ভাবসম্প্রসারণঃ এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি/রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি

৩০০+ ভাবসম্প্রসারণ একসাথে দেখুন

ভাবসম্প্রসারণ ছবি

ভাবসম্প্রসারণঃ এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি/ রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি

মূলভাব ঃ বিত্তবানদের সম্পদের তৃষ্ণা অত্যন্ত প্রবল। তারা যত পায় ততই চাই। গরিবের ধন কুক্ষিগত করে তারা আরো ধনী হয়।

সম্প্রসারিত ভাব ঃ সম্পদের তৃষ্ণা বিত্তবানদেরই বেশি থাকে। তারা যত পায় ততোই চাই। এ সীমাহীন লোভ ও অন্তহীন চাওয়ার ফলে বিত্তবানেরা দরিদ্রকে বঞ্চিত করে রাশি রাশি সম্পদ আহরণ করছে। তারা চায় ছলে-বলে, কৌশলে স্বীয় ঐশ্বর্যের ভান্ডার স্ফীত করতে। পক্ষান্তরে, যারা অভাবগ্রস্ত ও দীন-দরিদ্র সম্পদ সম্পর্কে তাদের মোহ বিত্তবানদের মতো সর্বগ্রাসী নয়। দুর্দমনীয় লোভ, আকাঙ্ক্ষা ও ঐশ্বর্যের মোহ মানুষকে কোথায় নিয়ে যায়, তার প্রমাণ ইতিহাসে অজস্র। ক্ষমতালিপ্সু হিটলার, মুহম্মদ-বিন-তূঘলক এর মতো ব্যাক্তিরা সাধারণ মানুষকে ভিক্ষুকে পরিণত করেছে। ইতিহাস তার নীরব সাক্ষী ‌।

ক্ষমতালিপ্সু উদ্ধত সম্রাটগণ একের পর এক রাজ্য জয় করে দরিদ্রের শেষ সম্বলটুকুর দিকে দৃষ্টি দিতে কসুর করেননি। বিংশ শতাব্দীর শেষতম প্রান্তে এসেও আমরা দেখি, বিত্তবানদের আগ্রাসী মনোভাবের আজও কোনো পরিবর্তন হয়নি। স্বার্থসিদ্ধির পদ্ধতি বদল হয়েছে মাত্র। পৃথিবীর একদিকে বুভুক্ষু মানুষের হাহাকার, অপরদিকে বিত্তবানদের পেট্রোডলারের প্রতিযোগিতা। একদিকে শোষণের স্টিমরোলার, অন্যদিকে শোষিত ও নিপীড়িতের বুকফাটা আর্তনাদ। এ সত্যের সুন্দর বাণীরূপ উদ্ধৃত চরণদ্বয়ে মূর্ত উঠেছে।

আরো পড়ুন ঃ জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর

মন্তব্য ঃ শোষণভিত্তিক পুঁজিবাদী এ সমাজ ব্যবস্থায় পুঁজিপতি বিত্তশালী মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে গ্রাস করছে অনাহারি নিপীড়িত দরিদ্র মানুষের ন্যূনতম সম্পদ টুকু। বিত্তবানদের এ অতৃপ্ত সর্বগ্রাসী সম্পদলিন্সাকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

ভাবসম্প্রসারণঃ এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি/ রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি

মূলভাব ঃ পৃথিবীতে সম্পদশালীর সম্পদের প্রতি তৃষ্ণা দুর্নিবার ও অসীম। তাদের চির অতৃপ্ত এ তৃষ্ণাকে চরিতার্থ করার প্রয়াসে তারা ক্রমশ অনাহারী, নিরন্ন মানুষের ন্যূনতম সম্পদটুকুর প্রতিও ভয়াল থাবা প্রসারিত করতে কুণ্ঠিত হয় না।

সম্প্রসারিত ভাব ঃ পৃথিবীতে বিচিত্র শ্রেণীর মানুষের বসবাস। কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র, কেউ রাজা আবার কেউ কাঙাল। সকলের অবস্থা ঠিক সমান নয়। এ বৈষম্যমূলক অবস্থার জন্য কারো ঘরে ঐশ্বর্যের প্রাচুর্য, আতশবাজির খেলা, আবার কারো ঘরে অন্ধকারেও আলো জ্বলে না। এ অবস্থার পরিবর্তন কখনো হবে কি না, তা আমরা জানি না। 

কিন্তু এ বৈষম্য একটি নিষ্ঠুর জাগতিক সত্য। তবে আমরা আশা করে থাকি, যারা ধনী, যাদের প্রচুর ধন-সম্পদ আছে, তারা দরিদ্রদের জন্য কিছু ত্যাগ স্বীকার করবে। গরিব লোকেরা ধনীদের করুণা পাবে। কিন্তু বাস্তবে যা দেখা যায় তা একেবারে বিপরীত। পৃথিবীতে যারা প্রচুর সম্পদের মালিক, তাদের সম্পদের তৃষ্ণা কোনোদিন শেষ হয় না। তারা যত পায়, তত চায়। 

এভাবে তারা নিজেদের আরো বেশি সম্পদশালী করে তোলে ‌। নির্বিচারে সম্পদ সংগ্রহের ফলে গরিবের সম্পদের উপর তাদের হাত পড়ে। পৃথিবীর দুঃখী মানুষেরা তাদের সামান্য পুঁজি নিয়ে জীবন যাপন করে। ধনীদের ঐশ্বর্যের প্রতি তাদের কোন লোভ নেই, রাজার বিশাল বৈভবের প্রতি তারা উদাসীন। কিন্তু ধনীর অপরিসীম ধনতৃষ্ণা ক্রমাগত স্ফীত হতে হতে একদিন গরিবের কুটিরকে স্পর্শ করে। 

নানা ছলে নানা কৌশলে কিংবা বল প্রয়োগ করে দরিদ্রের সর্বশেষ সম্বল টুকু ছিনিয়ে এনে ধনীকেরা নিজেদের সম্পদতৃষ্ণা মেটায়। আর এভাবে পৃথিবীর দরিদ্ররা তাদের সবকিছু হারিয়ে ভিটামাটি ছেড়ে হয়ে যায় পথের ভিক্ষুক, অন্যের কাঙাল। কেউ তাদের হিসাব রাখে না, কেউ তাদের খবর রাখে না। অথচ এরা বিত্তবানের নির্মম লোভের শিকার।

মন্তব্য ঃ শোষণভিত্তিক পুঁজিবাদী এ সমাজ ব্যবস্থায় পুঁজিপতি বিত্তশালী মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে গ্রাস করছে অনাহারি নিপীড়িত দরিদ্র মানুষের ন্যূনতম সম্পদ টুকু। বিত্তবানদের এ অতৃপ্ত সর্বগ্রাসী সম্পদলিন্সাকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url