শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র - গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আপনি কি শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র জানতে আগ্রহী? তাহলে আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। শ্রী কৃষ্ণ হলেন সনাতন ধর্মের পরম পুরুষোত্তম ভগবান। পুরাণ অনুযায়ী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হলেন বিষ্ণুর অষ্টমতম অবতার। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং তিনি ভগবদগীতা এর প্রবর্তক। কৃষ্ণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে কালো বা ঘন নীল। সুতরাং আজকে আমরা ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র এবং সেই মন্ত্রের বাংলা অর্থ সহ নিয়ে আলোচনা করব
সেই সাথে আরও আলোচনা করব গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার নিয়ম, রাধা কৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র, শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র, শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্র, কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র, কৃষ্ণ মন্ত্র জপ, রাতে ঘুমানোর আগে কৃষ্ণ মন্ত্র ইত্যাদি বিষয় নিয়েও। তাই আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য অনেক ইনফরমেটিভ। তাহলে, চলুন জেনে নেই ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র বাংলা অর্থ সহকারে
পোস্ট সূচিপত্রঃ আপনি যে স্থান থেকে পড়তে চান সেখানে চাপ দিন
শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র
প্রিয় পাঠক আপনি শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র বাংলা অর্থ সহ জানতে চাইলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কারণ আজকের এই পোস্টে আমরা শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র এবং সেই প্রনাম মন্ত্রের বাংলা অর্থ সহ বিস্তারিত আলোচনা করব। কৃষ্ণ হলেন সনাতন ধর্মের পরম পুরুষোত্তম ভগবান। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ হলেন বিষ্ণুর অষ্টমতম অবতার।
আরো পড়ুন ঃ ইসকন একাদশী তালিকা ২০২৩ - একাদশী তালিকা ২০২৩ বৈষ্ণব মতে
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে সকল বিপদ থেকে রাক্ষা পাওয়া যায়। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাঁর ভক্তদের সবসময় সঠিক পথের এবং সত্যের মার্গ প্রদর্শন করিয়ে থাকেন। প্রতিদিন স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্রটি জপ করার মাধ্যমে শ্রী কৃষ্ণের আরোগ্য লাভ করা যায়। শ্রী কৃষ্ণ হলেন সয়ং ভগবানের রূপ। তাই আজকে আমরা ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্রটি বাংলা অর্থ সহকারে জানব
শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র বাংলা অর্থ সহ
বাংলা অনুবাদ ঃ হে আমার প্রিয় কৃষ্ণ, তুমি করুণার সিন্ধু, তুমি দীনের বন্ধু, তুমি সমস্ত জগতের পতি, তুমি গোপিকাদের ঈশ্বর এবং শ্রীমতি রাধা রাণীর প্রেমাস্পন্দ, আমি তোমার চরণে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
রাধা রানীর প্রনাম মন্ত্র
চলুন এখন আমরা শ্রীমতী রাধা রানীর প্রনাম মন্ত্রটি বাংলা অর্থ সহকারে জানব। রাধিকা হলেন একজন হিন্দু দেবী যিনি ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রিয়তমা এবং পরমাপ্রকৃতি । রাধিকা প্রেম, কোমলতা, করুণা ও ভক্তির দেবী হিসেবেও পূজিত হন। তিনি হলেন দেবী লক্ষ্মীর অবতার। রাধাবল্লভ সম্প্রদায়ে রাধিকাকে সর্বোচ্চ দেবতা হিসেবে পূজা করা হয়। রাধিকাকে স্বয়ং কৃষ্ণের মেয়েলি রূপ হিসাবেও বর্ণনা করা হয়েছে। রাধিকার জন্মদিন রাধাষ্টমী হিসেবে পালিত হয়।
রাধাকে মানব আত্মার রূপক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। কৃষ্ণের প্রতি রাধার ভালোবাসা ও আকাঙ্ক্ষাকে ধর্মতাত্ত্বিকভাবে আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি এবং ঐশ্বরিক সত্তার সাথে মিলনের জন্য মানুষের অনুসন্ধানের প্রতীক দেখা হয়। তিনি অসংখ্য সাহিত্যকর্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন, এবং কৃষ্ণের সাথে তার রাসলীলা নৃত্য অনেক ধরনের নৈপুণ্য কালকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাহলে, চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই রাধা রানীর প্রনাম মন্ত্রটি বাংলা অর্থ সহকারে
রাধা রানীর প্রনাম মন্ত্র ও মন্ত্রের বাংলা অর্থ
“তপ্ত কাঞ্চন গৌরাঙ্গীং রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানু সূতে দেবী তাং প্রণমামি হরি প্রিয়ে।।”
বাংলা অনুবাদ ঃ শ্রীমতি রাধা রাণী, যার গাত্রবর্ণ তপ্ত কাঞ্চনের ন্যায় এবং যিনি বৃন্দাবনের ঈশ্বরী, যিনি বৃষভানুর কন্যা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী, সেই রাধারাণীর চরণে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি।
শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র
ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে সকল বিপদ থেকে যেমন রাক্ষা পাওয়া যায়। তেমনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র পাঠ করেও সকল অপধার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ তাঁর ভক্তদের সবসময় সঠিক পথের এবং সত্যের মার্গ প্রদর্শন করিয়ে থাকেন। মানুষের পাপ কার্য যখন বৃদ্ধি হয়ে যায় তখন তার বিনাশ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
আমরা কখন কোথায় কিভাবে পাপ কার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ি তা আমরা জানি না। মানুষ ধর্মকে ভুলে গিয়ে যখন বিভিন্ন খারাপ কার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং ধর্মীয় বিধান ভুলে গিয়ে কদাচার করতে থাকে তখন থাকে পাপ বলে। পাপ তিন প্রকার হয়ে থাকে শারীরিক, ব্যাচিক ও মানসিক পাপ। শারীরিক পাপ হচ্ছে পরহিংসা, চুরি ও পরস্ত্রঈ সঙ্গ।
ব্যাচিক পাপ হচ্ছে অসথ্য প্রলাপ, খারাপ কথা বলা ও নিষ্ঠুর বাক্য প্রয়োগ আর মানসিক পাপ হচ্ছে পরের দ্রব্যে লোভ, পরের অনিষ্ট ও পরের ক্ষতিচিন্তা বেদবাক্যে অশ্রদ্ধা। এই তিন পাপের কারণে মানুষের বিনাশ অনিবার্য হয়ে পড়ে। তাই এই পাপ কার্য থেকে মুক্ত হতে নিত্য পূজায় শ্রী কৃষ্ণের ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র পাঠ করে কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তাহলে চলুন জেনে নেই শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র বাংলা অর্থ সহকারে
শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র বাংলা অর্থ সহ
“ওঁ যদক্ষরং পরিভ্রষ্টং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্ ভবেৎ |
পূর্ণং ভবতু ত্বৎ... সর্বং ত্বৎ... প্রসাদাৎ জনার্দ্দন ||
মন্ত্র হীনং ক্রিয়া হীনং ভক্তিহীনং জনার্দ্দন |
যৎ পূজিতং ময়া দেবপরিপূর্ণং তদস্তূমে ||”
বাংলা অনুবাদ ঃহে জনার্দ্দন আমি মন্ত্র হীন, ক্রিয়া হীন ও ভক্তি হীন। হে দেব এই ধরাধামে আপনাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আপনি আমাদের সকল পাপ দূরীভূত করে কর্ম, ভক্তি ও জ্ঞান প্রদান করুন।
গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার নিয়ম
হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে মাহাত্ম্যপূর্ণ মন্ত্র হচ্ছে গায়ত্রী মন্ত্র। এই মন্ত্রটি নিয়মিত জপ করার মাধ্যমে অনেক উপকার সাধিত হয়। জীবনের নানান সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় এই মন্ত্র জপের মাধ্যমে। গায়ত্রী মন্ত্র অন্যান্য সকল মন্ত্রের তুলনায় অধিক শক্তিশালী হয়ে থাকে। এই মন্ত্রটি পাঠ করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। গায়ত্রী মন্ত্র পাঠ করার মাধ্যমে যেমন মানসিক শান্তি লাভ করা যায় ঠিক তেমনি এই মন্ত্রের দ্বারা জীবনে আনন্দেরও সঞ্চার হয়।
আরো পড়ুন ঃ জন্মাষ্টমী বাংলা কত তারিখ - জন্মাষ্টমী ২০২৩ সময়সূচি
ছাত্র-ছাত্রীরা গায়ত্রী মন্ত্র জপ করে লাভবান হতে পারেন। এই মন্ত্র জপে একাগ্রতা ও জ্ঞান দুটোই সমান আকারে বৃদ্ধি পায়। গায়ত্রী মন্ত্র জপে দূর্বল স্মরণশক্তিও মজবুত হয়ে ওঠে। তাই শিক্ষার সাফল্য লাভ করতে এই মন্ত্রটি নিয়মিত জপ করা উচিত। গায়ত্রী মন্ত্র হল বৈদিক হিন্দু ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র। গায়ত্রী মন্ত্র দ্বারা হিন্দু দেবতা সবিত্রকে আবাহন করা হয়।
সেজন্য গায়ত্রী মন্ত্রের অন্য নাম হচ্ছে সাবিত্রী মন্ত্র। বৈদিক সাহিত্যেও এই মন্ত্রটি বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। মনুস্মৃতি, হরিবংশ ও ভগবদগীতায় গায়ত্রী মন্ত্রের প্রশংসা করা হয়েছে। দেবী গায়ত্রীর তিনটি রুপ, ১ম সকাল, ২য় মধ্যাহ্ন ও ৩য় সন্ধ্যা। সকালে তিনি ব্রাক্ষী, রক্তবর্ণা ও অক্ষমালা-কমণ্ডলধারিনী। মধ্যাহ্নে তিনি বৈষ্ণবী, শঙ্খ, চক্র, গদা ধারণকারিনী। সন্ধ্যায় তিনি শিবানী, বৃষারূঢ়া, শূল, পাশ ও নকরপাল ধারিনী।
গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার নিয়ম হচ্ছে সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ আগে। দুপুরে এবং সন্ধ্যায়ও এই মন্ত্র জপ করা যায়। তবে সন্ধ্যায় এই মন্ত্র জপ করতে চাইলে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে থেকে এই মন্ত্র জপ করা শুরু করতে হবে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে মন্ত্র জপা শেষ করতে হবে। গায়ত্রী মন্ত্র কমপক্ষে ১০৮ বার জপ করতে হয়। গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার সময় সামনে এবং পিছনের শ্রীর ক্যাপসূল জপ করুন।
গায়ত্রী মন্ত্রটি সাধারণ রুদ্রাক্ষের মালা দিয়ে জপ করতে হয়। কারণ রুদ্রাক্ষের মালাকে শুভ বলে মনে করা হয়। সেই সাথে এটিও বিশ্বাস করা হয় যে গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে কাঙ্খিত ফল অর্জন করা যায়। গায়ত্রী মন্ত্র সর্বদা নিরবে জপ করতে হয়। নিচে গায়ত্রী মন্ত্র এবং সেই মন্ত্রের বাংলা অনুবাদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে
গায়ত্রী মন্ত্র
“ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ||”
বাংলা অনুবাদ ঃ
শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্র
এখন আমরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্রটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন জেনে নেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্রটি
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্রটি নিচে পাঠ করা হলো
“ওঁ স্মরেৎ বৃন্দাবনে রম্যে মোহয়ওমনারতম্|
গোবিন্দং পুণ্ডরীকাক্ষং গোপকন্যাঃ সহস্রশঃ||
আত্মনো বদনাম্রোজে প্রেরিতাক্ষি মধুব্রতাঃ|
পীড়িতাঃ কামবাণেন চিরমাশ্লেষণোৎসুকাঃ|
মুক্তাহারলসং পীনতুঙ্গ স্তনভরানতাঃ|
প্রস্তধর্মিল্পবসনা মদস্থলিত ভাষণাঃ||
দত্তপংক্তি প্রভোভাসি স্পন্দমানাধরাঞ্চিতাঃ |
বিলোভয়ত্তী বিবিধৈবিভ্রমৈভাবগর্বিতৈঃ||
ফুল্লেন্দীবরকান্তিমিন্দুবদনং বহাবতংসপ্রিয়ং|
শ্রীবৎসাঙ্কমুদার কৌস্তুভধরং পীতাম্বরং সুন্দরম্|
গোপীনাং নয়নোৎপলাচিত তনুং গোপসঙ্ঘাবৃতং |
গোবিন্দং কলবেণুবাদন পরং দিব্যাঙ্গভূষণং ভজে||”
কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র
প্রিয় পাঠক এখন আমরা আলোচনা করব কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র নিয়ে। প্রত্যেক দেব দেবীর আলাদা আলাদা বীজ মন্ত্র রয়েছে। সেই দিক থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরও একটি বীজ মন্ত্র রয়েছে। বীজ মন্ত্র হচ্ছে এমন একটি মন্ত্র যা সর্ব মন্ত্র অপেক্ষা সেরা। দেব দেবীর বীজ মন্ত্র তাদের অন্য সকল মন্ত্র অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হয়। আর এই বীজ মন্ত্রের মধ্যেই ওই দেবতার সকল মন্ত্রের গুণ লুকানো থাকে।
বীজ মন্ত্র সাধকদের তাঁর কাঙ্ক্ষিত ফল প্রধান করে থাকে। যে সকল ভক্তগণ তাঁর নিজ দেবতার বীজ মন্ত্র ১০৮ বার পাঠ করবে তার ফল অবশ্যই লাভ হবে। তাই আজকে আমরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বীজ মন্ত্রটি তুলে ধরার চেষ্টা করব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই বীজ মন্ত্রটি পাঠ করার মধ্যে দিয়ে ভগবানের আরোগ্য লাভ সম্ভব। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র টি
কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র হচ্ছে
“ক্লীদ কৃষ্ণায় স্বাহা| ক্লী কৃষ্ণায় নমঃ |
ক্লী কৃষ্ণায় স্বাহা| ক্লী কৃষ্ণায় গোবিন্দায় স্বাহা|
ক্লী কৃষ্ণায় গোবিন্দায় গোপীজন বল্লভায় স্বাহা|
বল্লভায় স্বাহা|”
কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করার নিয়ম
কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরোগ্য লাভ করা যায়। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করতে হয় জপ মালার মাধ্যমে। জপ মালা তৈরি করা হয় তুলসী গাছ দিয়ে। আবার অনেক সময় বেল গাছ বা নিম গাছ দিয়েও জপ মালা তৈরি করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন ঃ শিবের গলায় সাপের নাম কি - শিবের ত্রিশূল এর নাম
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র হচ্ছে কৃষ্ণ মন্ত্র। মন্ত্র জপ করার জন্য জপ মালা ব্যাবহার করা হয়। জপ মালায় ১০৮ টি গুটি থাকে। জপ মালার একদিকে বড় হাতের গুটি থাকে এবং অন্য দিকে ছোট গুটি থাকে। বড় গুটি এবং ছোট গুটির মধ্যস্থলে একটি ঘটের মতো গুটি থাকে। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করার জন্য প্রথমে ডান হাত দিয়ে মেরুগুটি ধরে তিনবার পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্র জপ করতে হয়।
পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্রটি হচ্ছে,
“জয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ, শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদী গৌর ভক্ত বৃন্দ”
পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্রটি তিনবার জপ করার পর ডান-হাতের তর্জনী আঙ্গুলি স্পর্শ না করে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে বড় দিকের প্রথম গুটি ধরে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করতে হয়।
হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র টি হলো,
“হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে”
এভাবে করে দ্বিতীয় গুটি, তৃতীয় গুটি ধরে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করতে করতে মেরুগুটির পার্শে ছোট গুটির কাছে পৌঁছাবেন। আবার পুনরায় ছোট গুটি ধরে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করতে করতে মেরুগুটির পার্শে বড় গুটির কাছে পৌঁছাবেন। তখন বুঝবেন আপনার এক মালা জপ হয়ে গেছে। এই ভাবে করে আপনি প্রতিদিন এক, দুই, চার, আট অথবা ষোল মালা পর্যন্ত জপ করতে পারেন।
রাতে ঘুমানোর আগে কৃষ্ণ মন্ত্র
প্রিয় পাঠক এতোক্ষণ ধরে আমরা বিভিন্ন মন্ত্র নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু এখন আমরা জানব রাতে ঘুমানোর আগে কি মন্ত্র জপ করতে হয় সে বিষয়ে। হিন্দু ধর্ম শান্ত্রে উল্লিখিত সকল মন্ত্র প্রচুর শক্তিশালী। মন্ত্র পাঠ করে যেমন নেতিবাচক শক্তির প্রভাব দূর করা যায়। তেমনি আবার মন্ত্র পাঠ করে জীবনের একাধিক সমস্যার সমাধানও করা যায়। তবে মন্ত্র পাঠ করার নির্দিষ্ট সময় ও বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে।
কিছু মন্ত্র সকালে পাঠ করতে হয়, কিছু মন্ত্র সারাদিন পাঠ করা যায় আবার কিছু মন্ত্র আছে যে গুলো শুধুমাত্র রাতে ঘুমানোর আগে পাঠ করতে হয়। ঘুমের মধ্যে আমরা অনেকেই দুঃস্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্ন দেখি। দুঃস্বপ্নের কারণে অনেক সময় মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে মন আনচান করতে থাকে আমাদের। এই দুঃস্বপ্ন বা খারাপ স্বপ্ন থেকে মুক্তি পেতে রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত মন্ত্র জপ করুন।
রাতে ঘুমানোর আগে মন্ত্র জপ করলে মনের কুচিন্তা তথা দুঃস্বপ্ন দূর হয়ে যায়। তাহলে, চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই রাতে ঘুমানোর আগে কৃষ্ণ মন্ত্র টি। এই মন্ত্র টি জপ করলে সকল বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
রাতে ঘুমানোর আগে কৃষ্ণ মন্ত্রঃ
“ওঁ শয়নে শ্রী পদ্মানাভায় নমঃ ( ৩ বার বলুন)”
“হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে”( ৩ বার বলুন)
তাছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে গায়ত্রী মন্ত্রটিও জপ করতে পারেন
গায়ত্রী মন্ত্র ঃ
“ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ||”
উপরোক্ত সকল মন্ত্র গুলো রাতে ঘুমানোর আগে জপ করলে মনের সকল কুচিন্তা, কু-ভাবনা সবকিছু দূর হয়ে যায়। তাই মনের সকল কুচিন্তা, কু-ভাবনা ও কু-দৃষ্টি দূর করতে নিয়মিত এই মন্ত্র গুলো জপ করুন
শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র নিয়ে শেষ কথা
প্রিয় পাঠক গণ, এতোক্ষণ ধরে আমরা আলোচনা করেছি শ্রী কৃষ্ণের প্রনাম মন্ত্র, গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার নিয়ম, রাধা কৃষ্ণের প্রণাম মন্ত্র, শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র, শ্রীকৃষ্ণের ধ্যান মন্ত্র, কৃষ্ণ বীজ মন্ত্র, কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করার নিয়ম, রাতে ঘুমানোর আগে কৃষ্ণ মন্ত্র এই গুলো নিয়ে। আপনি যদি আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আপনি উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক গণ, আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। কারণ আপনাদের একটা মন্তব্য আমাদের পোস্ট লেখার আগ্রহ আরো কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে। আর এই রকম আরো অনেক বিষয়ে জানতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট
আরো বিস্তারিত জানতে চাপ দিন
Sri Krishna montra somporke pore valo laglo
ধন্যবাদ,, এই রকম আরো তথ্য পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েব সাইটটি