শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় | শরীর ফিট রাখতে করণীয় - keep the body fit
শরীর ফিট রাখতে কে না চায় । আর শরীর ফিট রাখতে অনেকেই অনেক পদক্ষেপ নিয়ে থাকে তারপরও কোন কাজ হয় না। কিন্তু আপনি কি জানেন শরীর ফিট রাখতে আপনি যে পদক্ষেপ গুলো নিচ্ছেন সেগুলো সঠিক নাকি ভুল। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় বা পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করব।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে অনেক ইনফরমেটিভ। তাই আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে পড়েন তাহলে আপনি আপনার শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কেন চলুন শুরু করা যাক।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় | শরীর ফিট রাখতে করণীয়
আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা
শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। দেহের বৃদ্ধি, তাপ উৎপাদন ও নিজেদের কর্মক্ষম রাখতে সুষম খাবারের কোন বিকল্প নেই। খাদ্যের ছয়টি উপাদান যেমনঃ শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই ছয়টি উপাদান প্রয়োজনীয় অনুপাতে খাবারের মধ্যে উপস্থিত থাকলে তাকে সুষম খাদ্য বলা হয় যেমনঃ দুধ, খিচুড়ি একটি সুষম খাদ্য। নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে দেহের খাদ্য চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়। সুতরাং শরীর ফিট রাখতে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় সুষম খাদ্য রাখা অত্যন্ত জরুরি।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ নিয়মিত ব্যায়াম করা
নিয়মিত ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম করার মধ্যে দিয়ে ওজন হ্রাস পায় এছাড়াও হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মত রোগের ঝুঁকি প্রায় 50% কমিয়ে আনে এবং 30% পর্যন্ত মৃত্যু ঝুঁকি কমায়। তাই সপ্তাহে কমপক্ষে 5 দিন 30 মিনিট করে ব্যায়াম করলে সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা যায়। ব্যায়াম কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য উন্নত করতে, পেশীর শক্তি বাড়াতে এবং সঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিৎ।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম যাওয়া
সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক কমপক্ষে 7 থেকে 8 ঘন্টা ঘুম যাওয়া প্রয়োজন । কিন্তু যদি একটানা ঘুমের ঘাটতি চলতে থাকে তাহলে শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে ছাত্রজীবনে এর প্রভাব সবথেকে বেশি দেখা যায় যেমনঃ পড়ায় মনোযোগ না বসা, খাবারের রুচি হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি। তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে মাথা ঝিমঝিম করে, শরীরে ক্লান্তি বোধ হয় এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি ও দিন দিন বেড়ে যায়। তাই শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম যাওয়া প্রয়োজন।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলা
সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ধুমপান এবং মদ্যপান এর মতো বাজে অভ্যাস গুলো পরিহার করতে হবে। তাছাড়া মাত্রা অতিরিক্ত ধূমপান এবং মদ্যপান করার ফলে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে যেমনঃ অতিরিক্ত তামাক সেবনের ফলে ফুসফুসে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় অন্যদিকে অতিরিক্ত মদ্যপান বা অ্যালকোহল সেবন করলে লিভারের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপসহ শরীরে অন্যান্য সমস্যা ও দেখা দিতে পারে। তাই শরীরকে ফিট রাখতে ধূমপান এবং মদ্যপান এর মতো বাজে অভ্যাস গুলো পরিহার করা দরকার
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ সঠিক ওজন বজায় রাখা
শরীর ফিট রাখতে সঠিক ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। ওজন কম হলে যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি ওজন বেড়ে গেলেও তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাছাড়া অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বাড়ায় যেমনঃ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার। শরীরের স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে BMI এর মান 18.5 থেকে 24.9 এর মধ্যে থাকা উচিত। আর স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা, জীম করা, সাইকেলিং করা, পুষ্টি কর খাবার খাওয়া এবং 30 মিনিট করে হাঁটার প্রয়োজন।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
পানির অপর নাম জীবন। একজন সুস্থ মানুষের দেহে প্রায় 60 থেকে 70 ভাগ পানি থাকে । শুধু মাত্র তৃষ্ণা মেটাতে পানি খেলে চলবে না শরীর ফিট ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি আমাদেরকে ডিহাইড্রেশন, বদহজম, মাথাব্যথা সহ আরো অনেক রোগ থেকেও রক্ষা করে এবং শরীর থেকে বিভিন্ন রোগ জীবাণু মূত্রের মাধ্যমে বাইরে বেড় করে দেয়। তাছাড়া পানির আরও কিছু উপকারিতা রয়েছে ঃ
- দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- শরীরের বাড়তি ওজন কমায়
- মুখের ব্রণ দূর করে
- ত্বক ভালো রাখে
তাই শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা
সু-স্বাস্থ্যের জন্য মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। মানসিক চাপ এর ফলে বিভিন্ন প্রকার শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে যেমনঃ
- মাথাব্যাথা
- নিউরলজিক সমস্যা যেমন মাইগ্রেন, নিউরপাথি ব্যাথা
- পাচনায় সমস্যা যেমন অ্যাসিডিটি, পেটে উত্তেজনা
- শ্বাসনালীর সমস্যা যেমন শ্বাসকষ্ট, শ্বাসহারণে ব্যাথা
- মাংসপেশী ব্যাথা ও সংকোচন
- পাচন সমস্যা যেমন ক্ষুদ্রতা, অনিয়মিত পাচন
যেহেতু মানসিক চাপ সুস্বাস্থ্যের একটি অংশ তাই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত যোগব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত খাবার, খেলাধুলা এবং বাইরে সময় কাটাতে পারেন। এতে করে আপনি মানসিক সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারবেন। তাই শরীর ফিট রাখতে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ নিয়মিত খেলাধূলা করা
শরীর হচ্ছে একপ্রকার গাড়ির ইঞ্জিনের মতো। গাড়ির ইঞ্জিন সচল রাখার জন্য যেমন ইঞ্জিনের মধ্যে তেল, মোবিল দিতে হয় ঠিক তেমনি শরীর ফিট রাখার জন্য ও নিয়মিত খেলাধুলা করা প্রয়োজন। তাছাড়া নিয়মিত খেলাধুলা করলে অনেক রকমের উপকারও পাওয়া যায় যেমনঃ
- হৃদপিন্ড জনিত সমস্যা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
- উচ্চ রক্তচাপ কমানো
- কোলেস্টেরলের লেভেল নিয়ন্ত্রণ
- রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখা
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
- মাংসপেশী ও হাড় গঠনে
তাই শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য খাবার এবং ব্যায়ামের পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলা করা ও প্রয়োজন।
শরীর ফিট রাখতে করণীয়ঃ ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এড়িয়ে চলা
ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এর মধ্যে রয়েছে অরক্ষিত যৌনতা, ড্রাগ ব্যবহার ইত্যাদি যার ফলে শরীরে দীর্ঘ মেয়াদি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এড়িয়ে চলতে হবে।
শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায় নিয়ে শেষ কথাঃ
শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে কারণ আমাদের দেহের অধিকাংশ শক্তিই আসে খাবার থেকে। আর খাবার থেকে পুষ্টি পেতে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় শাকসবজি, ফলমূল ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। তাছাড়া খাবার গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা করতে হবে। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে এবং বিভিন্ন রোগ থেকেও বাঁচায়। শরীর ফিট রাখতে চিপস, বার্গার, কোমল পানীয় সহ বাইরের কৃত্রিম মসলাজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সুতরাং আপনি যদি আপনার শরীর ফিট রাখতে চান তাহলে উপরে বর্ণিত সকল নিয়ম গুলো মেনে চলতে হবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আর আজকের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে এটা আপনার বন্ধু বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন এবং এই রকম আরো স্বাস্থ্য সম্পর্কিত টিপস পেতে নিয়মিত ফিউচার ড্রীম আইটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
বাংলা আর্টিকেল লিখে ইনকাম
ফিউচার ড্রীম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url