আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আমলকি খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলে খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশির্বাদে আমিও ভালো আছি। প্রতিদিনের মতোই আজকেও আপনাদের জন্য আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজকের পোস্টের মূল বিষয় হচ্ছে আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা, আমলকির পরিচয়, আমলকি খাওয়ার নিয়ম, আয়ুর্বেদে আমলকির ব্যবহার, আমলকি খাওয়ার নানান পদ্ধতি, আমলকির পুষ্টি উপাদান, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ সম্পর্কে।

আমলকির ছবি

আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ইনফরমেটিভ তাই আজকের পোস্টটি আপনারা সম্পূর্ন মনোযোগ দিয়ে পড়লে আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো অনেক বিষয়ে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকাঃ আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা

আমলকি !  এই নামটি আমাদের সবার সাথে পরিচিত। আমলকি অনেকের খুব পছন্দের একটি ফল। আমলকি খেতে হালকা টক এবং হালকা তেতো হয়। এই হালকা টক ও হালকা তেতো ফলটি যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি রয়েছে এর নানা গুণ। এটি শীতকালে আর্দ্র ও পাহাড়ী এলাকায় জন্মে। এটি সবুজ, গোলাকার ছোট আকারের ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ একটি ফল। আমলকি বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য উপকারী একটি ফল। 

এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, হাঁপানি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধি, পেটের চর্বি কমাতে, ত্বকের সমস্যা এবং  মূত্রনালীর সমস্যা দূর করতে একটি কার্যকারি উপাদান। তাছাড়া এটি চুল পড়া, চুল কালো, লম্বা ও ঘন করতে সাহায্য করে। আমলকির সাথে বিভিন্ন জড়িবুটি মিশিয়ে তৈরি করা হয় চুল ও ত্বক ভালো রাখার নানা রকম সামগ্রী। নিয়মিত আমলকি খাওয়ার ফলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্যা, অ্যালার্জি সহ আরো অনেক জটিল সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন আমলকি খাওয়া প্রয়োজন।

আরো পড়ুন ঃ লেবুর 10 টি উপকারিতা ও অপকারিতা

আমলকির পরিচয়

আমলকি সবাই চিনেন কিন্তু এর পরিবার, গোত্র, উপগোত্র, গণ, ইংরেজি নাম, বৈজ্ঞানিক নাম এগুলো কি জানেন ? জানেন না ? তাহলে চলুন এক পলকে এই গুলো জেনে নেওয়া যাক। 

বৈজ্ঞানিক নাম

Phyllanthus embliea 

ইংরেজি নাম

amla বা Indian gooseberry

জগত

উদ্ভিদ

বিভাগ

Flowering plant 

শ্রেণী

Magnoliopsida 

বর্গ

Malpighiales 

পরিবার

Phyllanthaceae

গোত্র

Phyllantheae 

উপগোত্র

Flueggeinae 

গণ

Phyllanthus

প্রজাতি

P. emblica

পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে আমলকি গাছ দেখা যায় যেমনঃ বাংলাদেশ , ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও দক্ষিণ আমেরিকায় । তাছাড়া বিভিন্ন দেশে আমলিকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।

আমলকি খাওয়ার নিয়ম

আপনারা সবাই কম বেশি আমলকি খেয়ে থাকেন। কিন্তু কখন আমলকি খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় বা আমলকি খাওয়ার নিয়ম আপনি জানেন কী ? জানেন না ? তাহলে চলুন জেনে নিই আমলকি খাওয়ার নিয়ম।

প্রতিদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানির মধ্যে ২০-৩০ মিলিগ্রাম আমলকির রস মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। এতে করে আপনি বদ হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের মতো সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় যদি কাঁচা আমলকি চিবিয়ে বা ব্লেন্ডার করে রস টুকু খেতে পারেন। কারণ আমলকি যত শুকিয়ে যায় তার গুণাগুণ ততই কমে যায়। আবার অনেকেরই রাতে ঘুমানোর আগে আমলকির জুস বা রস খাওয়ার অভ্যাস আছে । সেক্ষেত্রে তাঁরা যে উপকারটা পাবে তা হচ্ছে তাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং জাঙ্ক ফুড জনিত সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবে।

আয়ুর্বেদে আমলকির ব্যবহার

আমলকি আয়ুর্বেদে একটি মৌলিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ঔষুধ তৈরি করার ক্ষেত্রেও আমলকির ব্যবহার রয়েছে। আলমিকর সঙ্গে বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখার নানা রকম তেল। নিচে কিছু আয়ুর্বেদিক ঔষধ ও চুলের তেলের উদাহরণ দেওয়া হলোঃ

০.১) আমলকির আয়ুর্বেদিক ঔষধ

১) ত্রিফলা ঃত্রিফলা অন্যতম বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং এতে আমলকি সহ তিনটি ফল রয়েছে। অন্য দুটি ফল হল হরীতকী ও বিভিটকি‌। ত্রিফলা একটি মৃদু এবং কার্যকর রেচক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি হজমের উন্নতি করতে, কোলন পরিষ্কার করতে এবং সামগ্রিক গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে ব্যবহৃত হয়।

২) চ্যবনপ্রাশ ঃ চ্যবনপ্রাশ হল একটি জনপ্রিয় আয়ুর্বেদিক ভেষজ জাম যা আমলকি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি। এটি সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, শক্তি বাড়াতে এবং সামগ্রিক জীবন শক্তি বাড়াতে ব্যবহৃত হয়।

৩) আমলকি রসায়ন ঃ আমলকি রসায়ন হল একটি পুনরুজ্জীবিত ভেষজ প্রস্তুতি যাতে প্রাথমিকভাবে আমলকি থাকে। এটি দীর্ঘায়ু প্রচার করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের টিস্যুকে পুষ্ঠ করে বলে মনে করা হয়।

৪) আমলকি চূর্ণ (পাউডার) ঃ এই উপাদানটি আমলকি ফল শুকিয়ে পিষে গুঁড়ো করে তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত হজমশক্তি বাড়াতে, বিপাক ক্রিয়া উন্নত করতে এবং অনাক্রম্যতা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এই চূর্ণ মধু বা জলের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়।

আরো পড়ুন ঃ আম খাওয়ার উপকারিতা কি? আম কেন খাবেন? জেনে নিন

৫) আমলকি ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট ঃ আমলকির নির্যাসটি সুবিধাজনক ব্যবহারের জন্য ট্যাবলেট আকারে সংকুচিত করা হয়। এই ক্যাপসুল বা ট্যাবলেটগুলো শ্বাসযন্ত্রকে উন্নত করতে, ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৬) আমলকি ঘৃত ঃ আমলকি ঘৃত হল একটি ঔষধি ঘি যা আমলকি এবং অন্যান্য ভেষজ উপাদান দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। এটি আর্য়ুবেদে চোখের ব্যাধি, হজমের সমস্যা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত করা হয়ে থাকে।

০.১) আমলকির আয়ুর্বেদিক তেল

১) আমলা চুলের তেল ঃ আমলা চুলের তেল সবচেয়ে জনপ্রিয় আয়ুর্বেদিক তেল গুলির একটি। এই তেল ব্যবহারে মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায়, চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং চুলের বৃদ্ধি উন্নতি করে। নিয়মিত আমলা চুলের তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া, অকালে চুল পাকা রোধ করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

২) আমলা ম্যাসেজ অয়েল ঃ বিশেষ করে আমলা ম্যাসেজ অয়েল বডি ম্যাসাজের জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়। এটি শরীরের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত করে, ত্বকের স্তর উন্নত করে, পেশীর টান এবং ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেয়।আমলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে এবং এর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৩) আমলা ত্বকের তেল ঃ এই তেলটি ত্বকের স্বাস্থ্য ও চেহারার জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। এটি ত্বকের কালো দাগ এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। আমলার উচ্চ ভিটামিন সি কোলাজেন উপাদান করে যা ত্বকের দৃঢ়তা ও তারুণ্যে সহায়তা করে।

৪) আমলা জয়েন্ট ও পেশী ব্যাথা উপশম তেল ঃ এই আয়ুর্বেদিক তেলটি বিশেষভাবে জয়েন্টের ব্যাথা, পেশীর ব্যাথা এবং প্রদাহ উপশম করার জন্য তৈরি করা হয়। তাছাড়া নিয়মিত এই তেলটি ব্যবহার করার মাধ্যমে বাতের ব্যাথা দূর করা সম্ভব বলে মনে করা হয়।

আমলকি খাওয়ার নানান পদ্ধতি

১) তাজা আমলা ঃ বাজার থেকে তাজা আমলকি কিনে এনে ধুয়ে খেতে পারেন। তাজা আমলকি খাওয়ার স্বাদই অন্যরকম। আমলকি ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।

২) আমলা জুস ঃ যারা আমলকি খাঁচা খেতে পারেন না বা খাঁচা খাওয়ার অভ্যাস নাই তাঁরা তাজা আমলকি ব্লেন্ডার করে ছেঁকে রস রস বের করে খেতে পারেন। এটি আরো সুস্বাদু করতে রসের মধ্যে মধু বা চিনি ব্যবহার করতে পারেন।

৩) আমলা ক্যান্ডি ঃ আমলা ক্যান্ডি অনেকের জন্য একটি সুস্বাদু ও লোভনীয় খাবার। টাটকা আমলাকে চিনির সিরায় ভিজিয়ে রাখা হয় যতক্ষণ না এটি মিছরি হয়ে যায়, ফলে একটি সুস্বাদু ও ট্যাঞ্জি ক্যান্ডি তৈরি হয়।

৪) আমলার আচার ঃ আমলার আচার হর আমলা উপভোগ করার আরেকটি সুস্বাদু উপায়। আমলাকে তেল ও মশলায় সংরক্ষণ করে আমলা আচার তৈরি করা হয়। এটি একটি সুস্বাদু খাবার যা ভাত, সাইড ডিশ বা  রুটি হিসাবে খাওয়া যেতে পারে।

৫) আমলা চাটনি ঃ আমলা চাটনি অন্যান্য উপাদান যেমন পুঁদিনা, ধনেপাতা এবং মশলা দিয়ে ব্লেন্ড করে তৈরি করা যায়। এটি বিভিন্ন ভারতীয় খাবারের সুস্বাদু অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।

৬) আমলা জাম ঃ রান্না করা আমলাকে একটি মিষ্টি বা ট্যাঞ্জি জামে পরিণত করা যেতে পারে, যা টোস্টে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে বা ডেজার্টের টপিং হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৭) আমলা মুরাব্বা ঃ আমলা মুরাব্বা একটি ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় প্রস্তুতি যেখানে পুরো আমলাকে চিনির সিরায় সংরক্ষণ করা হয় যতক্ষণ না এটি নরম এবং মিষ্টি হয়। আমলা মুরাব্বা একটি ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার।

আমলকির পুষ্টি উপাদান, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ

আমলকির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বা এস্করবিক এসিড। এছাড়াও আমলকির মধ্যে রয়েছে এমব্লিকানিন-এ (৩৭%), এমব্লিকানিন-বি (৩৩%), পানিগ্লুকোনিন (১২%) এবং পেডাংকুলাগিন (১৪%)। এতে আরো রয়েছে পানিক্যাফোলিন, ফিলানেমব্লিনিন-এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ। এই ফলে অন্যান্য পলিফেনল ও থাকে যেমনঃ ফ্ল্যাভোনয়েড, কেমফেরল, এলাজিক এসিড ও গ্যালিক অ্যাসিড।

আমলকীর মধ্যে অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারা ও কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুন ও ১০ গুন বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায়। কমলার চেয়ে ১৫-২০ গুন বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুন বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুন ও কলার চেয়ে ৬০ গুন বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের প্রতিদিন ৩০ M gram ভিটামিন সি প্রয়োজন। দিনে দুটি আমলকি খেলে এই ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।

এছাড়াও আমলকি মুখের রুচি বাড়াতে, দন্তরোগ সারাতে, পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী। আমলকি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে, এটি দাঁত, চুল ও ত্বক ভালো রাখে, চুলের খুশকির সমস্যা দূর করতেও আমলকি বেশ কার্যকরী। গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকি ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং প্রতিদিন আমলকির জুস খাওয়ার ফলে পেপটিক আলসার থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকি খুব ভালো কাজ করে। 

আমলকির উপকারিতা

আমলকি একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিয়মিত আমলকি খাওয়ার ফলে শরীরের নানা জটিলতা থেকে ও মুক্তি পাওয়া যায়। নিচে আমলকির উপকারিতা সম্পর্কে বলা হলো ঃ

  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে আমলকি বেশ কার্যকরী।
  • আমলকি লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় কার্যকরী একটি ফল।
  • নিয়মিত আমলকি খাওয়ার ফলে হৃদরোগের নানা সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
  • আমলকি খাবার দ্রুত হজম করতে ও পাচন শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমলকি কিডনির জন্য উপকারী একটি ফল।
  • নিয়মিত আমলকি খেলে পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক থাকে।   আমলকি মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমলকি দেহের ভিটামিন সি, ভিটামিন বি1 ও বি2 এর ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।
  • আমলকি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
  • আমলকি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সক্ষম। নিয়মিত আমলকি খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বজায় থাকে।
  • আমলকি আমাদের শরীরের রক্ত পরিশোধন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
  • আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি ত্বকের লাবণ্য বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাছাড়া আমলকিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কালো ছাপ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। 
  • আমলকি খাওয়ার রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। আমলকি তেতো ও টক জাতীয় ফল হওয়ায় এটি খেলে মুখের স্বাদ ও রুচি দুইটাই ফিরে আসে। তাছাড়া আমলকির সাথে মধু বা মাখন মিশিয়ে খেলে তা আরও বেশি কার্যকরী হয়।
  • আমলকি দাঁত ও দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • গর্ভবতী মহিলা ও নবজাতক শিশুদের জন্য আমলকি খুবই ভালো।
  • নিয়মিত আমলকি খাওয়ার মাধ্যমে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করা যায়।
  • আমলকি ফ্রি রেডিকালস প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • আমলকি আমাদের দেহে নতুন রক্ত তৈরি ও লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে ।
  • চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আমলকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এছাড়াও চোখ থেকে জল পড়া, চোখের মধ্যে ফুসকুড়ি, চোখে চুলকানি ইত্যাদি সমস্যাও দূরীকরণে সহায়তা করে আমলকি।
  • আমলকি শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • অনেকের বাসে, ট্রেনে উঠলে বমি বমি ভাব হয় বা বমি আসে। যার ফলে তাদের নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এই ধরনের সমস্যা সমাধানে আমলকি খেতে পারেন।
  • আমলকির তেল চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূরীকরণে সহায়তা করে।
  • নিয়মিত আমলকির তেল ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয়, নতুন চুল গজায়, চুলের খুশকি কমে যায় এবং অকালে চুল ঝরে পড়া বন্ধ হয়।

আমলকির অপকারিতা

আমলকি স্বাদে টক ও তেতো। এটি সবুজ গোলাকার ছোট্ট একটি ফল। এই ফলটি ছোট্ট হলেও এর রয়েছে নানান রকমের ঔষধি গুণ। কিন্তু একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, প্রতিটা জিনিসের যেমন ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, ঠিক তেমনি তার কিছু নেতিবাচক প্রভাব ও রয়েছে। তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নিই আমলকির কি কি নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে ঃ

  • আমলকি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে তাই যাদের নিম্ন রক্তচাপ জনিত সমস্যা আছে তারা আমলকি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • অতিরিক্ত আমলকি খাওয়ার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অনেকের বিভিন্ন খাবারে এলার্জি আছে । তাই যাদের আমলকিতে এলার্জি আছে তাঁরা আমলকি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুইটি আমলকি খাওয়ায় যথেষ্ট। এর বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের সার্জারি হয়েছে তাঁরা আমলকি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করুন।
  • অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে আমলকি খাওয়া একদমই উচিত না যদিও বা খেতে ইচ্ছে করে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করতে পারেন

আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক উপরে এতোক্ষণ ধরে আমরা আলোচনা করছি, আমলকির উপকারিতা ও অপকারিতা, আমলকির পরিচয়, আমলকি খাওয়ার নিয়ম, আয়ুর্বেদে আমলকির ব্যবহার, আমলকি খাওয়ার নানান পদ্ধতি, আমলকির পুষ্টি উপাদান, ব্যবহার ও ঔষধি গুণ সম্পর্কে । আমলকি স্বাদে তেতো এবং টক জাতীয় ফল। এই ফলটি দেখতে ছোট হলেও এর রয়েছে নানান রকমের ঔষধি গুণ। আমলকি আয়ুর্বেদে একটি মৌলিক ঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। শরীর সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন একটি থেকে দুইটি আমলকি খাওয়া প্রয়োজন। প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন । ধন্যবাদ সবাইকে

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url