ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি - ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি তা নিয়েই আমাদের আজকের আর্টিকেলটি। ডায়াবেটিস হচ্ছে এক ধরনের রোগ যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে তখনি প্রকাশিত হয়। তাছাড়া আমাদের দেশে দিন দিন এই রোগের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। অনেকেই ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি সেগুলো জানতে চাই। তাই আজকের পোস্টে আমরা ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব
সেই সাথে আরো আলোচনা করব ডায়াবেটিস কি ও কেন হয়, ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ, ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া, ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়েও। তাহলে, চলুন জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি সেই সম্পর্কে
পোস্ট সূচিপত্র ঃ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি - ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
ডায়াবেটিস কি ও কেন হয়
ডায়াবেটিস এই শব্দটা আমাদের সবার কাছে বেশ পরিচিত। আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন আমাদের আশেপাশে এমন একটি পরিবারও নেই, যেখানে এক বা একাধিক লোক এই ডায়াবেটিস রোগটিতে আক্রান্ত নয়। সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৩ কোটি যা ২০৩০ সালের মধ্যে বেড়ে ৬৪ কোটিতে পৌঁছাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ডায়াবেটিস হলো একপ্রকার মহামাড়ির মতো।
ডায়াবেটিস কি? অনেকেই এই প্রশ্নটি বারংবার করে থাকেন। আজকে আপনাদের এই প্রশ্নটি নিয়েই আমাদের মূল আলোচনা। তাহলে চলুন প্রথমে আমরা জেনে নেই ডায়াবেটিস কি? আমাদের শরীরের পেটের ঠিক উপরের অংশে অগ্নাশয় বলে ছোট্ট একটি গ্রন্থি আছে যেটা দেখতে অনেকটা পাতার মতো। এই অগ্নাশয় নামক গ্রন্থি থেকে একটা রস নিঃসৃত হয় যাকে আমরা ইনসুলিন বলে থাকি। ইনসুলিন হচ্ছে এক প্রকার হরমোন যেটা আমাদের স্বাভাবিক বিপাক ক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন ঃ কিডনি ড্যামেজের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার গুলো কি কি
আমরা খাবারের মাধ্যমে যে শর্করা জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি যেমন ধরুন মিষ্টি, ভাত, পাউরুটি ইত্যাদি এই খাদ্য গুলো হজমের পর গ্লুকোজ রুপে আমাদের রক্তে চলে যায় এবং রক্তে চিনি বা গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ইনসুলিনের কাজ হচ্ছে এই চিনি বা গ্লুকোজকে শরীরের বিভিন্ন কোষে নিয়ে যাওয়া যেমন লিভারে বা মাংসপেশিতে এবং সেখানে এটি শক্তি বা ক্যালোরি উৎপন্ন করে ।
কোনো কারণে যদি এই ইনসুলিনটি আর নিঃসৃত না হয় অথবা ইনসুলিনটি যদি অকার্যকর হয়ে উঠে তাহলে রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা বেড়ে যায় একেই আমরা ডায়াবেটিস বলে থাকি। সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এই রোগ হয়। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা আমাদের দেহের বিপাক প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়।
তবে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে অনেকেই রাতে ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করেন বলেই এই রোগের আরেক নাম বহুমূত্র রোগ। আমাদের খাদ্যের একটি বড় অংশ পরিপাকের পর ভেঙে গ্লুকোজ তৈরি হয়। এই উৎপন্ন গ্লুকোজ চলে যায় রক্তে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নির্গত হয়। ইনসুলিন হচ্ছে এক ধরনের হরমোন যা রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজকে গ্লাইকোজেন হিসেবে দেহে সঞ্চয় করে রাখে।
আর একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে অগ্নাশয় যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন নির্গত করতে পারে না। আর ইনসুলিন নির্গত না হলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ও বেড়ে যায়। যার ফলে দেহে নানান রকমের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অনেক দিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেকেই পরবর্তী সময়ে হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও স্নায়বিক সমস্যার শিকার হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস রোগটি আমাদের মাঝে একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে সবচেয়ে সঠিক ও জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো Oral Glucose Tolerance Test বা OGTT । এই পদ্ধতিতে রোগীকে খালি পেটে একবার এবং দুই ঘন্টা পর চিনির শরবত খেয়ে আবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করতে হয়। OGTT পদ্ধতিতে নির্ভুল ভাবে ডায়াবেটিস ও প্রি ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল সেই বিষয়ে।
১) খালি পেটে টেস্ট/Fasting Test - 99 mg/dl তার কম বা 5.6 mmol/L হলে নরমাল
২) খাবার দুই ঘন্টা পর/After food test - 140 mg/dl তার কম বা 7.8 mmol/L হলে নরমাল
আপনাদের সুবিধার্থে আমি উপরে একটা ছবি যুক্ত করে দিয়েছি। সেই ছবিটি দেখে আপনি নির্ণয় করতে পারবেন আপনার ডায়াবেটিস বর্তমানে কি অবস্থায় আছে সেটি।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ
এখন আমরা আলোচনা করব ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ নিয়ে। অনেকেই ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানেন না। তাই যারা জানেন না তারা আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার মধ্যে দিয়ে জানতে পারবেন তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ সমূহ। বহুমূত্র রোগ বা ডায়াবেটিসের ৩ টি ধরন রয়েছে যথাঃ টাইপ-১ ডায়াবেটিস, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও গর্ভকালীন বা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস।নিচে এই ৩ টি ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
আরো পড়ুন ঃ চোখ চুলকানোর কারণ কি - চোখ চুলকানির ড্রপের নাম
টাইপ-১ ডায়াবেটিস:
টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। এই রোগে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। বিশেষ করে শিশু ও তরুণদের মধ্যে এ ধরনের ডায়াবেটিস হয় বেশি। সাধারণত ১০- ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। এই ধরনের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন বা ইনসুলিন পাম্প নিতেই হয়। অন্যথায় রক্তের শর্করা অতি দ্রুত বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই রক্তে অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ায় অজ্ঞান হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এটি মূলত জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী হল HLADR3 এবং HLADR4 নামক দুটি জিন ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস:
টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে কিছু ইনসুলিন তৈরী হয় তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয় অথবা রোগীরা শরীরে যে ইনসুলিন উৎপন্ন হয়, তাকে ব্যবহার করতে পারে না। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগের পেছনে থাকে মূলত ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’। এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ত্রিশ বছরের ওপরে হয়ে থাকে। সাধারনত এই ধরনের রোগীরা ইনসুলিন নির্ভর নন। এই ধরনের রোগীরা সাধারনত স্থূলকায় হন।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়ামের সাহায্যে একে প্রথমে মোকাবিলা করা হয়। তবে অনেক সময় প্রয়োজন হয় মুখে খাওয়ার ওষুধ, এমনকি ইনসুলিন ইনজেকশন। মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় পানীয়, টাইপ-২ ডায়বেটিস এর ঝুঁকি বাড়ায়। শারীরিক পরিশ্রম না করাও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের অন্যতম একটা কারণ। খাবারে চর্বির ধরণও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্স-ফ্যাট ঝুঁকি বাড়ায় পক্ষান্তরে পলি-আনস্যাচুরেটেড ও মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ঝুঁকি কমায়। অত্যধিক পরিমাণ সাদা ভাত খাওয়াও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কী? ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয়। কিন্তু যা সঠিকভাবে কাজ করে না অর্থাৎ শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিকভাবে কমাতে পারে না। কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে পরবর্তীতে তার ডায়াবেটিস দেখা দেয়, সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিস। ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হলে সাধারণত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়, তন্ত্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে। মস্তিষ্কস্থূলতা দেখা দেয়, ওজন বাড়ে। শরীরে চর্বি জমে, রক্তচাপ বাড়ে, ক্ষুধা ও তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়
গর্ভকালীন বা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস:
অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে কিন্তু প্রসবের পর ডায়াবেটিস আর থাকে না। এই প্রকার জটিলতাকেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস গর্ভবতী নারী, প্রসূতি কিংবা সদ্য প্রসূত শিশু সকলের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে। বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় রোগীকে প্রয়োজনে ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার হতে পারে।
গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য। যদি এই ইনসুলিন তৈরিতে শরীর অক্ষম হয় তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, অর্থাৎ মাতৃত্বকালীন বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়।
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি
প্রিয় পাঠক গণ, এতোক্ষণ ধরে আমরা ডায়াবেটিসের অনেক গুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ, ঝুঁকি ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া ইত্যাদি বিষয় গুলোও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি? অনেকেই এই নীরব ঘাতক ডায়াবেটিসের লক্ষণ সম্পর্কে জানেন আবার অনেকেই জানেন না।
তাই যারা জানেন না তারা আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন। ডায়াবেটিস এই শব্দটি আমাদের সকলেরই চেনা। নীরব এই প্রাণঘাতী রোগটি বিশ্বব্যাপী মহামাড়ি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটা প্রথম অবস্থায় কোনো লক্ষণই প্রকাশ করে না। আর যখনি এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় তখন এই রোগ প্রতিরোধের আর কোনো উপায় থাকে না।
তাছাড়া এই রোগের দুটি ধরণ রয়েছে টাইপ-১ ও টাইপ-২ । টাইপ-১ ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো খুব দ্রুত প্রকাশ পেলেও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সূত্রপাত ঘটে খুবই ধীর গতিতে। তাই আজকে আমরা ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো হচ্ছে ঃ
- ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- শরীরের ওজন কমতে থাকা
- প্রচন্ড ক্ষুধা লাগা
- দুর্বলতা ও ক্লান্তী অনুভব করা
- ঝাপসা দৃষ্টি, মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা
- বমি বমি ভাব
- পেটে ব্যথা ও চুলকানি
- ক্ষতস্থান দেরিতে শুকানো
- মূত্রনালিতে সংক্রমণ
- বগল ও ঘাড়ের কাছে কালচে ছাপ
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া
অনেকেই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া টি জানেন না। তাই আজকে আমি তাদের জন্য ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া টি তুলে ধরার চেষ্টা করব। এই দোয়া টি পাঠ করার মাধ্যমে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস এক ধরনের মারাত্মক এবং বিপদজ্জনক একটি রোগ। যদি শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপন করা না যায় তবে এই রোগের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়ে যায়।
দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস এর সমস্যা থেকে শারীরিক অন্যান্য বড় বড় রোগ হার্ট অ্যাটাক ও কিডনিসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয় মানুষ। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপন করতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও নির্দিষ্ট সময় পর পর খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রাণ ঘাতি রোগ ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকতে কুরআনি আমলের আয়াতটি পাঠ করতে পারেন।
কুরআনি আমলের আয়াতটি হলঃ
رَّبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا
উচ্চারণ ঃ রাব্বি আদখিলনি মুদখালা সিদকিও ওয়া আখরিঝনি মুকরাঝা সিদকিও ওয়াঝআললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাসিরা।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)
আমল ঃ যদি কোনো ব্যক্তির ডায়বেটিস রোগ হয় তবে সে ব্যক্তি উল্লেখিত আয়াতটি প্রতিদিন ৪১বার পাঠ করবে।
ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
এবার আমরা জানব ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় গুলো সম্পর্কে। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় সমূহের মধ্যে রয়েছে, শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো, সকালে ঘুম থেকে উঠে জলখাবার খাওয়া, ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করা, ধূমপান সেবন না করা। নিচে এই গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো ঃ ডায়াবেটিসের একটি অন্যতম কারণ হল শরীরের অতিরিক্ত ওজন। ওজন যত বাড়তে থাকবে ততই বাড়বে ডায়াবেটিসের বিপদ। রোগা-পাতলা শরীর আপনার থেকে ডায়াবেটিসকে দূরে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিসের রুগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সবসময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে জলখাবার খাওয়া ঃ ডায়াবেটিস এড়াতে হলে কখনই বাদ দেওয়া চলবে না সকালের জলখাবার। সকালে ঘুম থেকে ওঠার ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করে ফেলুন জলখাবারের পাঠ।
ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া ঃ খাবারের তালিকায় যত বেশি করে সম্ভব ফাইবার জাতীয় খাবার রাখুন। যেমন ফল, সবজি, বিনস, দানা জাতীয় শস্য, বাদাম ইত্যাদি। ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি খেলে তা শরীরে শর্করার শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করা ঃ ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলা করুন। এতে যেমন শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে তেমনই শরীরে ইনসুলিন সঠিক ভাবে ব্যবহার হয়। ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা অনেকাংশই কমিয়ে দেয়।
ধূমপান বন্ধ করুন ঃ আপনি যদি ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চান তবে এখনই বন্ধ করে দিন ধূমপান এবং মদ্যপানের মতো বাজে অভ্যাস গুলো। কারণ ধূমপান ডায়াবেটিসের শিকার হওয়ার প্রবণতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দেয় । সংগৃহীত:[জি নিউজ]
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক গণ, এতোক্ষণ ধরে আমরা নিরব প্রাণ-ঘাতি রোগ ডায়াবেটিস নিয়ে আলোচনা করেছি। সেই সাথে আরো আলোচনা করেছি ডায়াবেটিস কি ও কেন হয়, ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ, ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি, ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির দোয়া, ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়েও।
আপনি যদি আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আপনি এই সব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আর আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এটা আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।
আরো বিস্তারিত জানতে চাপ দিন
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url