ভাবসম্প্রসারণঃ বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

ভাবসম্প্রসারণঃ বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

ভাবসম্প্রসারণ সূচিপত্র ঃ

ভাবসম্প্রসারণ ১ম

ভাবসম্প্রসারণ ২য়

বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

মূলভাব ঃ সৌন্দর্য প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক ও অবিচ্ছিন্ন উপাদান। সৌন্দর্য কীভাবে এবং কোথায় বিশিষ্টতা অর্জন করবে তা প্রকৃতিই নির্ধারণ করে দেয়। এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটলে সৌন্দর্য তার সুষমা হারায়।

সম্প্রসারিত ভাব ঃ প্রত্যেকটি বস্তু ও প্রাণীই আপন অস্তিত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পরিবেশে নিজের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে । যথাস্থানেই তাকে সুন্দর ও মানানসই লাগে। যেমন- বন্য প্রাণীর স্বভাব, আচরণ স্বাভাবিক চরিত্র হিসেবে বনের মধ্যেই সুন্দরভাবে বিকাশ লাভ করে থাকে। কিন্তু তারা যদি সভ্যতার আলোকে আলোকিত শহরের চিড়িয়াখানাতে বন্দি হয়, তবে তাদের প্রকৃত বুনো সৌন্দর্যটাই ম্লান হয়ে যায় এবং অনেকটা প্রাণহীন ও নির্জীব হয়ে পড়ে। মাতৃকোলে শিশুর সৌন্দর্য যত স্বাভাবিক ও সংগত অন্য কারো কোলে ততটা নয়। 

এজন্য অনেক বড় বড় শিল্পী মা ও শিশুর ছবি এঁকেছেন যেখানে শিশুকে মাতৃক্রোড়েই দেখানো হয়েছে। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এবং পাবলো পিকাসো ছাড়াও আরো অনেক ক্লাসিক্যাল ও আধুনিক শিল্পী শিশুকে মাতৃক্রোড়েই স্থান দিয়েছেন। শিশুর জন্য তার মায়ের কোলই হচ্ছে উপযুক্ত মানানসই জায়গা। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কাজেই প্রাকৃতিক নিয়মে যে যেখানে সুন্দর, তাকে সেখানেই থাকতে দেওয়া উচিত। সেখানেই তার মুক্তি, সেখানেই তার সহজ, সাবলীল ও স্বাধীন সুন্দর জীবন। তাই প্রাজ্ঞজনেরা বলেন, 'যার যেখানে স্থান তাকে সেখানে থাকতে দাও কেননা যে যেখানে যে পরিবেশে প্রতিপালিত হয়, তাকে সেখানেই সুন্দর মানায়।

আরো পড়ুন ঃ প্রয়োজন ব্যতীত বন্ধু ও শত্রু চেনা যায় না

মন্তব্য ঃ অনুকূল পরিবেশই সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে। প্রতিটি সৌন্দর্যেরই একটা নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট স্থান এবং পরিবেশেই সে যথার্থ বিকাশ লাভ করে; অন্যত্র নয়। [বিঃ দ্রঃ এটি পাঞ্জেরী গাইড বই থেকে সংগ্রহীত]

বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

ভাব-সম্প্রসারণ ঃ রহস্যময় প্রকৃতির প্রতিটি বিষয় সুনির্ধারিত। প্রকৃতি প্রদত্ত যে বিধান তাই সুন্দর, তাই মনোরম, তাই সত্য, তাই শাশ্বত।' এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটলেই সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। যার পরিণাম সত্যিই ভয়াবহ । সৃষ্টিকর্তা জগৎ সৃষ্টি করে পরিবেশ অনুযায়ী জীব সৃষ্টি করেছেন এবং যাকে যেখানে শোভা পায় সেখানেই স্থাপন করেছেন। পশুপাখি বনে বাস করে। বনের বুকে তারা মুক্ত জীবনযাপন করে, স্বচ্ছন্দে বিহার করে। তাদের সে স্বাভাবিকতা লোকালয়ে আসলে আর থাকে না। স্বাভাবিকতা হারালে সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। যে সকল মানুষ বনজঙ্গলে বসবাস করে তারা বর্বর; শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত বলে চালচলনে তারা অনেকটা হিংস্র প্রকৃতির হয়। 

তাদের মার্জিত রুচিবোধ নেই। তারা প্রায় নগ্ন অবস্থায় থাকে। সভ্য সমাজের রুচিবোধের সাথে তাদের রুচিবোধের রয়েছে দুস্তর ব্যবধান। তারা যদি হঠাৎ করে শহরে চলে আসে তাহলে তা শহুরে মানুষের নিকট বেমানান ঠেকবে তেমনি বন্য মানুষের নিকটও এটি অস্বস্তির কারণ হবে । বনের পশুপাখির বেলায় লোকালয়ে রেখে যতই আদর যত্ন করে পোষা হউক না কেন, এতে সে তৃপ্ত নয়। সে চায় যথেচ্ছ ঘুরে বেড়াতে। লোকালয় এদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতেও প্রতিবন্ধকস্বরূপ। বন্য জীবজন্তুর বন্য রূপের সাথে পরিচিত হতে পারা যায় শুধু বনেই ।

আরো পড়ুন ঃ পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর

বনেই এদের যথার্থ স্থান এবং সেখানেই তাদের সকল সৌন্দর্য মূর্ত হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করলে প্রতিটি প্রাণী সংকুচিত, ভীত ও বেদনায় নুয়ে পড়ে। পরিবেশ অনুযায়ী প্রতিটি প্রাণীই দেখতে সুন্দর। বন্যেরা বনেই সুন্দর আর শিশুরা মায়ের কোলে । জীবজগতের প্রতিটি প্রাণীরই একটি নিজস্ব জগৎ আছে। সে জগতেই সে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। অন্যথা হলে জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় । [বিঃ দ্রঃ এটি লেকচার গাইড বই থেকে সংগ্রহীত]

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url