অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ
আজকের এই আর্টিকেলটি মূলত প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্যে। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা অর্থই অনর্থের মূল এই ভাবসম্প্রসারণ টি তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই যারা অর্থই অনর্থের মূল এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়তে চাও তারা আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ো। প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা তাহলে চলো জেনে নেই অর্থই অনর্থের মূল ভাবসম্প্রসারণ টি
“অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ”
মূলভাব ঃ অর্থ মানুষের সকল কর্মের চালিকাশক্তি হলেও এ অর্থই আবার সব রকম অনর্থের সূত্রপাত ঘটায়। পৃথিবীর যাবতীয় অন্যায় ও অনৈতিক কর্মকান্ড এই অর্থের কারণেই হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব ঃ পার্থিব জগতের ভালো-মন্দ সকল কাজের পেছনে রয়েছে অর্থের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। অর্থ ছাড়া পৃথিবীর ভালো-মন্দ কোনো কাজই সম্পাদন করা সম্ভব নয়। তাই পার্থিব জীবনে মানুষের অর্থ অর্জনের প্রয়াসের শেষ নেই। অর্থ বা সম্পদের মোহে মানুষ জীবন সংগ্রামে যুক্ত। মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত অর্থ উপার্জনের জন্যে কঠোর পরিশ্রম করে এবং নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে। আজকাল অর্থই মানুষের একান্ত কাম্য হয়ে উঠেছে।
আরো পড়ুন ঃ ভাবসম্প্রসারণ তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?
কেননা একমাত্র অর্থের মাপকাঠি দিয়েই সমাজে প্রতিপত্তি ও সম্মান নির্ণীত হয়। বিপদে-আপদে, উৎসবে এবং জন্ম-মৃত্যুতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন। আবার এ অর্থই পৃথিবীর সমস্ত অমঙ্গলের জন্য দায়ী। অর্থের লোভে নীতি বিবর্জিত হয়ে মানুষ অহরহ নানা দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়। অর্থের লালসা মানুষের নৈতিক অধঃপতন ঘটায়। অর্থের লোভেই মানুষ চরিত্রহীন হয়ে সমাজবিরোধী ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পৃথিবীর সমস্ত দ্বন্দ্ব, অশান্তি আর সংঘাতের মূল কারণ হচ্ছে অর্থ। অবৈধ ও অগাধ অর্থ সম্পদ লোভের উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রে যুদ্ধের উন্মাদনা জাগে, শ্রমিক-মালিকে বাধে বিরোধ এবং ভাইয়ে-ভাইয়ে শুরু হয় চরম শত্রুতা। অর্থের লোভে পরে মানুষ মানুষকে খুন করে। জগতের সকল অশান্তি আর অনর্থের উৎস হচ্ছে একমাত্র অর্থ। অর্থের মাঝে আমরা জগতের সুখ খুঁজি। কিন্তু অর্থই অনর্থের মূল।
মন্তব্য ঃ যে অর্থ মানুষের সামগ্রিক মঙ্গল সাধনে সমর্থক সে অর্থই আবার যাবতীয় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । তাই অর্থ যেন অনর্থের কারণ হতে না পারে, সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।
“অর্থই অনর্থের মূল ভাব সম্প্রসারণ” (২)
মূলভাব ঃ অর্থ বা সম্পদ জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য অপরিহার্য হলেও অর্থের যথাযথ ব্যবহার না হলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে নেমে আসে অকল্যাণ।
সম্প্রসারিত ভাব ঃ প্রাত্যহিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। অর্থ-বিত্ত না থাকলে স্বীয় স্ত্রী-- পুত্র- কন্যার কাছ থেকেও সম্মান বা মূল্যায়ন পাওয়া যায় না। যার অর্থ নেই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বড় অভাব তার জীবনে। বিপদ-আপদে, দুঃখ-দৈন্যে বড় অসহায় সে। তাই মানুষ সারা জীবন অর্থের পেছনে ছুটে। কিন্তু মানুষের অভাব অসীম।
আরো পড়ুন ঃ ভাবসম্প্রসারণ দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য
কথায় আছে,_ “অভাবে স্বভাব নষ্ট” । এই অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষ অনেক সময়, চুরি, ডাকাতি, হাইজ্যাক, খুন-খারাবি ইত্যাদি নানান খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। আবার এ অর্থই অনেক সময় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীতে যতো অকল্যাণ সাধিত হচ্ছে তার প্রত্যেকটির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত অর্থ। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণ উদগ্র অর্থ লালসা।
আর তোকে কেন্দ্র করে ভাইয়ে-ভাইয়ে, রাজায়-রাজায় ও জাতিতে-জাতিতে বিভেদ দেখা দেয়। অর্থের জন্য পিতা-পুত্র ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। অর্থই মানুষের জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি নষ্ট করে। দুনিয়াতে যদি কোনো অর্থের প্রয়োজন না থাকতো তবে এসব বিবাদ বিস্বাদ কিছুই হতো না।
মন্তব্য ঃ জীবনের সর্বক্ষেত্রে অর্থ আবশ্যক। কিন্তু এ অর্থ উপার্জন ও ব্যয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে বেকনের উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য __“টাকা - পয়সা ভৃত্য হিসেবে উত্তম হলেও মনিব হিসেবে একেবারে মন্দ ”।
আর্টিকেল নিয়ে শেষকথা
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা অর্থই অনর্থের মূল ভাবসম্প্রসারণ টি আমরা উপের আলোচনা করেছি। ভাবসম্প্রসারণ পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই তোমরা তোমাদের পরীক্ষার জন্যে এই ভাবসম্প্রসারণ টি পড়ে নিতে পার। শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকের অর্থই অনর্থের মূল ভাবসম্প্রসারণ টি তোমাদের কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে এবং আর্টিকেলটি তোমার বন্ধু বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে দিবে যাতে করে তারাও এই অর্থই অনর্থের মূল ভাবসম্প্রসারণ টি পড়ার সুযোগ পায়। পরবর্তী ভাবসম্প্রসারণ টি পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url