পূর্ণ সদস্য দেশগুলো সরকারি বিশ্বকাপ খেলতে পারে। আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য দেশের সংখ্যা ১০টি। কিন্তু ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ১৪টি দেশ অংশ নেয়। বাকি চারটি দেশ অর্থাৎ আয়ারল্যান্ড, কানাডা, নেদারল্যান্ড ও কেনিয়া বিশ্বকাপেরবাছাই পর্ব অতিক্রম করেই এ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে। এ দেশগুলো আইসিসি-র সহযোগী সদস্য।
ভেন্যুসমূহ ঃ ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ম্যাচ সংখ্যা ৪৯টি এবং তা অনুষ্ঠিত হয় ২টি দেশের মোট ১৪টি ভেন্যুতে। তন্মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ১৪টি মাঠে ২৬টি এবং নিউল্যান্ডের ৭ শহরে ২৩টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার একটি খেলা বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়।
অর্থ পুস্কার ঃ আত্মর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল প্রতিযোগিতায় $ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার প্রদান করে। অর্থ পুরস্কারের এ সংখ্যাটি ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ও বাংলাদেশ ঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। তাই বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে একটা উন্মাদনা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কাজ করো। এবার সে উন্মাদনা যে অতীতের সকল কিছুকে ছাপিয়ে গেছে। এ ছাড়া এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ গ্রুপ-A তে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। তাই বাংলাদেশের ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে ভালো ক্রিকেট খেলে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনবে এটিই সকলের প্রত্যাশা ছিল।
▶▶ আরো পড়ুন ঃ কম্পিউটার রচনা | বাংলা ২য় পত্র প্রবন্ধ রচনা
উপসংহার ঃ ক্রিকেট আমাদের প্রাণের খেলা। এ একটি মাত্র খেলায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান অর্জনে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রীড়ালোকে তাই ক্রিকেটের অবস্থান সবার উপরে। অন্যান্য বিশ্বকাপগুলোর সফলতাকে অতিক্রম করে একটি সুন্দর বিশ্বকাপ আসরের সফল আয়োজক হতে পারলে ভারত ও শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বাংলাদেশেরও মুখ উজ্জ্বল হবে। আমরা ২০১১ সালে একটি সফল সুন্দর বিশ্বকাপ আসরের প্রত্যাশায় রইলাম।
সবগুলো রচনা একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন
সবগুলো ভাবসম্প্রসারণ একসাথে দেখতে এখানে চাপ দিন
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url