অনুচ্ছেদঃ খাদ্যে ভেজাল | বাংলা ২য় পত্র অনুচ্ছেদ রচনা
অনুচ্ছেদ সূচিপত্র ঃ
খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল বা খাদ্যে ভেজাল
উত্তর ঃ খাদ্যে ভেজাল বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত ও অন্যতম সমস্যা। সাধারণত খাদ্যে ভেজাল বলতে বোঝায় খাবারের সাথে নিম্নমানের ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মেশানো। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের লোভী মনোবৃত্তি থেকে খাবারে ভেজাল দিয়ে থাকে। এর ফলে মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবনে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে । তবে তা উপার্জন করতে হবে সৎপথে থেকে। কিন্তু সৎ ব্যবসায়ীর সংখ্যা আমাদের দেশে নগণ্য । সামান্য মুনাফার লোভে খাদ্যে ভেজাল দিয়ে মানুষের জীবনকে সংকটে ফেলে দিতে অধিকাংশের বিবেকে বাধে না। খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেয়া নিন্দনীয় ও জঘন্য অপরাধ। অথচ খাদ্যে ভেজাল এখন আমাদের দেশের একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় সব খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেয়া হয়। খাদ্যের ধরন হিসেবে ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কোনো খাদ্যে কৃত্রিম রং, ওজন বাড়াতে বালি, কাঁকর, পানি মেশানো হয় । এছাড়া ফরমালিন ও প্রিজারভেটিভের ব্যবহার ব্যাপক হারে লক্ষ করা যায়। ভেজাল খাবার খেয়ে অনেক মানুষকে অসুস্থতার পাশাপাশি মৃত্যুবরণ করতেও দেখা যায়। তাই জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে খাদ্যদ্রব্যকে ভেজালের কবল থেকে মুক্ত করতে দেশের সরকার ও সচেতন নাগরিক সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। ভেজাল এক ধরনের সামাজিক অপরাধ। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন করে তুলতে হবে। [বিঃ দ্রঃ এটি পাঞ্জেরী গাইড বই থেকে সংগ্রহীত]
আরো পড়ুন ঃ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর | বাংলা ২য় পত্র অনুচ্ছেদ রচনা
খাদ্যে ভেজাল
খাদ্য খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকে। খাঁটি খাবার খেয়ে মানুষ সুস্থ থাকে। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নির্ভেজাল খাদ্যের বিকল্প নেই। কিন্তু এই নির্ভেজাল খাদ্যসামগ্রী পাওয়াই এখন কঠিন। কারণ এমন কোনো খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যাবে না যাতে কোনো ভেজাল নেই। অধিক মুনাফার জন্য এক শ্রেণির মানুষের লোভ এখন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তা নিয়ন্ত্রণ করা দুঃসাধ্য। মানুষের মানবিক স্বভাব বদলে গেছে, তার চরিত্রের গুণগুলো লোপ পেতে চলেছে । নেতিবাচক চিন্তা-চেতনা তাকে অহরহ লোভের দিকে, অর্থ-সম্পদ লাভের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ হয়ে উঠেছে হিংস্র পশু। তাই সে অন্যের ক্ষতি করতে, অন্যের জীবননাশ করতে, অন্যকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে কোনো পরোয়া করে না। তার লক্ষ্য মানুষের জীবন নয়— তার লক্ষ্য প্রভূত অর্থ-সম্পদ অর্জন, বিলাসী জীবন-যাপনের মাধ্যমে জীবনকে উপভোগ করা। এ কারণে দ্রব্যের ওজন বৃদ্ধি করে লাভবান হওয়ার জন্য খাঁটি খাদ্যে কাঁকর-বালি ইত্যাদি মেশায়, সবজি-ফল-মাছ-মাংস তাজা রাখার জন্য মেশায় ফরমালিন, গুঁড়ো দুধে মেশায় মেলামাইন। জীবন রক্ষাকারী ওষুধে মেশায় ট্যালকম পাউডার, আটা-ময়দা ও নিম্ন মানের উপাদান। ঘিয়ের সঙ্গে পশুর চর্বি, নারকেল তেলের সঙ্গে বাদাম তেল, সরিষার সঙ্গে শিয়াল কাঁটার বীজ, চা-পাতার সঙ্গে কাঠের গুঁড়ো, মরিচ ও হলুদের গুঁড়ার সঙ্গে রঞ্জক পদার্থ, কোমল পানীয়ের সঙ্গে বিষাক্ত কার্বোক্সি মিথাইল সেলুলোজ। এসব রাসায়নিক মেশানোর ফলে সুস্থ মানুষ পেটের পীড়া, শ্বাসকষ্ট, বদহজম, ডায়রিয়া, আলসার, চর্মরোগ, ক্যান্সার, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হচ্ছে। ধীরগতিতে এসব রাসায়নিক দ্রব্য লিভার, কিডনি, হার্ট এমনকি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও হ্রাস করে অকেজো করে দেয়। এ ক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। ভেজাল রোধে কঠোর আইন করা হয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত করা হয়েছে, নানামুখী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরও লোভী মুনাফাখোর মানুষের ভেজাল-তৎপরতা কমছে না। এর জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, জনসচেতনতা সৃষ্টি ও সামাজিকভাবে ভেজাল জিনিস বয়কট করা ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই। [বিঃ দ্রঃ এটি লেকচার গাইড বই থেকে সংগ্রহীত]
আরো পড়ুন ঃ বাংলা নববর্ষ | বাংলা ২য় পত্র অনুচ্ছেদ রচনা
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url