ভাবসম্প্রসারণঃ প্রয়োজন ব্যতীত বন্ধু ও শত্রু চেনা যায় না
প্রয়োজন ব্যতীত বন্ধু ও শত্রু চেনা যায় না
মূলভাব ঃ পৃথিবীতে কে শত্রু আর কে মিত্র তা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে উপলব্ধি করা যায় না। কেবল প্রয়োজনের সময় কিংবা বিপদের মুহূর্তে সত্যিকারের শত্রু-মিত্র চেনা যায়।
সম্প্রসারিত ভাব ঃ মানুষ একা বাস করতে পারে না। মিলেমিশে বাস করাই তার ধর্ম। আর এই মিলেমিশে বসবাসের সূত্রে আত্মীয়তা সম্পর্কের বাইরেও মানুষের সঙ্গে মানুষের নানারকম সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে মধুর ও পবিত্র সম্পর্ক হচ্ছে বন্ধুত্ব। কারণ মানুষ তার সুখ-দুঃখের কথা তার বন্ধুর নিকট অকপটে ব্যক্ত করে। আবার মানুষ তার বন্ধুর বিপদে-আপদে সবার আগে এগিয়ে আসে, বিপদে প্রবোধ দেয় এবং আশার বাণী শোনায়, আর সুখের মুহূর্তগুলোকে ভাগাভাগি করে উপভোগ করে। অন্যদিকে, ব্যক্তিগত মতপার্থক্য, স্বার্থের আকর্ষণ কিংবা টাকা-পায়সা বা জায়গা-সম্পদের বিরোধের কারণে পরস্পরের মধ্যে শত্রুতার ভাব জন্ম নেয়।
শত্রুরা চায় সবসময় মানুষের ক্ষতি করে বেড়াতে। কিন্তু প্রকৃত বন্ধু ও শত্রু চেনা বড়ই দায়। বিপদে না পড়লে বন্ধু ও শত্রু চেনা যায় না। যেমন— যাকে আপাতদৃষ্টিতে বন্ধু ভাবা হয় বিপদের মুহূর্তে সে হয়তো মানুষের কোনো কাজেই আসে না। বরং বন্ধুকে বিপদের মধ্যে ফেলে সে কেটে পড়ে। আবার অনেক বন্ধুরূপী শত্ৰু গোপনে গোপনে হয়তো এমন শত্রুতা করে বসে যা মানুষকে মহাবিপদে ফেলে দেয়। আবার অনেক সময় যাদের শত্রু বলে বিবেচনা করা হয় তারা হয়তো বিপদের সময় পূর্বশত্রুতার কথা ভুলে গিয়ে শত্রুর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
আরো পড়ুন ঃ পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা কর
পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম বহু প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন— মক্কার ইহুদিরা ইসলামের শেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহম্মদ (স.)-এর যে ক্ষতিসাধন করেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিসাধন করেছে মুসলমান নামধারী মোনাফেকরা। সুতরাং, প্রয়োজনের সময়ই কেবল সত্যিকার বন্ধুত্বের পরিচয় লাভ করা সম্ভব।
মন্তব্য ঃ বিপদের সময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। আর যে বন্ধু বন্ধুর বিপদে নিজেকে গুটিয়ে রাখে, সে বন্ধুরূপী শত্ৰু । [বিঃ দ্রঃ এটি পাঞ্জেরী গাইড বই থেকে সংগ্রহীত]
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url