খেজুর খাওয়ার নিয়ম ও খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিচিত একটি ফল । খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়ামসহ আরো বেশ কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান। তাই আজকে আমরা এই পোস্টের মধ্যে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়,

খেজুরের ছবি

খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এই সব বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য অনেক ইনফরমেটিভ। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক

পোস্ট সূচিপত্র ঃ খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম ও খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - খেজুর কি এবং খেজুরের প্রকারভেদ

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিচিত একটি ফল । খেজুরের মধ্যে থাকা ফ্রুক্টোজ ও গ্লাইসেমিক উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন কে ও ফসফরাস ইত্যাদি আরো অনেক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। বিশ্বের মধ্যে প্রায় ৬০০ প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় ২২-২৩ রকমের খেজুর আমদানি করা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে তার মধ্যে একটি হচ্ছে সৌদি আরব। চলুন এখন আমরা কিছু খেজুরের প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নেই

  • আজওয়া খেজুর ঃ এই খেজুরটি মদিনা শরীফের সর্বোত্তম খেজুর। এই খেজুরটা দেখতে কালো, বিচি ছোট এবং খেতে অনেক সুস্বাদু।
  • সাফাওয়ি খেজুর ঃ এই খেজুরটি খেতে নরম এবং দেখতে গাঢ় বাদামী রঙের ও লম্বাটে। এটি খেতে মোটামুটি মিষ্টি।
  • আমবার খেজুর ঃ এই খেজুরটি মদিনার বিখ্যাত খেজুর গুলোর মধ্যে একটি। এটি খেতে কম সুস্বাদু।
  • সুগায়ি খেজুর ঃ এই খেজুরটি বড় এবং ছোট দুই রকমের হয়ে থাকে। এটি খেতে মিষ্টি তবে হালকা কস যুক্ত। 
  • মরিয়ম খেজুর ঃ এই খেজুরটি দেখতে লালচে রঙের এবং এই খেজুরটি প্রায় ১-১.৫ ইঞ্চি লম্বা হয়।
  • ওমানি খেজুর ঃ এই খেজুরটি অনেক বড় আকারের এবং রসালো ও মিষ্টি স্বাদ যুক্ত। এটি ওমানেই চাষ হয় তাই এর নাম ওমানি খেজুর।
  • ডেগলেট নূর খেজুর ঃ এই খেজুরটি দেখতে মাঝারি আকারের এবং কিছুটা বাঁকা ও মিষ্টি স্বাদ যুক্ত।
  • হালাউয়ি খেজুর ঃ এই খেজুরটি দেখতে সোনালী - বাদামী রঙের। এই খেজুরটি খেতে অনেক সুস্বাদু
  • মাজাফাতি খেজুর ঃ এই খেজুরটি নরম এবং বাদামী রঙের হয়ে থাকে। এই খেজুরটি খেতে মিষ্টি তবে কিছুটা চকলেট এর মতো মনে হয়।

খেজুরের পুষ্টি উপাদান

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিচিত একটি ফল । খেজুরের মধ্যে থাকা ফ্রুক্টোজ ও গ্লাইসেমিক উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়। খেজুরের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ এলাচ খেলে কি কি উপকার হয়? - কালো এলাচের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায়

  • শক্তি - ১,১৭৮ kcl
  • শর্করা - ৭৫.০৩ গ্রাম
  • চিনি - ৬৩.৩৫ গ্রাম
  • খাদ্য আঁশ - ৮ গ্রাম
  • স্নেহ পদার্থ - ০.৩৯ গ্রাম
  • প্রোটিন - ২.৪৫ গ্রাম
  • ভিটামিন এ - ১০ IU
  • থায়ামিন বি১ - ০.০৫২ মিলিগ্রাম
  • রিবোফ্লেভিন বি২ - ০.০৬৬ মিলিগ্রাম
  • নায়াসিন বি৩ - ১.২৭৪ মিলিগ্রাম 
  • প্যানটোথেনিক অ্যাসিড বি৫ - ০.৫৮৯ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি৬ - ০.১৬৫ মিলিগ্রাম 
  • ফোলেট বি৯ - ১৯ মাইক্রোগ্রাম
  • ভিটামিন সি - ০.৪ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন ই - ০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন কে - ২.৭ মাইক্রোগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম - ৩৯ মিলিগ্রাম
  • লৌহ - ১.০২ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম - ৪৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ - ০.২৬২ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস - ৬২ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম - ৬৫৬ মিলিগ্রাম
  • সোডিয়াম - ২ মিলিগ্রাম
  • জিংক - ০.২৯ মিলিগ্রাম

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর ফলটি অনেক সুস্বাদু এবং অনেক পরিচিত। খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়ামসহ আরো বেশ কিছু পুষ্টিগুণ। বয়স যখন ৩০ কিংবা ৩০ এর বেশি হবে তখন এই খাদ্য ফলটি শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজন এবং উপকারীও । 

শুধু তাই নয়, বয়স যখন ৩০ পেড়িয়ে যায় তখন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, কর্মশক্তি হ্রাস, পেশির সমস্যা, হৃদরোগ, স্ট্রোক, হিমোগ্লোবিনের অসামঞ্জস্যতা, হজমের সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড়ের ক্ষয় সহ ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র খেজুর। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই খেজুর ফলটি আমাদের দেহে কিভাবে কাজ করে।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ লেবুর ২৫টি উপকারিতা ও অপকারিতাসহ রূপচর্চায় লেবুর ব্যবহার সম্পর্কে জানুন

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ১
স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ঃ খেজুরের মধ্যে নানান রকমের ভিটামিন থাকায় এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনা করার গতি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে ‌। একটি পরিসংখ্যান এর মাধ্যমে দেখা গেছে, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভালো থাকে। তাই বৃদ্ধ বয়সে স্মৃতিশক্তি লোপ করতে না চাইলে বয়সে ৩০ ছুঁতেই খেজুর খাওয়া 
শুরু করুন।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ২

দেহের কর্মশক্তি বৃদ্ধি করতে ঃ খেজুরের মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এটি খুব দ্রুত শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বয়স ৪০ থেকে ৫০ ছুঁতেই অনেকের ক্লান্তি ভাব বা ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। বেশিক্ষণ কোন কিছু করতে পারে না শরীরের কর্মশক্তি ফুরিয়ে যায়। তাই যাদের এই অবস্থা তারা দিনে ৩ টা করে খেজুর খেতে পারেন।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৩
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ঃ যকৃতের সংক্রমনে খেজুর একটি উপকারী ফল। এছাড়াও খেজুর গলাব্যথা, জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা এবং অ্যালকোহল জনিত বিষক্রিয়ায় বেশ উপকারী। তাছাড়া নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৪
চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ঃ খেজুরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি1, বি2, বি3, বি4 এবং বি5, এবং ভিটামিন এ1 ও সি, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এ ছাড়াও খেজুরকে ভিটামিনের পাওয়ার হাউসও বলা হয়ে থাকে। খেজুর চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তা ছাড়া খেজুরের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে বেশ কার্যকরী। তাই বৃদ্ধ বয়সেও চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৫

পেশি মজবুত করতে ঃ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে দেখা যায় পেশির নানা ধরনের জটিলতা। আর প্রোটিন পেশির জটিলতা এড়াতে বেশ কার্যকরী যা খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায়। তাই শরীরের পেশি মজবুত রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া প্রয়োজন।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৬

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ঃ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে যায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি। এই হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র খেজুর। খেজুরের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম, হৃদরোগ প্রতিরোধ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে খেজুর শরীরের খারাপ (এলডিএল) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো (এইচডিএল) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৭

পরিপাকে সাহায্য করে ঃ বয়স ৩০ অতিক্রম করতেই আমাদের হজমশক্তি কমতে শুরু করে। তাই এই সময়ে হজম শক্তি বাড়াতে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ খেজুর অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৮

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ঃ খেজুর শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া খেজুর চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা চিনির বিকল্প হিসেবে খেজুরের গুড় খেতে পারেন। এতে কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই।

  • খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৯

হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে ঃ বয়স ৩০ অতিক্রম করতেই শরীরে দেখা দেয় ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি। আর এই ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। কারণ খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা  হাড়কে মজবুত করতে এবং দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে বেশ কার্যকরী।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমার উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আমার আলোচনা করব খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। খেজুর বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়, কিন্তু আপনি যদি খেজুর ভিজিয়ে খেতে পারেন তাহলে অনেক বেশি উপকার পাবেন। 

খেজুর রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন। এ ছাড়াও খেজুর রাতে ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলা খেলে শরীরের কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে এবং শরীর কর্মক্ষম থাকে।

শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম - খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

এতোক্ষণ ধরে আমরা আলোচনা করেছি খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমার আলোচনা করব শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম বা খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সম্পর্কে। তাহলে চলুন বিস্তারিত দেখে নেই

শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খাওয়া। এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর সহ আরো নানা উপকার পাওয়া যায়। তা ছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে বা  ঘুম থেকে উঠে সকালবেলা খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ পেঁপে কেন খাবেন? পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমার উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আমার আলোচনা করব খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। কাঁচা খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই শুকানো খেজুর বা খোরমা খেজুর খেতে পছন্দ করেন। তাই, আজকের আর্টিকেলের এই অনুচ্ছেদটি আপনার জন্য। তাহলে, চলুন শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা বা খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক

  • খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ১

হার্টের সমস্যা দূর করতে ঃ নিয়মিত শুকনো বা খোরমা খেজুর গ্রহণে হার্টের সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই যাদের হার্টের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন।

  • খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ২

শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে ঃ শুকনো খেজুর বা খোরমা খেজুর শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। তাই যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা নিয়মিত শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন। 

  • খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৩

স্ট্রোকের সমস্যা দূর করতে ঃ নিয়মিত শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার অভ্যাস স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকাংশই কমিয়ে দেয়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত শুকনো খেজুর বা খোরমা খেজুর খেতে পারেন।

  • খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৪

হজম শক্তি ও রুচি বাড়াতে ঃ নিয়মিত শুকনো খেজুর বা খোরমা খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে হজম শক্তি এবং রুচি দুইটাই বৃদ্ধি পাবে। তাই যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা নিয়মিত শুকনো খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ আম খাওয়ার উপকারিতা কি? আম কেন খাবেন? জেনে নিন আমের উপকারিতা সম্পর্কে

  • খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৫

যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে ঃ নিয়মিত শুকনো বা খোরমা খেজুর খেলে আপনার শরীরের যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি শারীরিক ভাবে সক্ষম হয়ে উঠবেন। তা ছাড়া এটি বীর্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

এখন আমার আলোচনা করব দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে। দুধ ও খেজুর দুটিই পুষ্টিকর খাদ্য। দুধের উপকারিতা সম্পর্কে আমার জানি অন্যদিকে খেজুরের মধ্যে রয়েছে খনিজ ও ভিটামিন। তাহলে চলুন দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে জেনে নেই

  • দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ১

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে ঃ  দুধ ও খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তের হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে, খালি পেটে দুধ ও খেজুর খেলে রক্তসল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

  • দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ২

অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য উপকারী ঃ নিয়মিত দুধে খেজুর ভিজিয়ে খেলে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। প্রতিদিন রাতে দুধের মধ্যে ৫--৬ টি খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেলে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং তাদের গর্ভে থাকা শিশুর হাড় ও রক্ত তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

  • দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৩

বয়সের ছাপ দূর করতে ঃ দুধ ও খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের বার্ধক্য জনিত সমস্যা গুলো দূরে ঠেলে দেয়। তাই নিয়মিত দুধ ও খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করা যায়। 

  • দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৪

জীবনীশক্তি বাড়াতে ঃ ১০০ গ্রাম খেজুর থেকে ১৫ শতাংশ শক্তি পাওয়া যায় এবং ১০০ গ্রাম দুধ থেকে ৯ শতাংশ শক্তি পাওয়া যায়। তাই দুধের সাথে খেজুর ভিজিয়ে খেলে শরীরে ক্লান্তিভাব দূর হয় এবং প্রচুর শক্তি পাওয়া যায়।

  • দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ৫

ত্বক ও চুলের যত্নে ঃ দুধ - খেজুর ত্বক এবং চুলের যত্নে একটি কার্যকরী উপাদান। প্রতিদিন নিয়মিত দুধ ও খেজুর খেলে ত্বকের দাগ দূর হয় এবং হারিয়ে যাওয়া জেল্লা ফিরিয়ে আনে। যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ে, তারাও চাইলে দুধ - খেজুর খেয়ে উপকার পেতে পারেন।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় | শরীর ফিট রাখতে করণীয় - keep the body fit

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর শক্তি, এমিনো এসিড, শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল। রোজায় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয় এতে শরীরের গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই রোজাকালীন সময়ে শরীরের গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ করতে সকালে খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন। চলুন খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

  • ১) খেজুর প্রোটিন সমৃদ্ধ। নিয়মিত খেজুর খেলে খেজুরের মধ্যে থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে।
  • ২) খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও বি। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরের রোজকার ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। তা ছাড়া খেজুরের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • ৩) খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আর এই আয়রন মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তা ছাড়া খেজুর হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
  • ৪) বয়স বাড়ার সাথে মানুষের শরীরের ক্যালসিয়ামও কমে যায়। এ ছাড়া খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাই শরীরের হাড়কে মজবুত করতে ও দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।
  • ৫) গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।
  • ৬) খেজুর ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • ৭) খেজুর রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম - খেজুর নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ঃ গরমকালে খেজুর খাওয়া যাবে কি?

উত্তর ঃ গরমকালে খেজুর খাওয়া যাবে তবে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।

প্রশ্ন ঃ খেজুরে কি এলার্জি আছে?

উত্তর ঃ খেজুর খেলে এলার্জি দেখা দিতে পারে। তাই যাদের এলার্জি আছে তাদের খেজুর না খাওয়াই ভালো।

প্রশ্ন ঃ খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া যায়?

উত্তর ঃ খেজুর খেলে মোটা হওয়া যায় না।

প্রশ্ন ঃ কোন খেজুর সবচেয়ে ভালো?

উত্তর ঃ সব খেজুরই মোটামুটি ভালো।

প্রশ্ন ঃ সবচেয়ে দামি খেজুর কোনটি?

উত্তর ঃ বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর হলো আজওয়া খেজুর।

প্রশ্ন ঃ মরিয়ম খেজুর দাম কতো?

উত্তর ঃ বিভিন্ন বাজারে এই খেজুরটি বিভিন্ন দামে পাওয়া যায় তবে মরিয়ম খেজুরের প্রতি কেজি ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। 

প্রশ্ন ঃ খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়?

উত্তর ঃ প্রতিদিন খালি পেটে খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। প্রতিদিন খালি পেটে খেজুর খেলে শরীর চাঙ্গা এবং এনার্জিতে ভরপুর থাকে।

▶▶ আরো পড়ুন ঃ মাত্র ৭ দিনে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে শেষ কথা ঃ

প্রিয় পাঠক এতোক্ষণ ধরে আমরা আলোচনা করেছি হচ্ছে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা, শুকনো বা খোরমা খেজুর খাওয়ার নিয়ম, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়, খোরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এই সব বিষয়গুলো নিয়ে। খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিচিত একটি ফল। খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়ামসহ আরো বেশ কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যাদের ডায়াবেটিস রোগ আছে তাঁরা সবসময় মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাইকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url