ভাবসম্প্রসারণঃ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন - pdf সহকারে

আরো ৩০০+ ভাবসম্প্রসারণ পড়ুন

ভাবসম্প্রসারণ

"স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন"

মূলভাব ঃ যে কোনো জাতির জীবনে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনা কষ্টকর এবং তার চেয়েও কষ্টকর, ওই স্বাধীনতা রক্ষা করা।

সম্প্রসারিত ভাব ঃ স্বাধীনতা মানুষের অমূল্য সম্পদ। কোনো মানুষ পরাধীন রূপে বেঁচে থাকতে চায় না। স্বাধীনতা অর্জন অত্যন্ত গৌরবের ব্যাপার। তাই মানুষ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে, যুদ্ধ করে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট ও ত্যাগের স্বীকার করতে হয় এবং অমূল্য জীবন বিসর্জনের মাধ্যমেই স্বাধীনতা আসতে পারে। কারণ স্বার্থমগ্ন শক্তিশালী বেনিয়া শাসকেরা সহজে কোনো জাতিকে স্বাধীনতা দিতে চায় না, বহু কষ্টে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমেই তা ছিনিয়ে আনতে হয়।

আরো পড়ুন ঃ সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে

স্বাধীনতা অর্জিত হলেই সংগ্রাম শেষ হয়ে যায় না, তখন বিজয়ী জাতির সামনে আসে স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে আরো বেশি ত্যাগ-তিতিক্ষা ও শক্তি সামর্থ্যের প্রয়োজন হয়। কারণ স্বাধীন দেশের ভেতরে ও বাইরে শত্রুর অভাব নেই। এরা সুযোগের সন্ধানে তৎপর তাকে সর্বক্ষণ। যেকোনো সময় সুযোগ পেলে হিংসাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। 

সুতরাং এ ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল, মীরজাফরী চরিত্রের হিংসাত্মক দৃষ্টি থেকে দেশকে রক্ষার জন্য শক্তি ও বুদ্ধির প্রয়োজন। যদিও তাদের পরাভূত করা কঠিন ব্যাপার। যথেষ্ট দায়িত্ব সচেতন, সদা সতর্ক, নিবেদিত প্রাণ, দেশ প্রেমিক ও শক্তিশালী না হলে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।

মন্তব্য ঃ স্বাধীনতা রক্ষা করা স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে কঠিন এবং দুরূহ একটি কাজ। তাই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যে সবাইকে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

"স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন" বা "স্বাধীনতা অর্জন করা কঠিন, স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিনতর"(২)

মূলভাব ঃ পরাধীন জাতির পক্ষে স্বাধীনতা অর্জন অত্যন্ত কঠিন কাজ। স্বাধীনতা অর্জিত হলেই তা চিরস্থায়ী হয় না। অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আরও কঠিন কাজ। তাই স্বাধীনতা রক্ষায় জাতিকে থাকতে হবে সদা জাগ্রত।

সম্প্রসারিত ভাব ঃ স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। আর মানুষ মাত্রই স্বাধীনতা প্রিয়। তার জীবনের প্রধান আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতা। স্বাধীনতা কথাটি যতই মধুর হোক না কেন এটা অর্জন করা বড়ই কঠিন। এটাকে পাওয়ার জন্যই মানুষ যুগ যুগ ধরে সংগ্রাম করে আসছে। নিপীড়িত, অত্যাচারিত জাতি স্বীয় মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রাখার জন্যে সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করে থাকে।

আরো পড়ুন ঃ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড

কিন্তু এ মুক্তি অর্জনই মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। একে সমুন্নত রাখাই মুখ্য উদ্দেশ্য। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের পূনঃগঠন, উন্নয়ন ও বহিঃশত্রুর হাত থেকে একে রক্ষা করার জন্যে সদা প্রস্তুত থাকা একান্ত প্রয়োজন। স্বাধীনতা লাভের পর পরাধীনের মতো জীবন যাপন না করে বলিষ্ঠ ও আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে স্বাধীনতাকে অম্লান রাখতে সচেষ্ট হতে হবে। 

তবেই অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব। অপরপক্ষে, স্বাধীনতা লাভ করেই কোনো জাতি যদি আত্মতুষ্টি অনুভব করতে শুরু করে, যাতে গঠনে সর্বস্ব নিয়োগ না করে স্বার্থপরতায় মগ্ন থাকে, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন না থাকে তবে অর্জিত ঈপ্সিত স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়বে। তাই স্বাধীনতা পরবর্তী মানুষের যাবতীয় কার্যকলাপের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত স্বাধীনতাপূর্ণ গৌরবোজ্জ্বল জীবনের বিকাশ, অর্জিত স্বাধীনতা সুরক্ষা করেই তা করতে হবে।

মন্তব্য ঃ একটি জাতিকে কঠিন ত্যাগ, কঠোর পরিশ্রম, অবিচল সাধনার মাধ্যমে স্বাধীনতার সূর্যকে অর্জন করতে হয়। তাই স্বাধীনতা ব্যাপকতা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করে একে রক্ষা করা সকলের জাতীয় কর্তব্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url